প্রতিমা
দেবী দুর্গা মর্ত্যে আগমন করেছেন। ঢাকে কাঠি পড়েছে। শারদীয়া উৎসবের দোলা লেগেছে প্রকৃতিতে। বাঙ্গালী মনেও সেই দোলার ঢেউ আছড়ে পড়ছে। সাজ সাজ রব চারপাশে। আর এই সাজ সজ্বার আড়ম্বরে এবারই প্রথম ১৫১ প্রতিমা-বিগ্রহ নিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আয়োজন করেছে চরবানিয়ারীর চন্ডীভিটা সার্বজনীন দুর্গামন্দির কর্তৃপক্ষ। এক মন্দিরে এত প্রতিমা নিয়ে সনাতন ধর্মের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় শারদোৎসবের আয়োজনে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। দূর-দুরান্ত হতে ভক্ত দর্শনার্থীরা এই মন্দিরে আসছেন।
১৫১টি প্রতিমা তৈরী করে দুর্গাপূজা আয়োজনকারী চরবানিয়ারী পশ্চিমপাড়া গ্রামের চন্ডীভিটা সার্বজনীন দুর্গামন্দির কমিটির সভাপতি সুনীল ঘরামী, পূজা উদযাপন কমিটির সম্পাদক কৃষ্ণ দাস বিশ্বাস জানান, ‘প্রতিমা’ মানে বিভিন্ন দেব-দেবীর অবয়ব এবং ‘বিগ্রহ’ মানে দেব-দেবীগণের বাহক, যেমন- সিংহ, ইঁদুর, সাপ, ময়ূর, পেঁচা, ঘোড়া ইত্যাদি। চারজন ভাস্কর্য্য শিল্পী গত মে মাস থেকে এই প্রতিমা তৈরী করেন। সিসি ক্যামেরা দ্বারা এই মন্দিরের গোটা এলাকা পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে মেলা, র্যাফেল ড্র, সার্কাস, পুতুলনাচ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যাপক প্রস্তুতি থাকলেও বাংলাদেশের বন্যা ও চলমান পরিস্থিতির কারণে আয়োজন সীমিত করতে হয়। শুধুমাত্র ঢাকের বাদ্যের মধ্যে দুর্গাপূজার আয়োজন সম্পন্ন হবে বলে তাঁরা জানান।
জেলার চিতলমারী উপজেলায় এই বছর ১৫৩টির মধ্যে ১২৯টিতে দুর্গাপূজা হচ্ছে। ১০টিতে হবে বাসন্তীপূজা। বাকী ১৪টি মন্দিরে দুর্গাপূজা হচ্ছে না। নিরাপত্তা দিতে সেনা, র্যাব, পুলিশ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ দুর্গাপূজা চলাকালে সতর্ক নজরদারি করছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। বিভিন্ন সড়কে বাড়ানো হয়েছে প্রশাসনের টহল।
১৪টি মন্দিরে দুর্গাপূজা না হওয়ার কারণ সম্পর্কে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলীপ সাহা কালা এবং চিতলমারী দুর্গাপূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি অধ্যাপক জহর লাল সরকার জানান, ঝুঁকিপূর্ণ উষ্কানীমূলক তৎপরতার কারণে ০৭টিতে এবং আর্থিক সংকটের কারণে ০৭টি মন্দিরে এবার দুর্গাপূজা হচ্ছে না। ইতোমধ্যে এই বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে তারা লিখিতভাবে অবহিত করেছেন। সরকারিভাবে এ বছর প্রতিটি মন্দিরের দুর্গাপূজার জন্য প্রায় ২১ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়ায় সরকারের প্রতি তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এই বরাদ্দ পূর্বের তুলনায় বাড়ানো হয়েছে বলে তারা জানান।
এদিকে চিতলমারী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মমিনুল হক টুলু বিশ্বাস ও সদস্য সচিব আহসান হাবিব (ঠান্ডু) জানান, প্রশাসনের সাথে বিএনপির নেতৃবৃন্দ যৌথভাবে বিভিন্ন মন্দির পরিদর্শন করছেন। দুর্গপূজা যাতে সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য তারা সকলের প্রতি আহবান জানান।
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় জানান, পুলিশ, র্যাব, সেনা বাহিনীর পাশাপাশি আনসারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন বাহিনী মন্দিরে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করছে।
শহিদ