ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১

বাসের অভাবে মেট্রোরেলে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:১৫, ১০ জুলাই ২০২৪

বাসের অভাবে মেট্রোরেলে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়

কোটাবিরোধী আন্দোলনের ফলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় কর্মমুখী মানুষের চাপ বাড়ে মেট্রোতে

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে বুধবার সকাল থেকে যানবাহন চলাচল ছিল বন্ধ। এর প্রভাবে উত্তরা-মতিঝিল রুটের মেট্রোরেল সার্ভিসে দেখা দেয় যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। যাত্রীদের ভিড় সামাল দিতে না পেরে বিকেলের দিকে মেট্রোস্টেশনের গেট বন্ধ করে দেয় মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। এতে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া মেট্রোস্টেশনের টিকিট কাটতে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইনে ভোগান্তি পোহাতে হয় বলে যাত্রীরা জানান। 
সরেজমিনে বিভিন্ন মেট্রোস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবরোধ থাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে মেট্রোস্টেশনে যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। টিকিট কাটতে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেকে ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে টিকিট কেটেও ভিড়ের কারণে ট্রেনে উঠতে পারেননি বলে যাত্রীরা জানান। বিকেলের দিকে যাত্রীদের চাপ আরও দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

নিয়মিত যাত্রীদের বাইরেও অনেকেই এদিন বাধ্য হয়ে মেট্রোরেল ধরতে স্টেশনে যান। দুপুরের পর থেকে স্টেশনগুলোতে চাপ এত বেড়ে যায় যে, টিকিট হাতে নিয়ে অনেকে ট্রেন পর্যন্তও পৌঁছাতে পারেননি। তাই বিভিন্ন মেট্রোস্টেশনে যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে স্টেশনের প্রবেশ গেট বন্ধ করে দেয় মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।
সচিবালয় স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা সাইদুর রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ভিড় কাকে বলে দেখেন। সেই ২টায় স্টেশনে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখন বাজে ৩টা। ট্রেন ইতোমধ্যে তিনটা চলে গেছে। আমি ট্রেন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি। সচিবালয় থেকে আগারগাঁও যাওয়ার পথে পথে অবরোধ। সেজন্য উপায়ন্তর না দেখে মেট্রোরেল ধরতে এসেছিলাম। তাতেও লাভ হলো না।’
শাহবাগ থেকে মতিঝিল এসেছেন আবিদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘শাহবাগ এলাকায় অনেক শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়েছে। কোনো গাড়ি যেতে দিচ্ছে না। সেজন্য শাহবাগ থেকে আমি মতিঝিলে এসেছি। দুপুর সাড়ে ১২টায় শাহবাগ স্টেশনে এলেও টিকিট পেতে আমার ৪৫ মিনিট লেগেছে। লম্বা লাইন। কিছু করার নেই। দুইটা ট্রেন মিস করেছি। পরে ট্রেনে কোনোমতে উঠে মতিঝিল এসেছি। ট্রেনের ভেতরে গায়ে গায়ে লাগা যাত্রীরা। ভীষণ চাপ ট্রেনের ভেতরে। কি যে অবস্থা। আমি নিজেও ট্রেনের ভেতরে কোনোভাবে দাঁড়িয়েছিলাম অনেক কষ্ট হয়েছে।’
মতিঝিলের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফরিদা কানিজ বলেন, ‘বাচ্চা নিয়ে ট্রেনের ভেতরে ভীষণ কষ্ট হয়েছে। আমি প্রায়ই মেট্রোরেলে চড়ি। কিন্তু আজকে বুঝতে পেরেছি মেট্রোরেলের কষ্ট ভীষণ। আমার বাচ্চা রাগ করে আমাকে বলেছে, আম্মু আজকে এত ভিড় কেন? চলো গাড়িতে যাই। তাকে তো বলতে পারছি না যে গাড়ির চাকা বন্ধ হয়ে আছে।’ সচিবালয় স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় ছিলেন মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা সালমান হোসেন।

তিনি বলেন, ‘বাস নাই, অনেক কষ্ট করে মেট্রোরেলের টিকিট নিয়েছি। অবস্থা এমন যে টিকিট কাটাই কঠিন। যে ভিড়, উঠতে পারব কি না চিন্তায় আছি।’ মেট্রোরেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে গিয়ে একই চিত্র দেখা যায়। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিপন মিয়া। তিনি বলেন, ‘জরুরি কাজে শ্যামলী যেতে হচ্ছে, টিকিট কাটার জন্য অনেকক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। আজকে অন্যদিনের তুলনায় অনেক ভিড়।’

×