ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১

দুর্ভোগে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা

চট্টগ্রামে ভারি বর্ষণ  ডুবেছে নিচু  এলাকা

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস

প্রকাশিত: ০১:১১, ১ জুলাই ২০২৪

চট্টগ্রামে ভারি বর্ষণ  ডুবেছে নিচু  এলাকা

ভারি বর্ষণে ডুবে যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে শুরু হয়েছে ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ। শনিবার থেকে শুরু হওয়া এ বর্ষণ অব্যাহত থাকে রবিবারও, যা চলবে আরও বেশ কয়েকদিন। দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কারণে চট্টগ্রাম নগরীতে জীবনযাত্রায় ছন্দপতন ঘটে। মহানগরীর নিচু এলাকাগুলো ডুবে যায়, ভোগান্তিতে পড়তে হয় কর্মস্থলমুখী নাগরিক ও শিক্ষার্থীদের। বিশেষ করে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কারণ, ঘড়ির কাঁটা ধরে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ছাড়া সড়কে যানবাহন চলাচল সীমিত হয়ে পড়ায় সাধারণ যাত্রীদেরও কষ্ট সইতে হয়। 
রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত ছিল। এর আগে গত শনিবার সকাল থেকে শুরু হয় বর্ষণ, যা রাত অবধি অব্যাহত থাকে। আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অফিস জানিয়েছে, আরও অন্তত চার থেকে পাঁচদিন বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। থেমে থেমে ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হবে। অতি বৃষ্টির কারণে ঘটতে পারে পাহাড় ধসের মতো ঘটনাও। 
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, রবিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৭০ দশমিক সাত মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মৌসুমি জলবায়ু সক্রিয় রয়েছে। চট্টগ্রামসহ দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোর জন্য ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত জারি রয়েছে। মাছ ধরার নৌকাসহ ছোট ছোট জলযানগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করতে বলা হয়েছে। 
ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণে ডুবেছে চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার, কাপাসগোলা, বাদুড়তলা, মুরাদপুর, শুলকবহর, ছোটপুল, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, প্রবর্তক মোড়, তিনপুলের মাথাসহ নগরীর নিচু এলাকাগুলো। টানা বৃষ্টি হওয়ায় সড়কে পানির স্থায়ীত্বকালও হয়  দীর্ঘ। নিচু সড়কগুলো ডুবে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওই সব সড়কে রিক্সাই একমাত্র ভরসা। হাঁটু থেকে বুকপানি  ভেঙে রিক্সা চলাচল করায় যাত্রীদের ভাড়াও গুনতে হয় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। আর যান্ত্রিক যানবাহনগুলো উঁচু সড়কে উঠে পড়ায় সৃষ্টি হয় যানজটের। 
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, প্রবল বর্ষণের কারণে বন্দর বহির্নোঙ্গরে মাদার ভেসেল থেকে পণ্য লাইটারিং ব্যাহত হয়। বাতাস বেশি এবং ঢেউ বড় হওয়ায় ছোট লাইটারেজ জাহাজগুলোকে পড়তে হয় কিছুটা বিপাকে। আবহাওয়া বৈরী থাকায় অভ্যন্তরীণ জনপথে পণ্য পরিবহনেও ঘটে বিঘœ। তবে জেটিতে কন্টেনার ওঠা-নামা স্বাভাবিক রয়েছে। আবহাওয়া প্রতিকূূল থাকায় ইয়ার্ড থেকে পণ্য ডেলিভারি স্বাভাবিক দিনের চেয়ে কিছুটা কম হয়েছে। 
ভোগান্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা ॥ আষাঢ়ের বৃষ্টির মধ্যেই রবিবার শুরু হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষা। প্রথম পরীক্ষাতেই ভোগান্তির মধ্যে পড়ে যায় শিক্ষার্থীরা। সকালে ঘর থেকে বের হওয়াই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। অনেক এলাকায় হাঁটুপানি মাড়িয়ে কেন্দ্রে যেতে হয় ছাত্রছাত্রীদের। বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত থাকায় ভীতি ছিল বেশি। 
এইচএসসি পরীক্ষা সাধারণত শুকনা মৌসুমেই হয়ে আসছিল। কিন্তু মহামারি করোনার সময় থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাসূচিতে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে যায়। এবার পরীক্ষা পড়েছে বর্ষাকালে। শিক্ষার্থীদের তাই বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের দাবি, পর্যায়ক্রমে এই পরীক্ষা আগের মতো মার্চ-এপ্রিলে নিয়ে আসা হোক। 
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিযন্ত্রক প্রফেসর এএমএম মুজিবুর রহমান জানান, আবহাওয়াজনিত প্রতিকূলতা থাকলেও যথানিয়মে এইচএসসির প্রথম দিনের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষাকেন্দ্রে সময়মতো যেতে পেরেছে। তাই পরীক্ষাও শুরু করা সম্ভব হয়েছে নির্ধারিত সময়মতোই। বর্ষণের কারণে কোনো পরীক্ষার্থী হলে যেতে পারেনি, এমন কোনো তথ্য নেই। তবে শিক্ষা বোর্ড এ বিষয়ে সজাগ ছিল। 

×