ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

হবিগঞ্জ শিক্ষার্থীদের পদক্ষেপে সড়ক যানজট মুক্ত 

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ 

প্রকাশিত: ১১:৩০, ১২ আগস্ট ২০২৪

হবিগঞ্জ শিক্ষার্থীদের পদক্ষেপে সড়ক যানজট মুক্ত 

ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছেন শিক্ষার্থী। ছবি: জনকণ্ঠ

হবিগঞ্জ জেলা শহরের চৌধুরীবাজার মোড়ের চৌরাস্তায় লাঠি হাতে কয়েকজন শিক্ষার্থী দাঁড়ানো। তখন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের দিক থেকে ঘাটিয়ামুখী এক রিকশাচালক তাদের ইশারা পেয়ে একইস্থানে মিনিট পাঁচেক দাঁড়িয়ে থাকেন। 

এরপর ছাত্রদের একজনকে জিজ্ঞেস করলেন-ভাই অখন যাইতাম নি?। সঙ্গে সঙ্গে এক শিক্ষার্থীর অনুমতিসূচক ইশারা পেয়ে ওই রিকশাচালক দ্রুত চৌরাস্তা অতিক্রম করেন।

রবিবার (১১ আগস্ট) দেুপুরে এ দৃশ্য দেখার পর আরও ৩০ মিনিট সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে দেখা যায়, চৌরাস্তায় কোনো যানজট সৃষ্টি হয়নি। অথচ ক’দিন আগেও এ স্থানটি ছিল হবিগঞ্জ শহরের সবচেয়ে যানজটপ্রবণ পয়েন্ট। ছোট যানবাহনগুলো এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতো।

পয়েন্টের এক পান দোকানি অন্য এক পথচারীকে বলে, ভাই দেখুন কয়েকদিন আগেও এই পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত দায়িত্ব পালন করতো, কিন্তু যানজট কমতো না। শিক্ষার্থীরা সড়কে নামার পর এখন যানজট নেই বললেই চলে। আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে সহজেই হবিগঞ্জ শহরকে যানজট মুক্ত করা সম্ভব।

রিকশাচালক মিজানুর রহমান জানান, ট্রাফিক পুলিশরা রিকশাচালকদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতেন। আর ছাত্ররা তাদের বিনয়ের সঙ্গে লাইন মেনে গাড়ি চালানোর জন্য অনুরোধ করে। তাই তাদের ইশারা-ইঙ্গিত মানতেও ভালো লাগে।

সেখানে দায়িত্বরত বৃন্দাবন সরকারি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র কামরুল হাসান বলেন, অন্যান্য সহপাঠীরা সড়কে কাজ করছে দেখে আমিও উদ্বুদ্ধ হয়েছি। একটু কষ্ট হয়। কিন্তু আনন্দ পাই। গুরুজনরাও আমাদের এ কাজকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

শুধু চৌধুরীবাজার পয়েন্টেই নয়, প্রতিদিনই জেলা শহরের সদর মডেল থানা মোড়, ট্রাফিক পয়েন্ট, শায়েস্তানগর পয়েন্ট, কালিবাড়ি পয়েন্ট, এমএ মোতালেব চত্বরসহ বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে শিক্ষার্থীদের এভাবে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।

ছেলে মেয়েরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, অটোরিকশাগুলোকে শৃঙ্খলার সঙ্গে লাইনে চালানো এবং হেলমেট ছাড়া যারা মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন তাদের হেলমেট পরে মোটরসাইকেল চালাতে অনুরোধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বয়োবৃদ্ধ লোকদের রাস্তা পারাপারেও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতে দেখা যায়।

টাউন হল রোডের ব্যবসায়ী সাইফুল খান বলেন, আগে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের (টমটম) এলোপাতাড়ি চলাচলে যানজট লেগে থাকতো। কারণ ট্রাফিক পুলিশের নজর ছিল বড় গাড়ি আটক করে টাকা আদায় করা। তারা যানজট কমানোর ব্যাপারকে গুরুত্ব দিত না। ছাত্রছাত্রীরা কাজ করার পর থেকে অসংখ্য ইজিবাইক সড়কে চলাচল করলেও এখন আর বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে না। 

সড়কে দায়িত্ব পালন করা কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পুলিশ কর্মস্থলে আসার আগ পর্যন্ত তারা সড়কে কাজ করবে। 

 এসআর

×