ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ‘মিনি সমুদ্র সৈকত’

পর্যটনে অপার সম্ভাবনা স্বচ্ছ জলরাশির ‘রামদাস বিল’

জাহিদ হাসান মাহমুদ মিম্পা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

প্রকাশিত: ০০:০৭, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পর্যটনে অপার সম্ভাবনা স্বচ্ছ জলরাশির ‘রামদাস বিল’

চাঁপাইনবাবগঞ্জের রামদাস বিলে ঘুরতে আসেন অনেকেই

দর্শনার্থীদের প্রতিনিয়তই টানে ‘রামদাস বিল’। বৃষ্টি¯œœাত সময়ে এই বিলে বাড়ে সব বয়সী মানুষের আনাগোনা। দূর-দূরান্ত থেকে শত শত দর্শনার্থী প্রতিদিন ভিড় করছেন বিলটিতে। ফলে, রামদাস বিলকে ঘিরে জেলার বিনোদনের অপার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
উপজেলার রহনপুর ও রাধানগর ইউনিয়নজুড়ে রয়েছে এই রামদাস বিল। রহনপুর পৌর এলাকা থেকে এই বিলের অবস্থান প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে। প্রতিবছর বর্ষার শুরুতে বিলের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত পুনর্ভবা নদীর দুই কূল ছাপিয়ে বিলটি জলমগ্ন হয়ে অপরূপ রূপে সাজে। এই সময়টাতে দর্শনার্থীদের কাছে পরিচিত পায় রামদাস বিল। অনেকেই বিলটিকে বলে থাকেন ‘মিনি সমুদ্র সৈকত’। 
সচেতন নাগরিকদের মতে, অনেকদিন আগে গোমস্তাপুর উপজেলার সঙ্গে নওগাঁ জেলার পোরশা ও সাপাহার উপজেলার নৌপথে যোগাযোগ ছিল একদম স্বাভাবিক। নাব্যতা সংকট থাকায় দীর্ঘদিন ধরে এই যোগাযোগ বন্ধ। মাঝেমধ্যে বর্ষাকালে এখানে পানি বৃদ্ধি পেলে নৌপথে যাতায়াত করা যায়। পুনর্ভবা নদী যদি পুনর্খনন করা যায় তাহলে গোমস্তাপুর উপজেলার সঙ্গে নওগাঁর পোরশা ও সাপাহার উপজেলার নৌ যোগাযোগ পুনর্স্থাপন হবে। কমবে অনেক পথ, সাশ্রয় হবে সময়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রামদাস বিলে গ্রীষ্মকালে হয় ধান চাষ। বর্ষা মৌসুমে তা অন্যরূপ ধারণ করে। বিলে চাষাবাদ করা কৃষকদের সুবিধার্থে ওই বিলে কংক্রিটের সড়ক ও পুনর্ভবা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মিত হয়েছে। যা আলিনগর ও রহনপুর ইউনিয়নের সঙ্গে ওই বিল দিয়ে রাধানগর ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করেছে। 
ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, রামদাস বিলে যাওয়ার রাস্তার দুই পাশে পর্যটকদের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া বনভোজনের জন্য কয়েকটি ছোট-বড় পিকনিক স্পটে প্রায় প্রতিদিনই বনভোজন হয়ে থাকে। বিল অঞ্চলটি ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা হওয়ায় রাতে ফ্লাডলাইটের আলোতে অন্য রূপ ধারণ করে। এছাড়া পাশের চূড়ইল বিলে শীতকালে অতিথি পাখির আগমন ঘটে।
দর্শনার্থী মেসবাউল হক বলেন, অনেকদিন ধরে রামদাস বিলের সৌন্দর্যের কথা শুনেছি, কিন্তু আসা হয়নি। পানি বাড়লে এই বিলের রূপ বদল হয়ে যায় বলে শুনেছি। এখন অনেক পানি। আমাদের সঙ্গে যারা এসেছে তারাও খুব খুশি। অপরূপ এক দৃশ্য। দু’চোখ যেদিকে যায়,  শুধু সবুজ আর সবুজ। আশা করছি, জায়গাটি দর্শনার্থীদের জন্য আরও উপযোগী করে তুলবেন সংশ্লিষ্টরা।
আল কাফি তুষার বলেন, বিলটিকে ঘিরে অনেক সম্ভাবনা আছে। বিশেষ করে এখানে নতুন করে দোকানপাট হলে অনেক বেকারের কর্মসংস্থান হবে। রাত হলে দর্শনার্থীরা কিছুটা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। এই সংকট কাটাতে পারলে অনেকেই পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসবেন রামদাস বিলে- এমন মন্তব্য করেছেন ঘুরতে আসা রাফেজ আলী। তিনি বলেন, এখানে নিরাপত্তার ঘাটতি আছে। উঠতি বয়সের ছেলেরা মেয়েদের দেখলেই উত্ত্যক্ত করে। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে, ওসব ছেলেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এটার দিকে নজর দেওয়া উচিত বলে মনেকরি। 
রামদাস বিলকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত আনজুম অনন্যা। তিনি বলেন, এখানে আসার পর শুনেছি রামদাস বিলের কথা। দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন। বিলটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

×