ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১

ভিক্ষুক রিজিয়া বেগমের মাথা গোজার ঠাঁই এখন ঝুপড়ি ঘরে 

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল

প্রকাশিত: ১৯:৪২, ৬ অক্টোবর ২০২৪

ভিক্ষুক রিজিয়া বেগমের মাথা গোজার ঠাঁই এখন ঝুপড়ি ঘরে 

স্ত্রী রিজিয়া বেগম

২০ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১৩নং পাদ্রীশিপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের বড় রঘুনাতপুর গ্রামের মোসলেম আলী হাওলাদার। মোসলেম আলী হাওলাদারের মৃত্যুর পরে আর বিয়ে বসেননি তার স্ত্রী রিজিয়া বেগম (৭০)। স্বামীর মৃত্যুর পরে এক কন্যা সন্তান নিয়ে অন্যের দ্বারে দ্বারে দু'মুঠো চালের জন্য ভিক্ষা করেই সংসার চলিয়ে আসছেন রিজিয়া বেগমের। তার মেয়ের অন্যত্র বিবাহ হওয়ায় ভিক্ষুক মায়ের খোঁজ খবর নিতে পারছেন না মেয়ে। ৭০ বছর বয়সে এখনো রিজিয়া বেগমের সংসার চলে ভিক্ষায়। রঘুনাথপুর গ্রামে খালের পারে একটি ঝুপড়ির  ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। 

সরেজমিনে দেখা যায়, খালপাড়ের ছোট্ট ঝুপড়ি  ঘরটিতে ভিক্ষুক রিজিয়া বেগম একাই বসবাস করেন। সকাল হলে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি ছুটেন তিনি। একদিন ভিক্ষা করে চাল না পেলে সেদিন তাকে না খেয়েই থাকতে হয় তার। ভাঙ্গাচুরা এক চালা টিনের ছাউনির উপরটা ফাঁকা একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের মধ্যে পানি জমে যায়। ঘরটির সামনে পিছনের দিকে খোলা বৃষ্টি আসলেই পলিথিন টাঙিয়ে রাখতে হয়।

রিজিয়া বেগম জানান, সরকারি একটি ঘরের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সরকারি কর্মকর্তাদের অফিসেও ঘুরেছি অনেকবার কিন্তু আমার কপালে কোন ঘর জোটেনি। এক বছর আগে ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান বাবু কিছু টিন দিয়ে আমাকে একটি ছাপরার ঘর নির্মাণ করে দিয়েছিলেন। ঘূর্ণিঝড় রেমালে ভেঙ্গে চুরে উড়িয়ে নিয়ে গেছে ঘরটি। এখন নিরুপায় হয়ে আমি রাস্তার পাশে ঝুপড়ি ঘরেই বসবাস করছি। রাতে যখন বৃষ্টি আসে তখন ঘরে এক কোনে পলিথিন মুরিয়ে বসে থাকতে হয়। মোর মত অসহায় রিজিয়ার খবর নেওয়ার কেউ নেই। রিজিয়া বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে সমাজের বিত্তশালীদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তার গৃহ নির্মাণের জন্য। 

বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে অসহায় রিজিয়া বেগমের ঘরটি ভেঙে চুরে উড়িয়ে নিয়ে গেছে।রিজিয়া বেগমকে তখন খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছিলাম। নির্বাহী কর্মকর্তা তার বেতনের টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা রিজিয়া বেগমের গৃহ নির্মাণের সহায়তা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
 

 

শহিদ

×