ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১

স্ত্রীকে শায়েস্তা করতে ছেলেকে গলা টিপে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, টঙ্গী, গাজীপুর

প্রকাশিত: ১২:১৬, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্ত্রীকে শায়েস্তা করতে ছেলেকে গলা টিপে হত্যা

দ্বিতীয় বিয়ে করার কলহের জেড়ে স্ত্রীকে শায়েস্তা করতে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দ্বিতীয় শ্রেণির স্কুল ছাত্র ছেলেকে গলা টিপে হত্যা করেছে এক বাবা। টঙ্গী থেকে উত্তরার ডিয়াবাড়ির কাঁশবনে নিয়ে হত্যা করা ছেলের লাশ উদ্ধার করেছে টঙ্গী পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে বাবা মহিউদ্দিনকে। 

নিহত শিশুর নাম আব্দুর রহমান মুছা (১১)। মহিউদ্দিনের বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার দত্তপাড়া ডুয়াটি গ্রামে।

নিহত মুছা টঙ্গীর গোপালপুরে মায়ের সাথে বসবাস করে ওখানকার হলি ক্রিসেন্ট স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। মায়ের নাম শরিফুন নেছা। গত শনিবার নিখোঁজ ছেলের সন্ধান চেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় সাধারণ ডায়রি করেন মুছার মা শরিফুন নেছা। তারপর থেকেই পুলিশের একটি দল শিশুটির সন্ধানে নামে। 

পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জনকণ্ঠকে জানায়, প্রায় ১৬ বছর আগে বিয়ে হয় মহিউদ্দিন ও শরিফুন নেছার। পরে তাদের একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। পারিবারিক টানাপোড়নে মহিউদ্দিন প্রবাসে পাড়ি জমায়।

৯ বছর পর মহিউদ্দিন দেশে ফিরে প্রথম বিয়ে ও সন্তানের তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় বিয়ে করে ফরিদপুর জেলার ভাঙা থানার বাউনকান্দা গ্রামের সুমনা আক্তারকে। কয়েক মাস পর দ্বিতীয় স্ত্রী সুমনা মহিউদ্দিনের প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের তথ্য জেনে যায়। এতে কলহে জড়ায় তারা। 

এ অবস্হায় গত ১ সেপ্টেম্বর প্রথম স্ত্রী শরিফুন নেছা ও ছেলে মুছাকে নিয়ে টঙ্গীর গোপালপুর এলাকায় বসবাস শুরু করে মহিউদ্দিন। শনিবার বিকালে ছেলে মুছাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় বাবা মহিউদ্দিন। কিছুক্ষণ পর রাজধানীর তুরাগ এলাকার একটি কাঁশবনে নিয়ে গলাটিপে হত্যা করে কাঁশবনের ভেতরে লাশটি ফেলে বাসায় চলে আসে বাবা মহিউদ্দিন।

বাসায় ফিরে বাবা মহিউদ্দিন প্রচার করে মুছা হারিয়ে গেছে। মহিউদ্দিন ওই বাসা ছেড়ে চলে যায় দেশের বাড়ি ফরিদপুরে দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে। টঙ্গী থানায় ডায়েরি করে মুছার মা। সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে মঙ্গলবার রাতে শিশুটির সন্ধান করতে গিয়ে পুলিশ বাবা মহিউদ্দিনকে ফরিদপুর জেলা থেকে গ্রেপ্তার করে টঙ্গীতে নিয়ে আসে। 

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছেলে মুছাকে গলাটিপে হত্যা করার কথা স্বীকার করলে উত্তরার তুরাগ থানা এলাকার কাঁশবন থেকে মুছার লাশ উদ্ধার করে। 

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি এসএম মামুনুর রশীদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে বাবা মহিউদ্দিনকে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়।
 

এসআর

×