ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

দোকানমালিকসহ আহত ৫ ॥ আটক ১

রাজধানীতে ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৩১, ১৫ জুলাই ২০২৪

রাজধানীতে ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি

ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি

রাজধানীর ডেমরার কোনাপাড়ায় একটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি হয়েছে। তারা স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনির হোসেনের কাছ থেকে স্বর্ণ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। ডাকাতরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে স্বর্ণ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। 
রবিবার রাত সাড়ে ১০টায় এ ঘটনা ঘটে। এতে দোকান মালিকসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন।

আহতরা হচ্ছেন- দোকান মালিক মনির হোসেন (৪২), পাশের দোকানের কর্মচারী শিহাব (৩০), আনোয়ার হোসেন (২৭), শিক্ষার্থী বাপ্পি (১৮) ও সবজি বিক্রেতা কাইয়ুম (৩০)। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 
এ বিষয়ে ওয়ারী জোনের ডিসি ইকবাল হোসাইন বলেন, আটক এক ডাকাতের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। বাকিদেরও যে কোনো সময় ধরে ফেলা হবে। তবে এরা আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের সদস্য। একজন ডাকাত ক’দিন আগে জেল থেকে বের হয়েছে। তারা মোটরসাইকেলে এসে ককটেল ফাটিয়ে গুলি ছুড়ে মালামাল লুট করে চলে যায়। একই কৌশলে তারা এর আগেও পাঁচটি ডাকাতি সংঘটিত করে। 
কোনাপাড়া-মমিনবাগ চৌরাস্তায় জনি সুপার মার্কেটের ফারদিন জুয়েলাারি দোকানে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা মো. ওহাব নামে এক ব্যক্তি জানান, জুয়েলারি দোকানটির ওই মার্কেটের ওপর তার নিজস্ব ফ্ল্যাট। রাতে জুয়েলারি দোকানের কিছুটা দূরে আড্ডা দিচ্ছিলেন তিনি। রাত সাড়ে দশটার দিকে কয়েকটি মোটরসাইকেলে চার-পাঁচজন এসে এলাকায় প্রথমে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

এরপর মনিরের দোকানে গিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং গুলি করে। আতঙ্কিত হয়ে সবাই ছোটাছুটি শুরু করেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই দুষ্কৃতকারীরা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে দোকানে গিয়ে দেখা যায়,  মালিক মনিরসহ আশপাশের দোকানদার, সবজি বিক্রেতাসহ পাঁচজন আহত হয়ে পড়ে আছেন। তখন তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ডাকাতদল পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মো. মনির হোসেনকে আটকিয়ে তার কাছে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে চাইলে তিনি চিৎকার করতে থাকেন। তার চিৎকারে পথচারীরা এগিয়ে আসলে ডাকাতদল ককটল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করার পাশাপাশি পথচারীদের গুলি ও ছুরিকাঘাত করে। ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে লোকজন জড়ো হতে থাকলে ডাকাতদল পালিয়ে যায়। এ সময় ডাকাত দলের সদস্য আল-আমিনকে (২৭) লোকজন আটক করতে সক্ষম হয় এবং গণধোলাই দেয়। 
এ ঘটনায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনিরসহ পাঁচজন গুরুতর আহত হন। আহতরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলেও মনির এখনো চিকিৎসাধীন। 
আটক আল-আমিন যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় বসবাসরত কুড়িগ্রাম সদর থানার পশ্চিম কল্যাণপুর ধুলাউড়া গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে। সেও গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। 
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর শ্যালক তানভীর সোমবার ডেমরা থানায় আটক আল-আমিনসহ ও অজ্ঞাত ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন। লুণ্ঠিত ব্যাগে ২০০ ভরি স্বর্ণ ও দুই লাখ টাকা ছিল। স্বর্ণের অনুমানিক মূল্য দুই কোটি টাকার ওপরে।  
স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনিরের খালাত ভাই মো. হুমায়ুন কবিরসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের ন্যায় মনির গণি সুপার মার্কেটে ফারহিন জুয়েলার্স নামে তার দোকান বন্ধ করে পাশের এশিয়াটিক মার্কেটের ভবনে অবস্থিত বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় অস্ত্র ও বোমাসহ ডাকাতদল মনিরের গতিরোধ করে স্বর্ণ ছিনিয়ে নিতে চাইলে তিনি চিৎকার শুরু করেন। 
এ বিষয়ে ডেমরা থানার পরিদর্শক অপারেশন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুব্রত কুমার পোদ্দার বলেন, ডাকাত ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগ ও র‌্যাব অভিযান চালাচ্ছে। 

×