পানামা সিটিতে পর্যটন নেই বললেই চলে
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার ইস্যু থেকে শুরু করে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর বর্তমান পর্যন্ত টানা চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিস্থিতিতে সোনারগাঁয়ের বিনোদন কেন্দ্রগুলো পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। এতে এখানকার হোটেল-মোটেলে দেখা দিয়েছে মন্দাভাব। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার দুপুরে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটকশূন্যতায় পানাম সিটি, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (জাদুঘর), বাংলার তাজমহল, পিরামিড, ফানল্যান্ড পার্কসহ বিনোদনকেন্দ্রগুলো খাঁ খাঁ করছে। এতে করে পর্যটন ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল কয়েক শতাধিক পরিবারের মাঝে চরম দুর্দিন নেমে এসেছে। পর্যটক না থাকায় ব্যবসায় নেমেছে ধস। দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হয়। যা আগে টিকিট বিক্রি হয়েছিল ৮০ থেকে ১ লাখ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে হতাশ ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ। তা ছাড়া পানাম সিটিতে বর্তমান পরিস্থিতিতে ১ থেকে ২ শতাধিক টিকিট বিক্রি হয়। যা আগে বিক্রি হয়েছিল ১ হাজার থেকে ১২শ টিকিট।
এদিকে বাংলার তাজমহল ও পিরামিডে বর্তমানে ২০ থেকে ৩০টি টিকিট বিক্রি হয়। যেখানে আগে ৫শ থেকে ১ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছিল। একই অবস্থা অন্য বিনোদন কেন্দ্রগুলোতেও। জাদুঘর ও পানাম নগরীর কয়েকজন দোকানদার জানান, টানা কয়েকদিন দেশের অস্থিরতার কারণে দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে। দুইদিন ধরে দোকান খুলেও কোনো কাস্টমার পাচ্ছি না। জাদুঘর ও পানাম সিটিতে পর্যটক আসলে আমরা বেচাবিক্রি করতে পারি। এখন তো কোনো পর্যটক নাই তাই বেচাবিক্রি বন্ধ। এই কারণে পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।
ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে ঘুরতে আসা নাফিজা আক্তার জানান, দীর্ঘদিন ঘরে বসে থাকতে থাকতে আর ভালো লাগে না। তাই পরিবার ও সন্তানদের নিয়ে পানাম সিটিতে এসেছি। নারায়ণগঞ্জ চাষাঢ়া এলাকা থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা আলী হাসান জানান, জাদুঘরে লোকজন নাই বললেই চলে। আমরা এসেছি নারায়ণগঞ্জ শহর সোনারগাঁয়ের কাছে বলে।
আসার পথে কোথায়ও কোনোপ্রকার চাপ নেই। অনেক শান্তিতে ঘুরতে পেরেছি। অটোরিক্সা চালক শামীম মিয়া বলেন, আমরা আটোচালকরা প্রতিদিন গাড়ি চালিয়ে ইনকাম করে সংসার চালাই। বর্তমানে জাদুঘর ও পানাম নগরীতে কোনোপ্রকার বাইরের লোক নাই তাই যাত্রী পাচ্ছি না। বাইরের লোক ঘুরতে আসলে আমাদের যাত্রী অনেক হয়। আয়ও ভালো হয়। বর্তমানে অনেক কষ্টে আছি।
জাদুঘরের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, পর্যটক কম থাকায় অলস সময় পার করছি। পর্যটকের চাপ না থাকায় অফিস সময় বেশিরভাগ মোবাইল ফোনে কেটে যায়। পানাম সিটির দায়িত্বে থাকা সহকারী কাস্টডিয়ান কর্মকর্তা সিয়াম চৌধুরী জনকণ্ঠকে বলেন, দেশের চলমান অস্থিরতার কারণে পর্যটক কমে গেছে। এতে সরকার ব্যাপক রাজস্ব হারাচ্ছেন। চলমান পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হলেই আশা করছি পর্যটক বাড়তে থাকবে।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আমিনুল রহমান সুলতান ফোন রিসিভ করে বলেন, অন্য জায়গায় আছি পরে কথা বলি বলে ফোন কেটে দেন।