ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

ভাঙচুর অগ্নিসংযোগে ব্যাপক ক্ষতি

মেট্রোরেল এক সপ্তাহ বন্ধ ॥ কবে চলবে তাও অনিশ্চিত

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৪২, ২৬ জুলাই ২০২৪

মেট্রোরেল এক সপ্তাহ বন্ধ ॥ কবে চলবে তাও অনিশ্চিত

মেট্রোরেল

কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের হামলায় দুই স্টেশনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় গত এক সপ্তাহ যাবৎ বন্ধ রয়েছে রাজধানীর উত্তরা-মতিঝিল রুটের মেট্রোরেল সার্ভিস। গত ১৯ জুলাই মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে আন্দোলনকারীরা। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় স্টেশন দুটির। এর আগে গত ১৮ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলাকালে মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

পরে সেই আগুনের ধোঁয়া মেট্রোরেল পর্যন্ত উঠে যায়। তখন জননিরাপত্তার স্বার্থে ওইদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর পর থেকেই বন্ধ রয়েছে মেট্রোরেল। কবে নাগাদ মেট্রোরেল চালু হবে তাও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
এদিকে রাজধানী মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের কারণে স্টেশন দুটির ই-সিস্টেমের পুরোটাই ধ্বংস হয়ে গেছে। এগুলো ঠিক করতে প্রায় ৫০০ কোট টাকা খরচ হবে বলে জানান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল)-এর কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক জনকণ্ঠকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেল স্টেশনটি দেখে গেছেন। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে স্টেশন দুটির। প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, সেটাই আমাদের বক্তব্য। মেট্রোরেল কবে চালু হবে সেটা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে জানানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের দুটি স্টেশনের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে একটি কমিটি কাজ করছে। দশ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বলা যাবে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’ এ ছাড়া মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন দুটি বাদ রেখে কবে নাগাদ মেট্রোরেল চালু করা যাবে সে বিষয়ে এখনো ঠিক হয়নি বলে জানান তিনি। 
জানা গেছে, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা ব্যাপক ভাঙচুর করেছে রাজধানীর মতিঝিল-উত্তরা রুটের মেট্রোরেল সার্ভিসের দুটি স্টেশনে। এ ছাড়া মেট্রোরেল সার্ভিস বন্ধ থাকায় প্রতিদিন আয় বন্ধ রয়েছে। এর ফলেও ক্ষতির মুখে পড়ছে মেট্রোরেল সার্ভিস। কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সহিংসতার কারণে মেট্রোরেলে সম্ভাব্য ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা।

কোটা সংস্কার আন্দোলন গত সপ্তাহে এক পর্যায়ে সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের শিকার হয়। মেট্রোরেলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছে আট সদস্যের কমিটি। মেট্রোরেলের ক্ষতি নিরূপণে অতিরিক্ত সচিব মো. জাকারিয়াকে প্রধান করে আট সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএমটিসিএলের কোম্পানি সচিব তরফদার মাহমুদুর রহমান জানান, স্টেশনের ভেতরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হবে মেট্রোরেলে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুরকারীদের। ওই কমিটির এক সদস্য জানান, এ দুই মেট্রো  স্টেশন পুনর্নির্মাণে প্রায় ৬ মাস থেকে এক বছর লেগে যাবে। সব যন্ত্রপাতি বসানোর পাশাপাশি কারিগরি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। মিরপুর-১০ স্টেশনের পুরো ই-সিস্টেম ধ্বংস হয়ে গেছে। এ সিস্টেম পুনরায় চালু করতে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা লাগতে পারে।
এ ছাড়া কাজীপাড়া স্টেশনের ৫০ শতাংশের বেশি ই-সিস্টেম নষ্ট হয়ে গেছে। এ সিস্টেম পুনরায় স্থাপন করতে প্রায় ১০০ কোটি টাকা লাগবে। আর কম্পিউটার, ডিভাইস, পাঞ্চ মেশিন, ভেন্ডিং মেশিনমহ আরও যে সব যন্ত্রাংশের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা ঠিক করতে প্রায় দুইশ’ কোটি টাকা লেগে যেতে পারে। সব মিলিয়ে মেট্রোরেলের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৫০০ কোটি টাকার বেশি।

×