নাফ নদী
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ এখনো চলমান। শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত থেমে থেমে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তবর্তী মংডু শহরের আশপাশ থেকে ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ পাওয়া গেছে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে সীমান্ত এলাকা।
টেকনাফে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, মিয়ানমারের রাখাইনের মংডু শহরের আশপাশ থেকে মর্টার শেল ও ভারী গোলার শব্দ শোনা যায়। বিদ্রোহীরা মংডু শহর দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। মংডুর শহরের পশ্চিম সীমান্তের টেকনাফ পৌরসভা, সাবরাং ইউনিয়ন ও দক্ষিণে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অবস্থান। এ জন্যই মিয়ানমারের বিকট শব্দ ভেসে আসছে ওই সব এলাকায়।
জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শফিক মিয়া বলেন, মিয়ানমারের বোমা হামলার শব্দে টেকনাফের বসতবাড়িতে থাকা যাচ্ছে না। ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ বিকট শব্দে শুনে চমকে উঠছে শিশু ও বয়স্ক লোকজন। কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড শব্দ পাওয়া গেলেও আজ দুপুরের দিকে কয়েকটি বিকট শব্দ ছিল খুবই ভয়ংকর।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা সাড়ে তিন মাস ধরে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির লড়াই চলছে। সম্প্রতি মংডু টাউনশিপের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে দুটি শহরসহ, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৪টি সীমান্ত চৌকি, রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপের বেশ কয়েকটি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি।
মিয়ানমারের সংঘাত অব্যাহত থাকায় টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ নাফ নদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের টহল বাড়ানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সীমান্ত অনুপ্রবেশ ঠেকানোর পাশাপাশি যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবির সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, এখনো ওই পার থেকে থেমে থেমে বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যকার যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে বলে স্থানীয় ব্যাক্তির বলছেন। শনিবারেও সকাল থেকে বিষ্ফোরণে শব্দে সীমান্ত এলাকায় লোকজন স্বাভাবিক কাজে যেতে পারছেন না।
এসআর