ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১

আ.লীগ নেতারা আমাদের ভোগের পণ্য মনে করত: মহিলা লীগ নেত্রী

প্রকাশিত: ২১:০০, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আ.লীগ নেতারা আমাদের ভোগের পণ্য মনে করত: মহিলা লীগ নেত্রী

যুব মহিলা লীগ নেত্রী

আওয়ামী লীগের নেতারা দলের ও অঙ্গসংগঠনের নারীদের সব সময় ভোগের পণ্য মনে করত বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি উম্মে হানি সেতু। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই নেত্রীর একটি ভয়েস রেকর্ড ভাইরাল হয়, যা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।

সেতু ওই ভয়েস রেকর্ডে বলেন, ‘দল করেছি কিন্তু কখনও ভালো জায়গায় রাখেনি। নেতারা বাঁকা করে তাকিয়েছেন, কেন তাকিয়েছেন সেটাও বুঝি? দেখতে যথেষ্ট সুন্দরী ছিলাম, বিশ্রী তো আর না! কোন নেতা কোন দৃষ্টিতে তাকিয়েছেন, সেটা জানি। আওয়ামী লীগ নেতারা কখনোই বোনের সম্মান দেননি। সবসময় তারা আমাদের ভোগের পণ্য মনে করতেন। যে মেয়ের শরীরে উনারা হাত দিতে পারতেন, তাকেই ভালো পদ দিতেন।’

তিনি বলেন, ‘আমার নামে তিনটি মামলা হয়েছে। আমিসহ কয়েকজন মামলা খেয়েছি। অনেক সিনিয়র নেত্রীরা আছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। আমি মামলা খেয়ে অনেক কষ্ট করতেছি, তারা ভালো থাকুক। মামলা খেলে তাদের কষ্ট হওয়ার কথা ছিল না, তাদের ঘরে কোনো বাচ্চা নেই। আমার ১৬ মাসের একটি ছোট বাচ্চা আছে। ওই বাচ্চাটাকে ফেলে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পড়ে আছি। একটা মানুষ আমার বাসায় খবর নেয় না, আমার ছোট তিনটা বাচ্চা কী খায়, বাচ্চাগুলো কী করে, বাড়িতে বাজার আছে কি না? তা ফোন দিয়ে কেউ খবর নেয়নি। তাতেও কোনো দুঃখ নেই।’

উম্মে হানি সেতু বলেন, ‘বাংলা কথা বলি, এই নোংরা নেতাগুলোর কারণে আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়েছে। শুধু ইউনিয়ন লেভেল, উপজেলা লেভেল বা জেলা পর্যায়ে না, কেন্দ্রীয় নেতাদের পর্যন্ত অনেক অনেক নোংরা নোংরা খবর আসতেছে। কেন্দ্রীয় নেতারা নায়িকাদের নিয়ে ফূর্তি করতেন। এগুলো করে বাংলাদেশে গজব নাজিল করেছে আওয়ামী লীগের ওপর।’

তিনি বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মধ্যেও আমাদের অনেক নেতাদের সান্নিধ্যে অনেকেই ছিল, যারা ছিল তাদের কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা যারা অবাধ্য ছিলাম, তাদের কথা শুনিনি, আজকে আমরাই মামলা খেয়েছি। দল ক্ষমতায় আসলে সুসময়ের পাখিরা আবার সুবিধা পাবেন। যারা কোলে বসতে পারেন তাদেরই ভালো জায়গা থাকে।’

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে হোয়াটসঅ্যাপে। সেগুলোতে উম্মে হানি সেতু নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে এ ভয়েস রেকর্ড পাঠান। তবে আমাদের মধ্যের কেউ সেই রেকর্ড ফাঁস করেছেন। এটি খুবই দুঃখজনক।

ভয়েস রেকর্ড সম্পর্কে উম্মে হানি সেতু বলেন, ‘আমি মামলা খাইয়া দৌঁড়ের ওপর আছি, আমি কোনো বক্তব্য দিইনি। পারলে প্রমাণ করুন।’ আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন এটি আপনি গ্রুপে দিয়েছেন, প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যখন বদমায়েশি করে তখন মনে থাকে না, এখন আমারে নিয়া নাচতে আইছে।’

এর আগে, গত ৫ আগস্ট আন্দোলনের মুখে পড়ে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।  এরপর দলটির নেতাদের অনেকে দেশ ত্যাগ করতে পারলেও বেশিরভাগই আত্মগোপনে। এরই মধ্যে দলটির তৃণমূল থেকে সব পর্যায়ের নেতা-নেত্রীদের নামে মামলাও করা হচ্ছে।  

 

এম হাসান

×