ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১

​​​​​​​স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সাইক্লোন শেল্টার

চাঁপাইয়ে নদীগর্ভে বিলীন মসজিদ বিদ্যালয়

​​​​​​​নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

প্রকাশিত: ২২:৩২, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চাঁপাইয়ে নদীগর্ভে বিলীন  মসজিদ বিদ্যালয়

পদ্মায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে স্থাপনা

বৃষ্টি আর উজানের ঢলে পদ্মার পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নদী তীরবর্তী চরাঞ্চল। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে দিন ধরেই কখনো গুঁড়ি-গুঁড়ি কখনো ভারি বৃষ্টি হচ্ছে জেলায়। এতে পদ্মার পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে শিবগঞ্জের নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা। রাস্তাঘাট, ফসলি জমিসহ বাড়িঘরেও উঠেছে পানি।

জলমগ্ন অবস্থায় দিন কাটছে নিম্নঞ্চলের বাসিন্দাদের। শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর, মনাকষা, নিশিপাড়া, বোগলাউড়িসহ কয়েকটি এলাকা ইতোমধ্যে পদ্মার জলে ডুবে গেছে। গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা। বন্যায় বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি, আমবাগান বাড়িঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি খাবারের সংকট।

এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আলাতুলি নারায়ণপুর ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আগের বছরও এই এলাকার অন্তত দুই শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরই মধ্যে ইউনিয়নের এক-তৃতীয়াংশ কৃষিজমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এবারও ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে বাড়িঘর, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ইতোমধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণপুর ইউনিয়নে দুটি মসজিদ পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। এর আগে ২২ ইউনিয়নের দেবীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘোষপাড়া নারায়ণপুর কমিউনিটি ক্লিনিক নারায়ণপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সরদাপাড়া সাইক্লোন শেল্টার পাঁচটি মসজিদ পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। ছাড়াও ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দেড় হাজার বসতবাড়ি। নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজির হোসেন বলেন, ২০১৮ সাল থেকেই এই ইউনিয়ন ভাঙছে। এবারও ভাঙন চলছে। ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ও হুমকির মুখে। নদীর তীর রক্ষায় বিভিন্ন দফতরে ছোটাছুটি করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

অপরদিকে, শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নেও ভাঙন আতঙ্কে বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছেন অনেকেই। শিবগঞ্জের পাকা ইউনিয়নে প্রায় ২৫০, দুর্লভপুর ইউনিয়নে হাজার ৫০০ এবং মনাকষা ইউনিয়নে প্রায় ৩৫০টি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যপ্রদানকারী কর্মকর্তা আবু সোয়েব বলেন, গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীতে পানি বাড়ছে। জেলার নিমাঞ্চলের আবাদি জমিগুলো পানিতে ডুবে গেছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী ধারণা করা হচ্ছে, কয়েকদিনের মধ্যে পানি কমে যাবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহবুব-উল-ইসলাম বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে শোনা যাচ্ছে যে প্রায় ছয় হাজার বাড়ি পানিবন্দি অবস্থায় আছে। এটা যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত তালিকা করার জন্য সদর শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলা হয়েছে। তালিকাটা চূড়ান্ত হলেই আমরা পানিবন্দি মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু করব।

×