ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১

কৃষকের মুখে হাসি

সাটুরিয়ায় রোপা আমনে বাম্পার ফলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: ০০:৪২, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সাটুরিয়ায় রোপা আমনে বাম্পার ফলন

মাঠের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত শুধু সবুজ আর সবুজ 

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের কৃষকরা তাদের এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখেনি। যতদূর চোখ যায় চারদিকে যেন সবুজ রঙের ফসলের সমারোহ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার আহ্বানে মাঠ পর্যায়ে উপ-কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের রোপা আমনের চারা রোপণ করতে উৎসাহ যুগিয়েছেন। কৃষি অফিসের অনুপ্রেরণায় রোপা আমনের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছে কৃষক। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে আশ্বিন-কার্তিক মাসে কৃষকরা তাদের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে রোপা আমন মৌসুমে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল প্রায় ৫ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে বিভিন্ন জাতের রোপা আমন চাষ করা হয়েছে ৪ হাজার ৭৮৩ হেক্টর জমিতে। এর  মধ্যে ৭০ শতাংশ জমিতে ব্রি ধান ৭৫, ব্রি ধান ৮৭, ব্রি ধান ১০৩ এবং বিনা ধান ১৭ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। তবে এ জাতের রোগ-বালাই কম ও ফলন বেশি হয়।

যার ফলে এ মৌসুমে সাটুরিয়া উপজেলার কৃষকরা রোপা আমনের বাম্পার ফলনের আশঙ্কা করছেন। সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, রোপা আমনের চারা গাছ লাগানোর পর থেকেই এক ধরনের পোকা আক্রমণ করে থাকে। সেই পোকার হাত থেকে চারা ধান রক্ষা করতে কৃষকদের জমির আগাছা ও স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

কৃষকের সহযোগিতা করার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে ব¬ক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছে। তারা কৃষকের সঙ্গে ফসলের মাঠে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া ধানের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের সঙ্গে দিন রাত নিরলস কাজ করে যাচ্ছে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। বালিয়াটি ইউনিয়নের খলিলাবাদ গ্রামের আলী হোসেন বলেন, এ বছর তার প্রজেক্টে প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছে।

এবার বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় জমিতে পানি ও সার কম লেগেছে। ধান এখন ফুলে বের হচ্ছে। কিছু জমিতে পোকার আক্রমণ হলেও কৃষি অফিসের পরামর্শে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারবে বলে আশা করছেন তিনি।
বালিয়াটি ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের কৃষক বাবু ও হযরত আলী জানান, এবার দুজনে মিলে ৬ বিঘা জমিতে রোপা আমনের চাষ করেন। এতে প্রায় ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধানও ভালো হয়েছে। বৃষ্টি বেশি হওয়ায় খরচ অনেকটাই কম লেগেছে। দুই বিঘায় পোকা লেগেছিল। ব্লক সুপারভাইজরদের পরামর্শে স্প্রে করার পর তা দমন হয়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ আরও জানান, এবার ধানকোড়া, বরাইদ ও দিঘলিয়া ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি রোপা আমনের আবাদ করা হয়েছে। গতবার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ২শ’ হেক্টর।

লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছিল ৩ হাজার ১০০ হেক্টর। এবার অন্যান্য ইউনিয়নে রোপা আমনের ব্যাপক হারে চাষ করায় এ মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, এবার রোপা আমন মৌসুমে বেশি বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকের পানি ও সার খরচ কম লেগেছে। আবওহায়া প্রতিকূল অবস্থায় থাকলে কৃষক লাভবান হবেন। সিন্ডিকেট না থাকলে ধানের দাম ভালো পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার উপজেলায় রোপা আমনের বাম্পার ফলন হবে। এখনো ফসলের মাঠ ভালো অবস্থানে রয়েছে। আবহাওয়া এখনো ভালো আছে। এভাবে আবহাওয়া থাকলে সারাদেশে ধানের ঘাটতি থাকে না। ধান ঘরে তোলা না পর্যন্ত উপ কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকের সঙ্গে মাঠে থাকবে বলে তিনি জানান।

×