মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম মোজাম্মেল হক। ছবি: জনকণ্ঠ
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতাকারীদের বিশেষ আদালতের সামারি কোর্টে বা ক্যামেরা আদালতে দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।
মন্ত্রী সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিচারের কথা উল্লেখ করে বলেন, সে দেশে ৬০ জনের মতো বাঙালি মিছিল করেছিল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। কারো যাবজ্জীবন, কারো দশ, কারো পাঁচ বছর সাজা দেয়া হয়েছে।
তারা যদি একটি মিছিল করার অপরাধে এই শাস্তি দিতে পারে; তাহলে বাংলাদেশ কি এতই দুর্বল যে আজকে এদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক, বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও আদর্শের উত্তরাধিকারী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরকার এই সকল দেশদ্রোহীকে শাস্তি দিতে পারবে না? আমরা দাবি করবো বিশেষ আদালতে সামারি কোর্টে বা ক্যামেরা আদালতে দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার
কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় মাদারীপুরের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনে এসে যাত্রা পথে শনিবার দুপুরে মাদারীপুরের রাজৈরের টেকেরহাট স্ট্যান্ডে এক মতবিনিময় সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এসব কথা বলেন। এসময় আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপিসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, যে হাতে তারা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে আগুন দিয়েছে সে হাত শুধু ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিলেই হবে না, এর বেশি তাদের চরম শাস্তি দিতে হবে। যারা মাদারীপুরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, পৌর মুক্তিযোদ্ধা অডিটোরিয়াম, পুলিশ ফাঁড়ি, পুলিশবক্স, পেট্রোল পাম্প, বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস করেছে কোন অবস্থাতেই তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার আমরা করবো। যেখানে আওয়ামী লীগের ঘাটি আজীবন, সেখানে জামাত-বিএনপি-শিবির-ছাত্রদল-স্বাধীনতা বিরোধীরা এতো শক্তি কোথা থেকে পেলো, সেটা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে।
মন্ত্রী সারাদিন ক্ষতিগ্রস্থ সার্বিক ফিলিং স্টেশন, বাস ডিপোসহ ক্ষতিগ্রস্থ স্থানগুলো পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন। ধ্বংসযজ্ঞের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনকালে মন্ত্রীর সাথে ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতারা।
এ সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি বলেন, “কিভাবে ধ্বংস করেছে তাতে আমি কষ্ট পেয়েছি সত্য; তবে আমি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিচ্ছি একারণে যে, তারা যে এটা করবে তা আমি জানি। আর এর মধ্যে কিছু ঢুকে পড়েছে হাইব্রিড। আমাদের দলে কিছু হাইব্রিড ঢুকে পড়েছে তারা এদের সাথে যুক্ত হয়েছে। ওরা নব্য রাজাকার। ওই নব্য রাজাকারদের চিহিৃত করতে হবে।
কারণ এই মাদারীপুরে বিএনপি, জামায়াত, রাজাকারদের এমন কোন শক্তি নেই যে, একা এটা করতে পারে। মাদকসেবী, চোর, ডাকাতদের হাতে অফুরন্ত টাকা দিয়ে তারা এটা করিয়েছে। একটি অত্যাধুনিক পেট্রোল পাম্প, ৩২টি গাড়ি ও টিকিট কাউন্টারগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে। কোটা অন্দোলনকারীদের উপর ভর করে আমাদের ভিতর ঢুকে যাওয়া হাইব্রিটরা এগুলো করিয়েছে। কারণ মাদারীপুরে বিএনপি-জামাতের এমন শক্তি নেই যে, এগুলো করতে পারে। তারা নব্য রাজাকার।
এ মতবিনিময় সভায় রাজৈর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক সাহাবুদ্দিন মিয়া সাহার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বীর বিক্রম মেজর জেনারেল (অবঃ) হেলাল মোর্শেদ খান। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহবায়ক আ.ফ.ম ফুয়াদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরজাহান পারুল, উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান শাহীন চৌধুরী, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরিদা হাসান পলবীসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি শনিবার সন্ধায় মাদারীপুর শকুনী লেকের পাড় স্বাধীনতা অঙ্গনে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ, পৌর আওয়ামী লীগ, শ্রমিকসহ সকল পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদসহ সকল সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত এক বিশাল প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি, টাঙ্গাইল-২ আসনের এমপি তানবীর হাসান ছোট মনির, শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মোল্লা, ‘সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসিবুর রহমান খান, মাদারীপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি হাফিজুর রহমান যাচ্চু খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শাহজাহান হাওলাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান খান, আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবুল বাশার, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন সেলিম নেতৃবৃন্দ।
এসআর