কবর।
ভোলার দৌলতখানে কবরের জায়গা না পেয়ে বসতঘরের মধ্যে দাফন করা হয়েছে জাবেদা খাতুন (৮০) নামে এক বৃদ্ধার মরদেহ। বাড়ির অংশীদারদের সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ থাকায় বৃদ্ধা নারীকে তার সন্তানরা ঘরে সমাহিত করেন।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাঠান মো: সাইদুজ্জামান শুক্রবার ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেছেন। এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের পশ্চিম জয়নগর গ্রামের সরদার বাড়িতে।
নিহতের স্বজনরা জানান, গত মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাতে জাবেদা খাতুন বার্ধক্যজনিত কারণে নিজ ঘরে মারা যান। মৃত্যুর পর বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা নিয়ে অন্য অংশীদারদের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয়। বিষয়টি স্থানীয়রা সুরাহ করতে না পেরে ৬ ঘণ্টা পর বুধবার সকালে বাড়ির উঠানে জানাজা শেষে নিজ ঘরের বারান্দায় তাকে সমাহিত করেন।
নিহতের মেয়ে লাইলি জানান, তার চাচাতো ভাই রফিকের সঙ্গে তাদের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। বিত্তশালী রফিক নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের ছাদ তাদের টিনের ঘরের ওপর তুলে দেয়। মঙ্গলবার তার মা জাবেদা খাতুন মারা যাওয়ার পর চাচাতো ভাইয়ের কাছে কবরস্থানের জায়গা চাইলে তিনি জায়গা দেননি।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) স্থানীয়দের উদ্যোগে মৃতদেহের সমাধিস্থানটি সংরক্ষণের জন্য ইট-বালি দিয়ে পাকার কাজ শুরু করেন। নিহত জাবেদা খাতুনের মেয়ে জরিনা অভিযোগ করেন, তার বাবা আবদুর রশিদ দেড় বছর আগে মারা গেলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। ওই কবরের জমির মালিকানা দাবি করে তাদের চাচাতো ভাই রফিক তার স্ত্রী বিরোধ সৃষ্টি করে।
একই সঙ্গে মুর্দারের কবরের প্রতি অসম্মানজনক কথাবার্তা বলেন। এমন অনাচার দেখে তাদের মা নিজ জমিতে তাকে দাফন করার জন্য ছেলে-মেয়েকে অছিয়ত করে যান। সে কারণেই তারা ঘরের মধ্যে মায়ের কবর দিয়েছেন।
তবে জমি বিরোধের বিষয়টি মো. রফিকের স্ত্রী তাছনুর বেগম স্বীকার করলেও তার চাচি জাবেদা খাতুনকে তাদের কবরস্থানে দাফনের অনুরোধ করেছেন বলে দাবি তাছনুর।
সরেজমিন পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাঠান মো: সাইদুজ্জামান জানান, দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ ও নিহতের অছিয়ত থাকায় পরিবার এ রকম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। তবে পরিবার রাজি থাকলে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান বলেছেন, ধর্মীয়ভাবে কোন বাঁধা না থাকলে কবরস্থানে দাফনের ব্যবস্থা করে দিবে।
এসআর