বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।
শেখ হাসিনার ছবি দেখালে পত্রিকা-টেলিভিশন অফিস আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে এমন মন্তব্যের ঘটনায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ থেকে সদ্য পদাবনতি পাওয়া বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।
বুধবার দুপুরে শহরের আলাইপুরে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত জনসভায় তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ক্ষমা চান।
এ সময় রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে। কিন্তু গত ১৬ বছর যারা এই সরকারের (শেখ হাসিনা সরকারের) পক্ষ নিয়ে টিকিয়ে রেখেছিল তাদের কথা বলতে গিয়ে মুখ ফসকে সকল পত্রিকার কথা বলে ফেলেছি। এ জন্য আজকের এই সমাবেশে হাজার হাজার মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, আপনারা যদি দুঃখ পেয়ে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছর সাংবাদিক ভাইদের অনেক কিছুই বলতে দেওয়া হয়নি। আমাদের অনুরোধ পিলখানা হত্যাকাণ্ড, সাংবাদিক সাগর-রুনির মৃত্যু, হেফাজতে ইসলামের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মরদেহ যেভাবে দাফন করা হয়েছে এগুলো জাতির সামনে উপস্থাপন করবেন।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দুলু বলেন, আওয়ামী লীগ বিগত সময়ে যে চাঁদাবাজি, মাস্তানি, টেন্ডারবাজি, পুকুর দখল, বাড়ি দখল করেছে এর কোনোটাই এখন থেকে নাটোরে করতে দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, অনেককেই এখন দেখা যাচ্ছে কিন্তু গত ১৫ বছর তাদের চেহারা দেখা যায়নি। অথচ আমার নির্যাতিত নেতাকর্মীরা আমার পাশে ছিল। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে যারা অপকর্ম করতে যাবে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানাবেন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু, সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ, যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ আগস্ট ‘টিভি-পত্রিকায় খুনি হাসিনার ছবি ও বক্তব্য প্রচার করলে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে’ মর্মে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর একটি বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এর প্রেক্ষিতে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয় বিএনপি। নোটিশের জবাব দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু নির্ধারিত সময়েই নোটিশের জবাব দিয়েছেন। তবে তার বক্তব্য সন্তোষজনক না হওয়ায় এবং দলের নীতি ও আদর্শের পরিপন্থি বক্তব্য প্রদান করায় দুলুকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য থেকে পদাবনতি দিয়ে নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়।
তাসমিম