ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১

মঠবাড়িয়ায় আশ্রয়ণের অনেক ঘরে তালা

​​​​​​​নিজস্ব সংবাদদাতা, মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর

প্রকাশিত: ২১:৫৩, ৩০ জুন ২০২৪

মঠবাড়িয়ায় আশ্রয়ণের  অনেক ঘরে তালা

.

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ) উপলক্ষে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভূমিহীন গৃহহীন পরিবারকে দেওয়া ৮৩০ ঘরের মধ্যে অনেক ঘরেই উপকারভোগীর বসবাস নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব উপকারভোগী পরিবারগুলোর আশ্রয়ণের নির্দিষ্ট বরাদ্দকৃত ঘরে ঝুলছে তালা। গত শুক্রবার থেকে উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো সরেজমিনে ঘুরে এমনটাই চোখে পড়েছে। অবস্থার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভূমিহীন গৃহহীন পরিবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে যাচাই বাছাই না করতে পারার অভিযোগও করছেন অনেকে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখালি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৬৬টি ঘরের মধ্যে প্রায় ২০টি ঘরেই তালা ঝুলছে। একই ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৩৩ ঘর থাকলেও প্রায় ১৩টি ঘরেই তালা ঝুলছে। এছাড়া অন্য ইউনিয়নগুলোতেও ঘুরে দেখা গেছে বরাদ্দকৃত ঘর নিয়ে দখল করে তালা ঝুলিয়ে সেখান থেকে গিয়ে অন্যত্র থাকছেন। কেউ ১০ থেকে ১৫ দিন, কেউবা আবার থেকে মাস থেকেই অবস্থান মজবুত করে ঘরে তালা ঝুলিয়ে চলে গেছেন। আবার কোনো কোনো উপকারভোগী তাদের বরাদ্দকৃত ঘর বিক্রি করে অন্যত্র চলে গেছেন এমন অভিযোগও রয়েছে এলাকাবাসীর। পরিত্যক্ত ঘরে অনেককে আবার পশু (ছাগল) পালন করতেও দেখা গেছে।

উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের সোনাখালী আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালাবদ্ধ কয়েকটি ঘরের নাম্বার উল্লেখ করা হলো, , ১১, ১৩, ২১, ২৩, ৩৮, ৫৬, ৬০, ৬৪, ৬৬নং ঘর। এবং একই ইউনিয়নের গোলবুনিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালাবদ্ধ ঘর নং-, , ১১, ১৪, ১৯, ২১, ২৬, ২৭, ২৮নং ঘর।

জানা গেছে, প্রতিটি ঘর প্রথম পর্যায়ে লাখ ৭১ হাজার, দ্বিতীয় পর্যায়ে লাখ ৯১ হাজার, তৃতীয় চতুর্থ পর্যায়ে প্রায় লাখ ৪৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ভূমিহীন গৃহহীন পরিবারের জন্য এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হয়। আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখালি আশ্রয়ণে আশ্রিত একাধিক বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রকল্পের ২১ নম্বর ঘরটির মালিক ইউনিয়নের পরশুরিয়া গ্রামের ইব্রাহিমের। তিনি ঘর বুঝে পাওয়ার এক বছরের অধিক সময়ে একদিনও এখানে বসবাস করেনি। দীর্ঘদিন ধরেই তার ঘরে তালা ঝুলছে। নম্বর ঘরটির মালিক মিরাজ হোসেন। তার বাড়ি দক্ষিণ সোনাখালি এলাকায়। ঘর বুঝে পাওয়ার পর কয়েকদিন থাকলেও বর্তমানে তিনি নিজ গ্রামে সপরিবারে বসবাস করছেন। রকম আরও অনেক পরিবার রয়েছেন যারা ঘর পাওয়ার পরে চলে গেছেন। মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন তালুকদার জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পে কিছু সমস্যা আমাদের নজরে এসেছে। প্রকল্পের যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সমস্যাগুলো নিয়ে পর্যায়ক্রমে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল কাইয়ূম জানান, সমস্ত উপকারভোগীকেই যাচাই-বাছাইয়ের কয়েকটি ধাপ পার করেই শর্ত সাপেক্ষে গৃহের দলিলসহ কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা যতটুকু খোঁজখবর নিয়েছি, এখানে তো কাজের জায়গা নেই। তাই এরা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে দিনমজুর হিসেবে কাজ করে। অনেকে আছেন অনুমতি নিয়ে তারপরে গিয়েছেন। অনেক জায়গায় রয়েছেন বাবার পরিবর্তে ছেলে থাকেন।

×