ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১

নতুন ব্রিজ নির্মাণ করার দাবি 

চেল্লাখালী নদীর মিনি স্টীল ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে ১০ গ্রামের মানুষ

এম. সুরুজ্জামান, নালিতাবাড়ী, শেরপুর 

প্রকাশিত: ১৪:৪৮, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৪:৪৯, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চেল্লাখালী নদীর মিনি স্টীল ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে ১০ গ্রামের মানুষ

প্রবল স্রোতে ভেঙে গেছে স্টীল ব্রিজ। ছবি: জনকণ্ঠ

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বারমারী-পলাশীকুড়া-বাতকুচি এলাকায় চেল্লাখালী নদীর ওপর নির্মিত মিনি স্টীল ব্রিজটি ভেঙে নদীতে পড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন কমপক্ষে ১০ গ্রামের হাজারো মানুষ। ওই ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় দুই পাড়ের মানুষ ৫/৬ কিলোমিটার ঘুরে চলাফেরা করছেন। তাই ভুক্তভোগীরা কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণ করার জোড় দাবি জানিয়েছেন।

সুত্রে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকার মানুষের নদী পারাপারের কথা বিবেচনা করে উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুকচিরে প্রবাহিত পাহাড়ি খরস্রোতা চেল্লাখালী নদীর পলাশীকুড়া ও বাতকুচি এলাকায় এলজিএসপির অর্থায়নে মিনি স্টীল ব্রিজটি নির্মিত হয়। ব্রিজটি দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় বিগত ২০২২ সালে পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতে ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। গত প্রায় ৫/৬ বছর আগেই এটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়তে শুরু করে। তখন কোন প্রকার সংষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। 

ব্রিজের লোহার পাইপগুলো অনেক আগেই জং ধরে ক্ষয় হয় যায়। এছাড়া প্রতি বছর বন্যায় ব্রিজের দুই পাশের মাটি ধসে যায়। পানির স্রোতের কারণে ব্রিজের পিলারগুলোর মাটি সরে যাওযায় নড়বড়ে হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এরপর এলাকাবাসী মিলে ধসে যাওয়া অংশে বাঁশ দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে কোনমতে যাতায়াত করতে পারতেন। কিন্তু দুই বছর আগে হঠাৎ বন্যায় পাহাড় থেকে নেমে আসা প্রবল স্রোতের তোড়ে ব্রিজটির মাঝ বরাবর দুই ভাগ হয়ে নদীর মধ্যে ধসে পড়ে।  

স্থানীয় বাতকুচি গ্রামের বাসিন্দা সুরুজ্জামান জানান, এই ব্রিজের দিয়ে জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র মধুটিলা ইকোপার্ক, পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, বাতকুচি, মেষকুড়া, সমশ্চুড়া, বারমারী বাজার, পলাশীকুড়া, আন্ধারুপাড়া, ডালুকোনা, শেকেরকুড়া ও বোনারপাড়া গ্রামের হাজারো মানুষ যাতায়াত করেন। এমন কী পলাশীকুড়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, পলাশীকুড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হোসেন আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, প্রাপ্তী ও বেগম রৌশন আরা একাডেমিতে শতশত শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাতায়াত করে। 

দুই বছর ধরে ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় হাজারো পথচারী এখন বিপদে পড়েছেন। তারা বিকল্প পথে কমপক্ষে ৫/৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে এসব গ্রাম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করছেন। এতে শিশু ও নারী ও বৃদ্ধ রোগীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এমনকি বারমারী বাজারে নিত্যপণ্য ক্রয় করতে আসতে র্দুভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। তাই দ্রæত এখানে নতুন একটি ব্রিজ পুনর্র্নিমাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সংশ্লিষ্ট পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. জামাল উদ্দিন বলেন, মানুষের ভোগান্তি কমাতে চলতি বছরের প্রথম দিকে পরিবেশ ও মৃত্তিকা অধিদপ্তরের একটি টিম এসে পর্যাবেক্ষণ করে গেছেন এবং এলজিইডির প্রকৌশলীরা এসে মাপঝোক করেছেন। তারা এখানে দ্রæত নতুন ব্রিজ নির্মাণের কথা বললেও দীর্ঘদিন হয়ে গেল কোন কাজ হচ্ছে না। তিনি দ্রুত একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান। 

এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ীর এলজিইডির উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে এলজিইডির পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও প্রাাথমিক জরিপ চালোনো হয়েছে। এখন কর্তৃপক্ষের আদেশ পেলেই দ্রুত পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


 

এসআর

×