ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১

শিক্ষক আজাদের অনিয়ম, প্রতিকার চেয়ে আবেদন

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৬:১৫, ১০ অক্টোবর ২০২৪

শিক্ষক আজাদের অনিয়ম, প্রতিকার চেয়ে আবেদন

শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার আটঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জুয়েল। তিনি পেশায় শিক্ষক হলেও বাস্তবে এর ধারকাছেও নেই। ছিলেন পইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি। 

এ সুবাধে ২০০৯ সালে কোনো ইন্টারভিউ ছাড়াই ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক হিসেবে বেসরকারী স্কুলে নিয়োগ পান। তৎকালিন শিক্ষা অফিসারের আশীর্বাদে শিক্ষক জুয়েল হয়ে উঠেন শিক্ষকদের বস। 

শিক্ষক  আবুল কালাম আজাদ জুয়েলের অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেন আব্দুল বাছিত, সোলেমান মিয়া ও হারুনুর রশিদ।

তাদের আবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ২০১০-২০১৯ পর্যন্ত তিনি এককভাবে দায়িত্ব পান নম্বর ফর্ম এন্ট্রি করার। ২০১০ সালের সমাপনী পরীক্ষার মারাত্মক কারসাজি করেন। পইল ইউনিয়নে সুনামধন্য স্কুল থাকার পরেও কোনো স্কুলে বৃত্তি পায়নি, পেয়েছে তার নিজের স্কুলের শিক্ষার্থীরা এবং তার নিজের প্রতিষ্ঠিত পইল কেজি স্কুলের শিক্ষার্থীরা। কোনো শিক্ষক সেদিন মুখ খুলতে সাহস করেনি। 
পরবর্তীতে স্ক্যান্ডেলে জড়িয়ে পড়েন তারই অধিনস্ত সহকারী শিক্ষিকার সাথে। প্রেম, ভালোবাসা, টাকা লেনদেনসহ অনেক কিছুতেই। শিক্ষিকা তার বিরুদ্ধে ২০২০ সালে সদর থানায় মামলা করলে পইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আরিফের মধ্যস্থতায় মামলাটি আপোষে নিষ্পত্তি করা হয়। 

পরবর্তীতে এলাকার জনগণ তার অপকর্মের বিবরণ উল্লেখ করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবরে অভিযোগ করলে তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা অফিসার রাহিম উদ্দিন ২ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করেন। দুইজন কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ এবং প্রণয় ক্রান্তি মালদার সরেজমিনে তদন্ত করে শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জুয়েলকে বদলীর সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে প্রেরণ করেন।
 
তাছাড়াও উপজেলা শিক্ষা কমিটির বিগত ২০২২ সালের ২১ মার্চ তারিখের সভায় শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জুয়েলকে প্রশাসনিক বদলীর সুপারিশ করে ডিপিইও হবিগঞ্জ বরাবরে রেজ্যুলেশনের কপি পাঠানো হয়। কিন্তু তিন বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও আজাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
 
শিক্ষক আজাদ সদ্য জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক এবং আওয়ামী লীগের লোক হওয়াতে সহকারী শিক্ষক হয়েও নিজেকে প্রধান শিক্ষক পরিচয় দেন।  প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ২০১৭, ২০১৮ ২০১৯ সালে তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সহযোগিতায় পরপর তিন বার শিক্ষক জুয়েলকে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত করেন। যা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ অনৈতিক ও জালিয়াতি। 

২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ সদর ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ১৪৩টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার উদ্বোধনের অনুষ্ঠান সফল করতে সকল প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে দেড় হাজার করে টাকা আদায় করেন।

এসআর

×