লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশ মুখে খানাখন্দে ভরা সড়ক
পদ্মা সেতু চালুর আগে লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাট ছিল দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার। ঘাট দিয়ে ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে গেলেও এখানে অনেক অভিজাত রেস্তোরাঁ ব্যবসা জমে ওঠে। পদ্মার ইলিশের স্বাদ নিতে ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন। ঘাটে ২০টির মতো উন্নতমানের রেস্তোরাঁ ছাড়াও পার্কিং ইয়ার্ডে শতাধিক ছোট ছোট নানা পসরার দোকান রয়েছে।
ঘাট এলাকায় ইলিশের স্বাদ নেওয়া ছাড়াও পদ্মার সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজারো ভ্রমণপিপাসুর ভিড় জমে। কিন্তু বর্তমানে ঘাটের প্রবেশমুখ খানাখন্দে ভরে গেছে। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। এতে দর্শনার্থীরা পড়ছেন বিপাকে। বৃষ্টি জমে খানাখন্দ দেখতে না পাওয়ায় অনেক সময় গাড়ি উল্টে পড়ছে। ফলে দর্শনার্থীদের কাদা-পানিতে ভিজে নাকাল হতে হচ্ছে। ঢোকার মুখে খানাখন্দ থাকায় সড়ক বিভাজক থাকা সত্ত্বেও একপাশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। দিনের পর দিন সড়কটি সংস্কার না করায় দর্শনার্থী ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জয় বাংলা মোড় থেকে শিমুলিয়া ঘাট পর্যন্ত সড়কটি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) মালিকানাধীন। পার্কিং ইয়ার্ড, স্পিডবোট ঘাট ও মাছের আড়ত ১ কোটি ৬০ লাখ টাকায় ইজারা দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। এ ছাড়া পার্কিং ইয়ার্ডে দোকান ভাড়া দিয়ে টাকা কামাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এরপরেও ঘাটের প্রবেশমুখে খানাখন্দ থাকবে কেন- এ প্রশ্ন পর্যটক ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের। বন্ধুদের নিয়ে মোটরসাইকেলে ঢাকা থেকে ঘাটে ঘুরতে আসা তরুণ নাজমুল হোসেন বলেন, ঘাটে ঢোকার আগে সড়কে বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকা গর্তে বাইক নিয়ে পড়ে যাচ্ছিলাম, কিন্তু অল্পের জন্য রক্ষা পাই।
যেখানে প্রতিদিন শত শত পর্যটক ঘুরতে আসেন, সেখানে এরকম দুরবস্থা কাম্য নয়। মাওয়া কুটুমবাড়ি রেস্তোরাঁর পরিচালক রাসেল আলম রাজু বলেন, প্রায়ই ছোট ছোট যানবাহন গর্তে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। শিমুলিয়া ঘাট রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি মুরাদ খান জানান, শিমুলিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কাজ হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে লৌহজংয়ের ইউএনও জাকির হোসেন বলেন, সড়কটি স্থানীয় সরকার কিংবা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নয়, এটির মালিক বিআইডব্লিউটিএ। তাই এর সংস্কার কিংবা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও তাদের। এরপরও সড়কটি মেরামতের জন্য আমি বন্দর কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। শিমুলিয়া বন্দর কর্মকর্তা নিয়াজ মোহাম্মদ খান বলেন, সড়কটির মেরামতের বিষয়ে হেড অফিসকে জানিয়েছি। তবে তাৎক্ষণিকভাবে অস্থায়ী সংস্কার হবে। পরবর্তীতে প্রকল্প বরাদ্দের মাধ্যমে সড়কের টেকসই উন্নয়ন করা হবে।