ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৪ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১

রেমালের তাণ্ডব

ফেরিঘাট এক মাসেও সংস্কার হয়নি

নিজস্ব সংবাদদাতা, শরণখোলা, বাগেরহাট

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ১ জুলাই ২০২৪

ফেরিঘাট এক মাসেও সংস্কার হয়নি

রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত রায়েন্দা ফেরিঘাট

ঘূর্ণিঝড় রেমালে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক ও গ্যাংওয়ে গত এক মাসেও সংস্কার করা হয়নি। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে বলেশ্বর নদের দুই পাড়ের হাজার হাজার যাত্রীসহ ব্যবসায়ীরা। অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে নদী পার হলেও অধিকাংশ মানুষের চলাচল ও ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে বন্ধ। স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত এ ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক ও গ্যাংওয়ে সংস্কার করে ফেরি চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন। 
শরণখোলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আজমল হোসেন মুক্তা জানান, শরণখোলার রায়েন্দা ও পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার বড় মাছুয়া ফেরিঘাট দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চলাচলের অন্যতম একটি রুট। এ ফেরি ব্যবহার করে মানুষ খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, কুয়াকাটাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে। গত ২৬ মের ঘূর্ণিঝড়ে ফেরির গ্যাংওয়ে ও সংযোগ সড়ক দুমড়ে-মুচড়ে একাকার হয়ে যায়।

রেমালের ঝড়োবাতাস ও তুফানে ভেঙে যায় রায়েন্দা ফেরিঘাটের প্রায় ১০টি দোকান। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে হাজার হাজার যাত্রী। বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, রায়েন্দা ফেরিঘাটের পন্টুন জেটি ও সংযোগ সড়ক পুননির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।

জোরারগঞ্জ-মুহুরী প্রজেক্ট সড়কের বেহাল দশা 
রাজিব মজুমদার, মীরসরাই, চট্টগ্রাম থেকে জানান, দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় টেকসই সড়ক নির্মাণের অভাবে কার্পেটিং উঠে গিয়ে মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ-মুহুরী প্রজেক্ট সড়কটির বেহাল দশা বিরাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে সড়কটি যেন এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সারা বছরই এ সড়কের বিভিন্ন অংশ খানাখন্দে ভরা থাকলেও বর্ষায় সৃষ্ট গর্তে কর্দমাক্ত হওয়ায় দৈন্যদশা থেকে মুক্তি মিলছে না এই রুটে চলাচলকারীদের। এ ছাড়াও এ সড়ক দিয়ে শত শত মাছবাহী  ছোট-বড় পরিবহন ও শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জোরারগঞ্জ-মুহুরী প্রজেক্ট ১২ কিলোমিটারের সড়কটির ৭ কিলোমিটারের অংশে ভেঙে গিয়ে ছোট-বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। সড়কের জোরারগঞ্জ বাজার থেকে পশ্চিমদিকে ইছামতি মন্দির পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়ক যাতায়াত উপযোগী থাকলেও বাকি চার কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দে ভরা। এর মধ্যে বিষুমিয়ারহাট থেকে আজমপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে রয়েছে বড় বড় গর্ত।

সড়কটি দিয়ে ছোট-বড় পিকআপ, বাস-ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, কার-মাইক্রো, স্কুলবাসসহ সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ও প্রায় ৪শ যানবাহন চলাচল রয়েছে। সড়কে সৃষ্ট কর্দমাক্ত গর্তের কারণে কোনো যানবাহনই স্বাভাবিকভাবে চলতে পারছে না। এই সড়কে চলাচলকারী সিএনজি অটোরিক্সা চালক মেহেদী হাসান বলেন, ‘সড়কটির অধিকাংশ স্থানে ছোট-বড় গর্তের কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটায় সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।’ নিয়মিত এই রুটের যাত্রী কৃষ্ণ কর্মকার ও ফিরোজ উদ্দিন বলেন, ‘কয়েক দফায় সড়কটির কিছু অংশ সংস্কার হলেও নিম্নমানের কাজে এক মাসও টেকেনি। ফলে সারা বছরই খানাখন্দক থাকায় সময় ও ভাড়া বেশি লাগে। 
উক্ত সড়কে চলাচলরত ট্রাক চালক মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘লোড গাড়ি গর্তে পড়ে অনেক সময় বিকল হয়ে যায়। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করলে আমাদের গাড়ী চালাতে সুবিধা হবে।’ চট্টগ্রাম জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘জোরারগঞ্জ-মুহুরী প্রজেক্ট সড়কসহ মুহুরী প্রজেক্ট থেকে বেডিবাঁধ হয়ে শিল্পজোনের বেজার গেট পর্যন্ত মোট প্রায় ১৮ কিলোমিটার সড়কের জন্য দরপত্র বিজ্ঞপ্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই জোরারগঞ্জ-মুহুরী প্রজেক্ট সড়কটি ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুট প্রস্থে রূপান্তরিত করে কার্পেটিংয়ের কাজ করা হবে।’

×