অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন সজীব।
বিয়ে বাড়িতে বরযাত্রী বেশে কনের বাড়িতে প্রবেশের সময় খুবই কৌশলের সঙ্গে অতিথিদের পকেট থেকে মোবাইল ফোন হাতিয়ে নিতো তারা। এমনভাবে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান থেকে অসংখ্য ব্যক্তি মোবাইল ফোন খুঁইয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন পোস্ট করেও রেহাই মিল ছিল না।
গত শুক্রবার(৩১ জুন) ফরিদপুরের বোয়ালমারীর সাতৈর এলাকায় জনৈক হাবিবুর রহমানের শ্যালকের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে এভাবে বেশ কয়েকজনের মোবাইল হাতিয়ে নেয়ার পরে লিখিত অভিযোগ জানানো হয় থানায়। এরপর বোয়ালমারী থানার পুলিশ এই চক্রের এক হোতাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। এর মাধ্যমে বেরিয়ে এসেছে এই অভিনব পকেটমার চক্রের সন্ধান। এই চক্রের অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গ্রেপ্তার ওই যুবকের নাম কালন শেখ ওরফে সজীব (৩৩)। তিনি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ভাকুরী গ্রামের চুন্নু শেখের ছেলে।
বোয়ালমারী থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক(এসআই) তন্ময় চক্রবর্তী এর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলামের দিক নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে মুকসুদপুর বাজার হতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিকেলে তাকে হাবিবুর রহমানের দায়েকৃত মামলায় আদালতে চালান করা হয়েছে।
তিনি জানান, বোয়ালমারীতে বেশ কয়েকটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে এই চক্রটি মোবাইল মেরে দিয়েছে। বিয়ে বাড়িতে যখন বর প্রবেশ করে, তখন খুবই কৌশলে তারা বরযাত্রীদের মোবাইল হাতিয়ে নিতো। ফেসবুকে অনেক সময় এসব ঘটনা উঠে আসতো। এর মধ্যে সর্বশেষ গত শুক্রবার হাবিবুর রহমানের শ্যালকের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে মোবাইল চুরির ঘটনাটি অভিযোগ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। সেই মামলার তদন্তে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে তার কাছ থেকে। এই চক্রে এ পর্যন্ত তিনজনের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার এই চক্রের অন্যতম হোতা কালন শেখ ওরফে সজীবকে গ্রেফতারের পর উপপরিদর্শক(এসআই) তন্ময় চক্রবর্তী গ্রেপ্তার পূর্ব অনুসন্ধান কার্যক্রমের একটি দুর্বিষহ কষ্টকর এক অভিযানের বর্ণনা তুলে ধরেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে তিনি বলেন, তিনদিন এই বৃষ্টির মধ্যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে, তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতা ছাড়াই এই মোবাইল চোরকে ধরতে সক্ষম হই।
এসআই তন্ময় লিখেছেন, আমাদের অভিযানটা অনেকটা থ্রিলিং এবং সিনেমাটিক ছিলো। সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে, ভ্যানে করে, অটোয় চড়ে, কখনো বিদ্যুৎ অফিসের লোক সেজে, কখনো কিস্তিওয়ালা সেজে আমরা চোরের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা করেছি। রাতের অভিযানে মেহগণি বাগানে কাদার মধ্যে আমি স্লিপ কেটে আছার পর্যন্ত খেয়েছি, একদম তীরে গিয়ে আসামিকে না পাওয়ার ভয়, তবুও সময় ফেরে, পরিশ্রম বৃথা যায় না। আমাদের চেষ্টা হয়তো পরম করুনাময় দেখছিলেন, তাই হয়তো তিনি সহায় ছিলেন।
অবশেষে মুকসুদপুর এলাকায় টানা এক ঘন্টা অভিযান পরিচালনা করে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই।
এসআর