ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৯ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১

নিরাপদ পানি ও খাদ্য সংকট

কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:২৮, ৬ জুলাই ২০২৪

কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় বন্যা  পরিস্থিতির আরও অবনতি

ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়েছে। তাই উলিপুরের সাহেবের আলগার হকের চরের মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নৌকা ও ভেলায় জিনিসপত্র নিয়ে আশ্রয়ের সন্ধানে যাচ

দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ। প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা গ্রাম। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নদ-নদীর পানি। বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরে পানি ওঠায় ইতোমধ্যে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পানি বাড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ফসলি জমিতে পানি ওঠায় নষ্ট হচ্ছে কৃষকের ফসল। খবর কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, পটুয়াখালী, সুনামগঞ্জ, নীলফামারী, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, যশোর, জামালপুর, ফেনী বগুড়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার নিজস্ব সংবাদদাতাদের।

অবিরাম বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে দুধকুমার, তিস্তা, জিঞ্জরাম, হলহলিয়াসহ ১২টি নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিন প্লাাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা এবং গ্রামের পর গ্রাম। প্লাবিত হয়ে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী ৪১টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের দুই শতাধিক গ্রাম। এতে প্রায় ৪০ হাজার পরিবারে দুই লাখ মানুষ হয়ে পড়েছে পানিবন্দি। জেলা প্রশাসনের হিসাব মতে, দুর্যোগকবলিত মানুষের সংখ্যা ৬২ হাজার।

বৃহস্পতিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৭২ সেমি চিলমারী নৌবন্দর পয়েন্ট ৭৮ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে ধরলা, তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান জানান, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি আরও ৪৮ ঘণ্টা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। ব্রহ্মপুত্রের পানি তিনটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।

গাইবান্ধা উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং অব্যাহত বৃষ্টিপাতের ফলে গাইবান্ধার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে বন্যার কবলে পড়েছে জেলার সদর, ফুলছড়ি, সাঘাটা সুন্দরগঞ্জসহ চার উপজেলা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চার উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নের অন্তত ৩০ হাজার পরিবার। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে আউশ ধান, পাট, ভুট্টা আমনের বীজতলা। তলিয়ে গেছে পুকুর মাছের ঘের। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জেলার ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, শুক্রবার সকাল ৯টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি জেলার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গাইবান্ধার সদর উপজেলার দুইটি ইউনিয়ন, সুন্দরগঞ্জের সাতটি, সাঘাটার আটটি ফুলছড়ি উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে গেছে। এই ২৪টি ইউনিয়নে পানিবন্দি ১৭ হাজার ৮২০টি পরিবার। এর মধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় দুই হাজার ১৫০টি, সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় চার হাজার ৭০০টি, সাঘাটা উপজেলায় পাঁচ হাজার ১৭০টি ফুলছড়ি উপজেলার ছয় হাজার ৮০০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরে বন্যার পানি ওঠায় ইতোমধ্যে সদর উপজেলার ১৭টি, ফুলছড়িতে ১৪টি, সাঘাটায় ২১টি সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ১১টিসহ জেলার মোট ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। ছাড়া সাতটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং তিনটি দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রমও বন্ধ ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বিভাগ।

গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক জানান, উজানের ঢলে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে ঘাঘট ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পটুয়াখালী কলাপাড়ায় শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিরামহীন ভারি বর্ষণে শহর-বন্দর-গ্রামীণ জনপদ পানিতে ডুবে গেছে। মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। কলাপাড়া পৌরশহরের চিঙ্গরিয়া, রহমতপুর, কবি নজরুল ইসলাম সড়কসহ অধিকাংশ মহল্লার বাড়িঘরে পর্যন্ত বৃষ্টির পানি প্রবেশ করেছে। মানুষের ভোগান্তি চরমে। শত শত মাছের ঘের ডুবে গেছে। ভেসে গেছে মাছ। গ্রামসহ শহরের অভ্যন্তরের পানি নেমে যাওয়া স্লুইসখাল দখল-দূষণে সরু হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি সহসা নামতে পারছে না। ভারি বর্ষণের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়ে পড়েছে। মানুষ কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। জেলা ত্রাণ পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, এখন পর্যন্ত বানভাসিদের জন্য নয় উপজেলায় ২৮২ মেট্রিক টন চাল ২১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মজুত আছে ৩৯৫ মেট্রিক টন চাল আট লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার।  যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।

সুনামগঞ্জ জেলার প্রধান নদী সুরমার পানি গত তিনদিন কমার পর আবারও বেড়েছে ষোলঘর পয়েন্টে এক সেন্টিমিটার। শুক্রবার বিকেল ৩টায় সুরমার পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বৃষ্টিপাত হয়েছে ৯৭ মিলিমিটার।

এদিকে, ‘সুনামগঞ্জে ত্রাণ চাই না, বন্যা মোকাবিলায় স্থায়ী সমাধান চাই, এই সেøাগানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিশ্বজন। শুক্রবার বেলা ১১টায় স্থানীয় আলফাত স্কয়ারে বিশ্বজন রক্তদান স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জে প্রতি বছর কয়েক দফা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হলেও বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থায়ী সমাধান নেওয়া হয় না। সুরমাসহ সকল নদ-নদী খনন করলে নদীর গভীরতা বৃদ্ধি পাবে, পানি প্রবাহ স্বাভাবিক হবে।

 

এদিকে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানি ধীরে কমায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ। জেলা শহরের কিছু কিছু জনবসতি সড়কে এখনো পানি রয়েছে। এসব আবাসিক এলাকার ঘরবাড়িতে এখনো পানি থাকায় দুর্ভোগে আছেন বানভাসিরা। গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি দ্রুত উন্নতির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড, সুনামগঞ্জ। ধীরে ধীরে পানি কমার কারণে বন্যাকবলিতরা দুর্ভোগে রয়েছেন।

নীলফামারী তিস্তা নদী অববাহিকায় বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিস্তা নদীর উজানে ওয়াইড ¯েপ্রড রেইন অর্থাৎ বেশিরভাগ এলাকায় ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সোমবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ ব্যাপকতা সামান্য কমতে পারে। ভারি বৃষ্টির জেরে তিস্তা নদীর পানির স্তর বেড়েই চলেছে। শুক্রবার সকাল থেকে গজলডোবা ব্যারাজ হতে লক গেট খুলে দিয়ে দফায় দফায় পানি ছাড়া হয়েছে। উজানের দোমহনী থেকে মেখলিগঞ্জ, বাংলাদেশের নীলফামারী জিরো পয়েন্ট কালীগঞ্জ পর্যন্ত লাল সংকেত জারি করেছে ভারত। এমন পূর্বাভাসের খবরে বাংলাদেশের নীলফামারীর ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় কমলা সংকেত জারি করা হয়েছে। খুলে রাখা হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার (৫২ দশমিক ১৫) দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। এতে তিস্তা অববাহিকার চরগ্রাম নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। 

সিরাজগঞ্জ ভারি বর্ষণ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত কয়েকদিন ধরে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ছাড়া যমুনায় পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার অভ্যন্তরীণ সকল নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। পাশাপাশি পানি বাড়ছে বিলেও। এতে প্রতিদিনই নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ফসলি জমিতে পানি ওঠায় নষ্ট হচ্ছে কৃষকের শাকসবজি, বীজতলা রোপা আমন ধানসহ বিভিন্ন ফসল। পাশাপাশি জেলার কয়েকটি অংশে যমুনার পাড়ে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন।

জামালপুর যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় জামালপুরের ইসলামপুর দেওয়ানগঞ্জ উপজেলাসহ সাতটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে জেলায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে রয়েছেন। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় শুক্রবার ভোর থেকেই রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় বন্যার পানি উঠেছে। ছাড়াও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসহ বেশ কয়েকটি সরকারি অফিসে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এতে করে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী সেবাপ্রত্যাশীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এদিকে জামালপুর জেলা ত্রাণ পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জনকণ্ঠকে জানান, জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর মাদারগঞ্জ উপজেলাসহ সাতটি উপজেলার ২২ হাজার ৬৫টি পরিবারের প্রায় এক লাখ ১৩ হাজার ৬৯০ জন মানুষ পানিবন্দিসহ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ফেনী ফুলগাজী পরশুরাম উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ফুটে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। বন্যার পানি কিছুটা নেমে গেলেও দুর্ভোগ এখনো কমেনি। কিছু কিছু এলাকায় এখনো বন্যার পানি রয়েছে। বন্যায় ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ অনেক গ্রামীণ সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে শত শত পুকুর মাছের ঘের। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নিম্ন আয়ের হতদরিদ্র, দিনমজুর প্রান্তিক কৃষক। ভারি বর্ষণের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী কহুয়া নদীর ১০টি স্থানে ভেঙে ফুলগাজী পরশুরামের ৪৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মানুষের ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ গ্রামীণ সড়ক।

মানিকগঞ্জ সাটুরিয়ায় গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন উপজেলার হাজারো খেটে খাওয়া মানুষ। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে মন্দা। মার্কেট বিপণিবিতানগুলোতে বেচাকেনা অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। টানা বৃষ্টিতে হাটবাজারের দোকানেও নেই বেচাকেনা। ছাড়াও উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। অনেক এলাকায় ফসলের ক্ষেতে হাঁটুপানি জমেছে।

যশোর কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে জেলা শহরের অনেক স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। খাল কালভার্ট দখলসহ নানা অব্যবস্থাপনার কারণে এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ শহরবাসীর। আর পৌরসভা বলছে, নগরবাসীর অসচেতনতায় বন্ধ হচ্ছে ড্রেন।

বগুড়া উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে নদীর কূল উপচে বাঁধের পূর্বদিকে দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বানভাসি এসব পরিবারের লোকজন বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ কিংবা উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যমুনা নদীর শহড়াবাড়ি ঘাট এলাকায় বিপৎসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ দশমিক ২৫ মিটার।

×