ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ ভাদ্র ১৪৩১

নোয়াখালীতে নতুন কূপ সন্ধান

দৈনিক ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার প্রত্যাশা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নোয়াখালী

প্রকাশিত: ২১:০০, ১৩ আগস্ট ২০২৪

দৈনিক ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার প্রত্যাশা

গ্যাস কূপ

নোয়াখালীর নতুন কূপে আগুন, দৈনিক ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা দেশের চলমান তীব্র গ্যাস-সংকটের মধ্যে আরও একটি নতুন কূপে গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর পরীক্ষামূলক আগুন জ্বালানো হয়েছে। বেগমগঞ্জ-৪ নামের ওই গ্যাসক্ষেত্রের কূপটি খনন করা হয় সোনাইমুড়ী উপজেলার ওয়াছেকপুর গ্রামে। 

সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ওই কূপে আগুন জ্বালানো হয়। এটি গত ছয় মাসের মধ্যে নোয়াখালীতে গ্যাস অনুসন্ধানে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) দ্বিতীয় সাফল্য। 

এর আগে গত ২৯ মার্চ জেলার কোম্পানীগঞ্জের সিরাজপুর ইউনিয়নের চর কাঁকড়া গ্রামে সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্রের ৪ নম্বর কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই গ্যাসক্ষেত্র থেকে ইতিমধ্যে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করা শুরু হয়েছে। বাপেক্সের কর্মকর্তারা আশা করছেন, বেগমগঞ্জ-৪ নামের নতুন কূপ থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। তার চেয়েও আশার দিক হলো এই কূপের চারটি স্তরেই গ্যাসের উপস্থিতি রয়েছে।

মঙ্গলবার বাপেক্সের কর্মকর্তারা জানান, ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল শুরু হওয়া খননকাজ শেষ হয়ে ডিএসটি টেস্ট শেষে এখন চলছে সর্বনিম্ন স্তরের উৎপাদন টেস্ট। প্রাথমিকভাবে কূপটির চারটি স্তরে গ্যাসের অস্তিত্ব মিলেছে। উৎপাদন টেস্ট শেষে জানা যাবে এখানে মজুত মোট গ্যাসের পরিমাণ। টেস্টিং কার্যক্রম শেষে মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে। নতুন কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রায় তিন কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করতে হবে। এরই মধ্যে পাইপলাইন স্থাপনের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে।

রাতে কূপের পাইপলাইনের মুখে আগুন জ্বালানোর সময় বাপেক্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বাপেক্স সূত্রে জানা যায়, কূপটিতে ৩ হাজার ১১৩ মিটার গভীর পর্যন্ত চারটি স্তরে খনন করা হয়।

ড্রিলিং ইনচার্জ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, বর্তমানে দেশে গ্যাসের যে তীব্র সংকট চলছে, এই সংকটময় মুহূর্তে এই কূপে গ্যাসপ্রাপ্তি অনেক আশার জন্ম দিয়েছে। আগামী কয়েক দিন কূপের প্রতিটি স্তরে গ্যাসের ডিএসটি টেস্ট করা হবে। এরপর কূপে গ্যাসের মোট মজুত সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় পাইপলাইন বসানোর পর অল্প সময়ের মধ্যে এই কূপ থেকে গ্যাস জাতীয় গ্রিড লাইনে সরবরাহ করা হবে।

একসময় গ্যাসকূপ খননের কাজে বিদেশি শ্রমিক ও কর্মকর্তারা যুক্ত থাকতেন। কিন্তু এখন তার পরিবর্তন হয়েছে। এ কূপ খননের সঙ্গে জড়িত প্রায় দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই বাংলাদেশের। এটাও আমাদের জন্য অনেক আনন্দের।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৬ সালে বেগমগঞ্জ-১ এবং ১৯৭৮ সালে বেগমগঞ্জ-২ গ্যাসকূপ খনন করা হলেও সেগুলো থেকে গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। ২০১৪ সালে বেগমগঞ্জ-৩ কূপ খনন করা হয় এবং সেখান থেকে এখনো প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ফেনী-নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এখানে বেগমগঞ্জ-৫ ও বেগমগঞ্জ -৬ কূপ খননের পরিকল্পনা রয়েছে বাপেক্সের।

 
 

 

শহিদ

×