ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে স্বাভাবিক হচ্ছে না পেঁয়াজ আমদানি

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

প্রকাশিত: ০০:১০, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে স্বাভাবিক হচ্ছে না পেঁয়াজ আমদানি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিকই হচ্ছে না

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিকই হচ্ছে না। এই নিত্য ভোগ্যপণ্যটির ওপর অপ্রত্যাশিত শুল্কারোপ করায় আমদানি কমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ব্যবসায়ীদের দাবি- শুল্ক কমালে বাড়বে পেঁয়াজ আমদানি। আর এতে করে খুচরা বাজারে কমবে দামও। আর শুল্ক না কমালে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়াতে পারে।

বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান পানামা পোর্টলিংক লিমিটেডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী- গত চার দিনে ১৩৬টি ট্রাকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ৩ হাজার ৬৩১ দশমিক ২ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। জানা যায়, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে সোনামসজিদ স্থলে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ৫১ হাজার ৬৯৪ দশমিক ৫ টন। এদিকে চলতি বছরের আগস্ট মাসে পেঁয়াজ জামদানি হয়েছে মাত্র ১৮ হাজার ১৩৬ দশমিক দুই টন। যা প্রায় আমদানি হয়েছে ৩ শতাংশ কম।
আমদানিকারকরা জানিয়েছেন- পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকায় প্রায় সাড়ে ৫ মাস আমদানি বন্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয় চলতি বছরের ৪ মে। ৪০ শতাংশ শুল্ক থাকায় আলোচনা-সমালোচনার মধ্যদিয়ে গত ৯ তারিখ থেকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। তারপর থেকেই এই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানিতে ধস নামে।

আগে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার বাদে প্রতিদিন পেঁয়াজ আসত সর্বোচ্চ দেড় থেকে আড়াই হাজার টন। কিন্তু এখন আগের তুলনায় অনেক কম পেঁয়াজ আমদানি হয়। তারা আরও জানান, আমদানিকারকরা পেঁয়াজের ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শুল্কারোপের নীতিমালা সংশোধনের কথা ছিল জুলাই মাসে। ৪০ শতাংশ থেকে ৪-৬ শতাংশ শুল্ক কমানোর কথা ছিল। কিন্তু ১ মাস পেরিয়ে গেলেও এই সংকট নিরসন হয়নি। ফলে আমদানিকারকরাও পেঁয়াজ আমদানিতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন।
সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক আসাদুল হক বলেন, ভারত সরকার পেঁয়াজের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে। আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজে ৬ টাকা শুল্ক দিতে হতো। এখন দিতে হচ্ছে ১৮-১৯ টাকা। ফলে আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। লাভ না হওয়ায় অনেক আমদানিকারক পেঁয়াজেরও ব্যবসা ছেড়ে দেয়ার কথা ভাবছেন। 
কয়েক মাস ধরে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছেন আমদানিকারক মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্কারোপ বহাল রেখেছে। এ কারণে তিনিসহ অনেক আমদানিকারক পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছেন। যার কারণে বাজারে পেঁয়াজের দাম চড়া।

যদি ভারত সরকার আরোপিত শুল্ক কমায়, তবে ব্যবসায়ী থেকে ভোক্তা-সবাই উপকৃত হবেন। আরেক আমদানিকারক শফিকুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত শুল্কে ভারত থেকে পেঁয়াজ নিয়ে এলে পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে দাম নাগালের বাইরে চলে যাবে। এতে আমরাও বিপাকে পড়েছি। এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারগুলোয় প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা দরে।

গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারভেদে ৫-৮ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। শিবগঞ্জের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী খায়রুল ইসলাম মুকুল বলেন, আমদানি কম তাই পেঁয়াজের দাম বেশি। আগে গোডাউনে ২-৩ ট্রাক পেঁয়াজ আনতে পারতাম। কিন্তু এখন এক ট্রাক পেঁয়াজ পেতেই হিমশিম খেতে হয়। বাড়তি টাকা তো দিতেই হয়। সোনামসজিদ উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধের উপ-পরিচালক সমির ঘোষ বলেন, আগের থেকে পেঁয়াজ আমদানি কমেছে।

শুল্কারোপ বেশি হওয়ায় আমদানিকারকরা ভারত থেকে পেঁয়াজ কম আনছেন। তবে কি পরিমাণ পেঁয়াজের আমদানি কমেছে তাৎক্ষণিক জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা। সোনামসজিদ স্থলবন্দরের ডেপুটি কমিশনার অব কাস্টমস নুর উদ্দিন মিলনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য মেলেনি।

×