ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

রাজধানীর সঙ্গে রংপুরের দূরত্ব কমবে ১৩৫ কিমি

তিস্তা সেতু এখন দৃশ্যমান

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা

প্রকাশিত: ২২:১৯, ২ জুলাই ২০২৪

তিস্তা সেতু এখন দৃশ্যমান

গাইবান্ধা-কুড়িগ্রামের তিস্তা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতু

গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। সেই চিরচেনা লঞ্চ-স্টিমার কিংবা প্রকট শব্দের শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নৌকায় বসে নয়, নয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা। শীঘ্রই চোখের পলকে পার হওয়া যাবে তিস্তা নদী। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ অংশের হরিপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রকল্প বাস্তবায়নে দিন-রাত কাজ চলছে। সেখানে সেতুর একেকটি ¯প্যান এলাকার প্রতিটি মানুষের স্বপ্ন পূরণের পথে একেকটি সিঁড়ি। নির্ধারিত ৩১টি ¯প্যানের মধ্যে বসেছে ২৮তম স্প্যান। ফলে অনেকটাই দৃশ্যমান তিস্তা সেতু।  
স্থানীয়রা জানান, সেতুটি চালু হলে কুড়িগ্রাম, উলিপুর, নাগেশ্বরী, ভূরাঙ্গামারী ও চিলমারী থেকে সড়কপথে ঢাকার দূরত্ব কমে আসবে ১৩৫ কিলোমিটারের মতো। দূরত্ব কমবে বিভাগীয় শহর রংপুরেরও। ফলে স্থানীয় জনজীবনে মিলবে কাক্সিক্ষত গতি। বহুমুখী কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে পাল্টে যাবে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা, ঘটবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
তারা আরও জানান, বর্তমানে নদীর এপার-ওপার যাতায়াত করতে নৌকায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। এ ছাড়া সিরিয়ালের জন্য বসে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সেই সঙ্গে রয়েছে রোদে পোড়া-বৃষ্টিতে ভেজাসহ নৌকাডুবিতে প্রাণ-সম্পদ হারানোর শঙ্কা। কিন্তু সেতুটি চালু হলে ১০ মিনিটে ওপার থেকে এপারে আসা-যাওয়া করা যাবে। ফলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি নদীর দু’পারের জনজীবনে মিলবে অর্থনৈতিক মুক্তি।
গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাবিউল ইসলাম জানান, সুন্দরগঞ্জ অংশের হরিপুর থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী পর্যন্ত তিস্তা নদীর ওপর নির্মাণ হচ্ছে সেতুটি, যা এলজিইডির মাধ্যমে বাস্তবায়ন দেশের প্রথম দীর্ঘতম সেতু। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪৯০ মিটার। এতে বসানো হবে সর্বমোট ৩১টি স্প্যান। যার ২৮টি বসানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, সেতুর উভয় পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে ৮৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৭৬ কিলোমিটার গাইবান্ধা অংশে। বাকিটা কুড়িগ্রাম অংশে। 
এ ছাড়া দুই তীরে স্থায়ীভাবে নদী শাসন করা হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার, যা নদীভাঙন রোধে বিশেষ অবদান রাখবে। 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। পরে নানা জটিলতা কাটিয়ে ২০২১ সালে শুরু হয় সেতুটির নির্মাণ কাজ। এটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

×