ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১

বন্যা: ফটিকছড়িতে দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১৪:৪৬, ২২ আগস্ট ২০২৪

বন্যা: ফটিকছড়িতে দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী

ফটিকছড়িতে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে করে বাড়ি-ঘর ডুবে পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন দুই লক্ষাধিক মানুষ। বন্যাকবলিতদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা রাখা হয়েছে। 

এছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। 
জানা গেছে, টানা বর্ষণে হালদা নদী, সর্তা খাল, ধুরুং খাল,ফটিকছড়ি খাল, মন্দাকিনী খাল, গজারিয়া খাল, তেলপারি খাল, কুতুবছড়ি খাল, লেলাং খালসহ বিভিন্ন খালের বাঁধ ভেঙে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। 

এতে উপজেলার ফটিকছড়ি পৌরসভা, নাজিরহাট পৌরসভা, সুন্দরপুর, পাইন্দং, হারুয়ালছড়ি, সুয়াবিল, দাঁতমারা, বাগানবাজার, নারায়ণহাট, ভুজপুর, লেলাং, সমিতিরহাট, রোসাংগিরী, জাফতনগর, বক্তপুর, নানুপুরসহ বিভিন্ন স্থানের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। 

বন্যার পানিতে ডুবে আছে চট্টগ্রাম-খাগগাছড়ি, গহিরা-হেঁয়াকো, নাজিরহাট-কাজিরহাট, কাটিরহাট-সমিতিরহাট-আজাদীবাজার সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও গ্রামীন সড়ক। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার একর রোপা আমন, পুকুর, মাছের প্রজেক্ট, পোল্টি ফার্ম। 

হাটবাজারে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বিবিরহাট বাজার,নারায়নহাট বাজার,মির্জাহাট বাজার,দাঁতমারা শান্তিরহাট বাজারে পানি উঠায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে অনেককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। এদিকে,হালদা,ধুরুং সর্তা সহ সব নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কোন কোন এলাকায় গ্রামীণ অবকাঠামো নষ্ট হয়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। বন্যাকবলিত এলাকাবাসীর নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগ কর্তৃক গঠিত হয়েছে মেডিকেল টিম। যার ২০টি ইউনিয়নে এবং ৫টি সদরে। এছাড়া, নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্তৃক টিম গঠন করা হয়েছে।
 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, খালের বাঁধ ভেঙে ও প্রবল স্রোতে পানি উপচে পড়ে ফটিকছড়ির বিভিন্ন স্থানে প্লাবিত হচ্ছে। বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছি। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে খবরাখবর রাখছি। বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্তৃক টিম গঠন করা হয়েছে।

অপরদিকে, হাটহাজারী উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এখানে আনুমানিক দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ায় মানবেতর জীবন যাপন হয়ে পড়েছে। গো খাদ্যের অভাবে গৃহ পালিত পশু না খেয়ে আছে। এছাড়া,এ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ের প্রায় ২৩ টি ইউনিয়র সংযুক্ত সড়ক ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এবি 

×