ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

আম বিক্রিতে আন্দোলন-কার্ফুর ধাক্কা

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ২৫ জুলাই ২০২৪

আম বিক্রিতে আন্দোলন-কার্ফুর ধাক্কা

আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগানে এখনো গাছে গাছে ঝুলছে প্রচুর আম

আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগানে এখনো গাছে গাছে ঝুলছে প্রচুর আম। বাজারেও আমের সরবরাহ পর্যপ্ত। তবে, গেল সপ্তাহজুড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও কার্ফুর কারণে আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের মতে, বাগানে আম পুরোপুরি পুষ্ট হয়ে গেছে। সরেজমিন দেশের বৃহত্তম কানসাট আম বাজারে গিয়ে আমের প্রচুর সরবরাহ দেখা যায়। কিন্তু চলমান পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত ক্রেতা নেই।

বুধবার এই হাটে ফজলি সাড়ে তিন হাজার টাকা থেকে চার হাজার টাকা, আশ্বিনা এক হাজার ৪০০ টাকা থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা, আম্রপালি চার হাজার টাকা থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা ও বারি-৪ চার হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। প্রতি মণ আমের দাম কার্ফুর আগে ও পরে আম্রপালি পাঁচ হাজার টাকা থেকে তিন হাজার ২০০ টাকা, বারি-৪ চার হাজার টাকা থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা, ফজলি পাঁচ হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা, গৌড়মতি সাড়ে চার হাজার টাকা থেকে তিন হাজার ৬০০ টাকা ও কাটিমন পাঁচ হাজার টাকা থেকে তিন হাজার ৪০০ টাকায় নেমে এসেছে। আম চাষি ও বিক্রেতাদের অভিযোগ, শাটডাউন ও কার্ফুর প্রভাব পড়েছে আম বাজারে। এরই মধ্যে জাতভেদে মণপ্রতি আমের দাম কমেছে ৫০০ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত। 
এদিকে, মৌসুমের শেষ সময়ে গাছেই পাকছে ফজলি, আম্রপালি, আশ্বিনা ও বারি-৪ আম। এবার এমনিতেই আমের ফলন কম ছিল। মৌসুমের শুরুতে অন্য জাতের আম বিক্রিতে দাম একটু বেশি পেয়ে লোকসান কমে আসছিল। কিন্তু শেষ সময়ে নাবী জাতের আম বাজারজাত করতে না পেরে হতাশ বাগান মালিক ও উদ্যোক্তা আম চাষিরা। তাদের দাবি গত এক সপ্তাহ ধরে গাছেই পেকে, পচে ও ঝরে নষ্ট হয়েছে প্রচুর পরিমাণে আম। ফলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির কথা বলছেন বাগান মালিকরা। 

জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া এলাকার আম চাষি এরসাদ আলী বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে দেশের অন্য এলাকার ব্যবসায়ীরা তেমন আসছেন না। এতে করে আম বিক্রিও করতে পারছি না। আম তো পচনশীল পণ্য। তাই এই আম নিয়ে অনেকটা বিপাকে পড়েছি। আমরা চাই দ্রুত এর সমাধান হোক। কানসাট আম আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক টিপু বলেন, শাটডাউন ও কার্ফুর প্রভাবে যানবাহন সংকট, ব্যাংক এবং অনলাইন বন্ধ থাকায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে আম বাজারে।

আম বাজারজাতের এই সময়ে প্রতিদিন যেখানে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকার বেচা-কেনা হয় সেখানে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ৫ থেকে ৭ কোটিতে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ খাতের সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা কোনোভাবেই পূরণ সম্ভব নয়। এ অবস্থায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্বাভাবিকভাবে আম সরবরাহের দাবি জানান তিনি। 
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল আম। তাই আম নির্ভর এ জেলার অর্থনীতিকে বাঁচাতে দ্রুতই এ অবস্থার উত্তরণ চান আম সংশ্লিষ্ট সকলেই। 
চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৭ হাজার ৪০০ হেক্টর জমির বাগান থেকে সাড়ে চার লাখ মেট্রিক টন আম পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি বিভাগ।

×