ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১

প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় নিম্নমানের সেবা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝিনাইদহ

প্রকাশিত: ০০:০৩, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় নিম্নমানের সেবা

অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থায় জলাবদ্ধতা

প্রতিষ্ঠার ৬৬ বছর পার হলেও ঝিনাইদহ পৌর এলাকায় মজবুত ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। ফলে অপরিকল্পিত ড্রেন মহল্লাবাসীর জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পাড়া -মহল্লা তলিয়ে যায় পানিতে। শহরের ছোট-বড় সব খাল, পুকুর ও নালা ভরাট করে বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। তাই পানি বের হওয়ার কোনো রাস্তা নেই।

নাগরিকদের একমাত্র পৌরসভার ড্রেন ভরসা হলেও ৮০ ভাগ ড্রেনের কোনো মাথামু-ু নেই। ব্রিটিশ সরকারের আমল থেকে রাজনৈতিক দলের নেতারা ঝিনাইদহ পৌরসভার চেয়ারম্যান বা মেয়র নির্বাচিত হলেও তারা শক্তিশালী ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেননি। অথচ ড্রেন নির্মাণের নামে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা লোপাট করা হয় এমন কথাও ক্ষোভের সঙ্গে পৌরবাসীকে বলতে শোনা যায়।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ১৯৫৮ সালে ঝিনাইদহ পৌরসভা গঠিত হয়। এ পর্যন্ত ১৪ রাজনৈতিক নেতা  চেয়ারম্যান ও মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু পরিকল্পিত ড্রেন উন্নয়নে কেউ কার্যকর ভূমিকা পালন করেননি বলে অভিযোগ। প্রথম শ্রেণির ঝিনাইদহ পৌরসভার মোট আয়তন ৩২.৪২ বর্গকিলোমটিার। ২৬টি মৌজা নিয়ে গঠিত ঝিনাইদহ পৌরসভায় তিন লাখ পরিবার বসবাস করেন। পৌরসভার তথ্য বাতায়ন সূত্রে জানা গেছে, চলাচলের জন্য পৌর এলাকার বেশিরভাগ রাস্তা কাঁচা রয়েছে।

সূত্রমতে ঝিনাইদহ শহরে ৭২.৩০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা রয়েছে। অন্যদিকে কাঁচা রাস্তা আছে ৭৪.৬১ কিলোমিটার। হাল আমলে কাঁচা-পাকা ড্রেনের কোনো পরিসংখ্যান পৌরসভায় না থাকলেও পুরাতন তথ্য বলছে ঝিনাইদহ শহরে ১০৭ কিলোমিটার ড্রেন রয়েছে। এর মধ্যে পাইপ ড্রেন আছে ৭ কিলোমিটার, ইটের ড্রেন ৩৫ কিলোমিটার, আরসিসি ১৫ কিলোমিটার, প্রাইমারি ১০ কিলোমিটার ও কাঁচা ড্রেন ৪০ কিলোমিটার। 

ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়ার বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান জানান,  পৌরসভার ‘ফাস্ট ক্লাস পৌরসভার থার্ডক্লাস নাগরিক জীবন’। ড্রেনগুলোতে কোনো প্রবাহ নেই। নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। অনেক স্থানে ড্রেন ভেঙ্গে সমান হয়ে গেছে। ফলে বাসাবাড়ির পানির সঙ্গে বৃষ্টির পানি মিশে  ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা ভেসে মহল্লা একাকার হয়ে যায়।

আদর্শপাড়া, কচাতলার মোড়, মহিলা কলেজপাড়া, কাঞ্চননগর, কলাবাগান, চাকলাপাড়া ও খোদ ঝিনাইদহ শহরের পোস্ট  অফিস মোড়েও অল্প বৃষ্টিতে সাঁতার পানি হয়ে যায়। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার প্যানেল মেয়র সাইফুল ইসলাম মধু জানান, বিভিন্ন এলাকায় নতুন নতুন আরসিসি ড্রেন তৈরি হচ্ছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করি।

ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কামাল উদ্দীন জানান, ঝিনাইদহ পৌর এলাকায় এলজিএসপি ও পাবলিক হেলথের দুইটি প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। এই প্রকল্পের আওতায় তিনটি প্রধান আরসিসি ড্রেন তৈরি হলে সব সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি মনে করেন।

×