দোকানের মালামাল সড়কে এনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
খাগড়াছড়ি সদরে গণপিটুনিতে শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনার জেরে পাহাড়ি বাঙালি দুইপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটির কথা জানান জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান।
তিনি জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খাগড়াছড়ি জেলা সদর এলাকায় ১৪৪ ধারা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। তবে হত্যার ঘটনায় এখনো জেলা থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এদিকে, খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে এবং সরকারি কাজে বাধা ও হামলার ঘটনায় দুইটি মামলা হলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে খাগড়াছড়ি বাজার ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল শহরের পানখাইয়াপাড়া সড়ক ও মহাজনপাড়ায় অন্তত ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। দোকানের মালামাল সড়কে এনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দোকানগুলোর অধিকাংশই কাপড়, চীবর, বিউটিপার্লার ও খাবারের দোকান। একটি প্রাইভেট হাসপাতালও ভাংচুরের শিকার হয়। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই পাহাড়িদের মালিকানাধীন।
আজ সকাল থেকে সীমিতসংখ্যক দুরপাল্লার গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ সড়কে খুব কম যানবাহন চলাচল করছে। পরিস্থিতি উত্তোরণে সেনাবাহিনীর টহলের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। গতকাল দুপুরে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সোহেল রানাকে পিটিয়ে হত্যা করে পাহাড়ি শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা। এ ঘটনার জেরে বিকেল থেকে শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পাহাড়ী বাঙালীর মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট করা হয়।
নিহত আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন ও সেফটি বিভাগের ইন্সট্রাক্টর ছিলেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলায়। এর আগেও ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরেক ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে জেল খাটতে হয়েছিল। অবশ্য সেই মামলায় খালাস পান তিনি।
এম হাসান