ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১

শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে ৪ নদীর বাঁধ ভেঙে ঢলের পানিতে জনদুর্ভোগ

সংবাদদাতা, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী, শেরপুর 

প্রকাশিত: ১৮:৫৪, ৭ জুলাই ২০২৪

শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে ৪ নদীর বাঁধ ভেঙে ঢলের পানিতে জনদুর্ভোগ

পাহাড়ি ঢলে জনদুর্ভোগ

সম্প্রতি টানা বর্ষণ ও উজানের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের চাপে ভেঙে গেছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার চারটি পাহাড়ি নদীর বাঁধ। এসব ভাঙা অংশ দিয়ে প্রবল বেগে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় বেড়েছে ভাঙ্গন এলাকার মানুষের দুর্ভোগ। 

ঢলের পানিতে দুই উপজেলার নিন্মঞ্চলের মানুষের বাড়িঘরে ঢলের পানি ঢুকে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্থ হয় আমন ধানের বীজতলা ও ভেসে যায় পুকুরের মাছ। পাহাড়ি ঢলের এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলে চলেছে এখনো এই দুই উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়নি। 

জানা যায়, জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার পাহাড়ি নদী মহারশি ও সোমেশ্বরীতে প্রবল বেগে পাহাড়ি ঢল নেমে ঝিনাইগাতী সদর উপজেলা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। এছাড়া এ উপজেলার রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, ঝিনাইগাতী, চতল ও বনগাঁওসহ কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে ১৫-২০ গ্রামে  পাহাড়ি ঢলে পানি প্রবেশ করে। 

এতে প্রায় শতাধিক হেক্টর জমির আমন বীজতলা ও প্রায় ৮০টি পুকুরের মাছ বানের পানিতে ভেসে যায়। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে এসব এলাকার মানুষের।

অন্যদিকে, জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি নদী ভোগাই ও চেল্লাখালীতে প্রবল বেগে পাহাড়ি ঢল নামে। এ নদীর বাঘবেড় ইউনিয়নের সন্নাসীভিটা নয়াপাড়া এলাকায় পশ্চিম তীরে ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙে গেছে। বাঁধ ভেঙে এ গ্রামের বেশকিছু বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বানের পানিতে ২০ হেক্টর জমির আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্লাাবিত হয়ে শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পানির তোড়ে বেশ কয়েক জায়গায় বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। 

ঝিানাইগাতী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, ঝিনাইগাতী উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে এই উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ৩টি পরিবারকে ২ বান্ডেল করে ঢেউটিন ও ৬ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া এ পর্যন্ত ১০০ বন্যার্ত পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। 

নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, এই উপজেলায় এখনো পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়নি। তবে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। 
এদিকে, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী দুই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর ও মাসুদ রানা এবং নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড শেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাকিবুজ্জামান খান জানান, পাহাড়ি ঢলে জেলার চারটি নদীর বাঁধ ভেঙেছে প্রায় ৩০০ মিটার। এছাড়াও নদীর তীর উপচে ঢলের পানি প্রবেশ করেছে প্রায় ৭-৮শ মিটার এলাকা দিয়ে। যেসব এলাকায় বাঁধ ভেঙেছে সেসব এলাকায় ইতিমধ্যেই বালুর বস্তা ফেলে ভাঙ্গন নিয়ন্ত্রণের কাজ চলছে। এছাড়াও অভার ফ্লু বা বাঁধ উপচে যেসব এলাকা দিয়ে পানি প্রবেশ করছিল সেসব এলাকা দিয়ে দ্রুত এ পানি নিন্মাঞ্চলের সরে যাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুব একটা হবে না।
    

 

এবি

×