ডা. শফিকুর রহমান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা চাই বাংলাদেশ তার মুক্তির যে পথে উঠেছে তা গন্তব্যে না পৌঁছা পর্যন্ত চলতে থাকুক। কোনো অপশক্তি যদি বাংলাদেশকে এই রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে চায় তাহলে দেশের ১৮ কোটি মানুষের ৩৬ কোটি হাত তাদের প্রতিহত করে দেবে ইনশা আল্লাহ। তিনি এও বলেছেন, বর্তমান সময় জাতীয় ঐক্যের বড়ই প্রয়োজন, জাতির মৌলিক ইস্যুতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সকল দল তার নিজস্ব জায়গা থেকে রাজনীতি করবে, তার বিবেকের তাড়নায় যা বলার দরকার বলবে, প্রয়োজনে বর্তমান সরকারেরও সমালোচনা করবে। আবার সঙ্গে সঙ্গে এই সরকার যেন সংস্কারের কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারে তার জন্য পর্যাপ্ত সহযোগিতাও দিতে হবে। এভাবে ভারসাম্যপূর্ণ রাজনীতির মধ্যে দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি শনিবার সিরাজগঞ্জ দারুল ইসলাম একাডেমি মাঠে সকালে আয়োজিত রোকন সম্মেলন ও বিকেলে অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সুধী সমাবেশ ও রোকন সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াতের আমির শাহীনুর আলম। জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় জামায়াতে ইসলামী সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, অর্থ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, ঢাকা দক্ষিণের নায়েবে আমির ড. হেলাল উদ্দিন, আবু তালেব ম-ল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য প্রফেসর ড. মাওলানা আব্দুস সামাদ। এ সময় জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে বৃষ্টির মধ্যেও জামায়াত নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সুধী সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা ঘোষণা দিয়েছি আমরা কারও ওপর প্রতিশোধ নেব না। প্রতিশোধ নেওয়ার মানে হচ্ছে আইন হাতে তুলে নেওয়া। তবে ন্যায় প্রতিষ্ঠার দাবি হচ্ছে, যিনি যে অপরাধ করেছেন নির্দিষ্ট অপরাধের জন্য তাকে শাস্তি পেতে হবে এবং সেটা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে।
বেআইনিভাবে নয়, রক্ষীবাহিনী যেভাবে খুন করেছে শেখ হাসিনার নব্য রক্ষীবাহিনী যেভাবে বাংলাদেশের মানুষকে আয়নাঘরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে মাসের পর মাস বছরের পর বছর রেখেছেন, বিনাবিচারে ক্রসফায়ারের নামে যেখানে সেখানে মানুষ খুন করেছেন ওইভাবে নয়, আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে সব বিচার হতে হবে। যদি সেই আইনের শাসন বাংলাদেশে কায়েম হয় তাহলে ইনশাআল্লাহ আগামীর বাংলাদেশ আর পথ হারাবে না।
দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, আপনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন টুস করে দেশে ঢুকে পড়বেন। তো আসেন আপনাকে পালাতে বলেছিল কে? আপনি সব সময় বলতেন বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন। তবে পালিয়ে না গিয়ে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে পারতেন।
শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে ফিরে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার মুখোমুখি হয়ে আপনার (শেখ হাসিনা) সময়ের দুঃশাসনের ফল ভোগ করুন। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই সাড়ে ১৫ বছর আপনারাও স্বাধীন ছিলেন না। ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক আপনারাও মজলুম দলগুলোর বিরুদ্ধে কলম চালিয়েছেন, কথা বলেছেন।
কারণ ভয়ে বা অন্যকোনো কারণে কিনা আমি তা বলতে পারব না। অনেকেই বলেন চাপের কাছে আমরা অসহায় ছিলাম, আর শাসকরা বার বার বলেছে মিডিয়া আমাদের স্বাধীন, কতটুকু স্বাধীন আপনারাই ভালো বলতে পারবেন।
