ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

চুয়াডাঙ্গায় রেলওয়ে ওভারপাস র‌্যাম্প নির্মাণ

 ত্রুটি সংশোধনে ব্যয় বেড়েছে ১১ কোটি টাকা

রাজীব হাসান কচি, চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ২৬ জুলাই ২০২৪

 ত্রুটি সংশোধনে ব্যয় বেড়েছে  ১১ কোটি টাকা

.

চুয়াডাঙ্গায় রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণে ত্রুটির কারণে বেড়েছে সংশোধন ব্যয়। জনবল কম থাকায় কাজে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। ৬৪ কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরা হলেও সংশোধন ব্যয় বেড়েছে আরও ১০ কোটি ৯৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। সে কারণে চলতি বছরের ৩০ জুন নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। কাজ হয়েছে মাত্র ৪০ শতাংশ। এতে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদের ভোগান্তি বেড়েছে।

চুয়াডাঙ্গা শহরের রেলবাজার থেকে পুরনো ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত নির্মাণাধীন রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণের ক্ষেত্রে ত্রুটি ধরা পড়ায় সংশোধন ব্যয় বেড়েছে আরও প্রায় ১১ কোটি টাকা। সংশোধিত ওভারপাসের ্যাম্পের আয়তন বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে নির্মাণকাজের সময়। প্রায় বছরখানেক ধরে চলা ওভারপাসের এই নির্মাণকাজ এখন দৃশ্যমান। কাজে ধীরগতি থাকলেও একের পর এক বসছে স্প্যান।

নির্মাণকাজ ধীরগতিতে চলায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ শহরবাসী। ঢাকা থেকে পণ্য বহনকারী ট্রাকচালক আব্দুল খালেক জানান, ট্রান্সপোর্টের মালামাল নিয়ে প্রায়ই আমাকে ট্রাক চালিয়ে চুয়াডাঙ্গায় আসতে হয়। ঝিনাইদহ হতে চুয়াডাঙ্গায় আসার সময় এটুকু রাস্তায় খুব ভোগান্তি হয়। ট্রাক চালানোর সময় মনে হয় উল্টে যাবে। তবুও কষ্ট করে রাস্তায় আসতে হয়। একই কথা বলেন, নেহালপুর গ্রামের ইজিবাইকচালক ইদ্রিস। তিনি বলেন, পেটের তাগিদে ইজিবাইক চালিয়ে চুয়াডাঙ্গা শহরে আসতে হয়। কিন্তু, যাত্রী নিয়ে এটুকু রাস্তা পেরোনো আমার জন্য খুবই সমস্যা মনে হয়।  

যানজট কমানো নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ চালু রাখার জন্য চুয়াডাঙ্গা শহরের  রেলবাজারে রেলওয়ে ওভারপাসের নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা- আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুন। কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ১২ আগস্ট। এর আগে ২০২২ সালের ২৮ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের বৈঠকে ওভারপাস নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। পরে চুয়াডাঙ্গা সড়ক জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়নে ঢাকা বনানীর ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড (এনডিই) কাজ বাস্তবায়ন করছে। প্রায় ৪১৯ মিটার দৈর্ঘ্যরে ওভারপাস নির্মাণে চুক্তি ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪ কোটি টাকা। ওভারপাসে ১৩টি স্প্যান থাকবে। প্রস্থ হবে সোয়া ১০ মিটার। ২০২৪ সালের ৩০ জুনে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা শেষ হয়নি। তবে এর মধ্যেই আবার সংশোধন ব্যয় সময়কাল বাড়ানো হয়েছে।

সওজ দাপ্তরিক সূত্রে জানা যায়, নির্মাণকাজ চলাকালে সমস্যা দেখা দেয় ওভারপাসের ্যাম্পের আয়তন নিয়ে। দুই প্রান্তের ্যাম্পের নকশায় প্রথমে দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছিল ৩৩০ মিটার। এতে ওভারপাসে উঠতে সংযোগ পথ অনেকটা খাড়াখাড়ি হচ্ছিল। জন্য সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রণালয়ে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (আরডিপিপি) পাঠানো হয়। সংশোধিত ওভারপাসে উঠতে সংযোগ ্যাম্পের দৈর্ঘ্য আরও ১১২ মিটার বাড়ানো হয়। এতে নতুন করে আরও ব্যয় বেড়েছে ১০ কোটি ৯৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। অবকাঠামো নির্মাণে এখন মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৭৪ কোটি ৯৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। সেই সঙ্গে নির্মাণ কাজে সময় বেড়েছে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত। এদিকে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ নির্মাণকাজে অধিক জনবল নিয়োগ না করায় কাজ চলছে ধীরগতিতে। সে কারণে দুর্ভোগে পড়ছে সাধারণ মানুষ।

ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সড়ক জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং প্রকল্প পরিচালক খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, রেলওয়ে ওভারপাসের নির্মাণকাজ ৪০ শতাংশ শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ আগামী বছর জুন মাসের মধ্যে শেষ হবে। তবে আশা করা যায়, ওই সময়ের আগে অর্থাৎ আগামী ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যেই কাজ শেষ হবে।

 

 

×