ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০২ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১

কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়ক বেহাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ২৯ জুন ২০২৪

কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়ক বেহাল

কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কের পাখিমারা স্পটে খানাখন্দ

এখন আর যানবাহন চলাচলের উপযোগী নেই সড়কটির ১১ কিলোমিটার অংশ। কত হাজার খানা-খন্দ হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। বড় বড় হাঁটুসমান গর্তে পড়ছে বিভিন্ন ধরনের থ্রি-হুইলার। বাস চলাচল পর্যন্ত বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এক কথায় খানা-খন্দে একাকার। বলছিলাম কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কের পাখিমারা বাজার থেকে আলীপুর টোল ঘরের থ্রি-পয়েন্ট পর্যন্ত সড়কে বেহাল দশার চালচিত্র।

বর্তমানে সড়কটি সম্পূর্ণভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে  পড়েছে। প্রতিনিয়ত থ্রি-হুইলার যানবাহন উল্টে পড়ছে। ঘটছে দুর্ঘটনা। আহত হচ্ছেন যাত্রীরা। পর্যটকসহ সাধারণ মানুষ পড়েছেন বিপদে। বিশেষ করে পাখিমারা এবং শেখ রাসেল সেতুর টোল পয়েন্টের সামনের অংশে যানবাহন চলাচল বন্ধের উপক্রম হয়েছে।
জানা গেছে, ২০০৯-২০১৪ অর্থবছরে এ সড়কের পাখিমারা থেকে শেখ রাসেল সেতু পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার অংশের উন্নয়ন কাজ করে ‘রূপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তখন ব্যয় বরাদ্দ ছিল ২০ কোটি টাকা। ওই কাজ মানসম্মত না হওয়ায় তখন ঠিকাদারের বিল আটকে দেয় সওজ কর্তৃপক্ষ। প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে এ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে দুটি দল তদন্ত করেন। তদন্তকারী দলের পক্ষ থেকেও কাজের গুণগত মান ভালো হয়নি বলে প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

নিম্নমানের কাজ করায় সওজ বিভাগ আট কোটি টাকার বিল আটকে দেয়। পরিশোধ করে ১২ কোটি টাকা। এর প্রেক্ষিতে রূপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড এর প্রতিনিধি রাশেদুল ইসলাম চূড়ান্ত বিল দাবি করে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। আদালত মামলার প্রেক্ষিতে ১১ কিমি সড়কের ওপর সংস্কার কাজে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। যার ফলে গত ৯ বছর ধরে পূর্ণাঙ্গ সংস্কারবিহীন সড়কটির এ অংশ। সম্প্রতি হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সড়কটি টেন্ডার দিয়ে সংস্কারের বাধা অপসারণ হয়। সড়ক ও জনপথ পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিকুল্লাহ জানান, কলাপাড়া-পটুয়াখালী ২২ কিলোমিটার সড়কের খারাপ ১১ কিলোমিটার পূর্ণাঙ্গভাবে সংস্কারের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আগামী দুই-এক মাসের মধ্যে সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন তিনি।
 
কেন্দুয়া-মদন সড়কে ভোগান্তি 
নিজস্ব সংবাদদাতা, কেন্দুয়া, নেত্রকোনা থেকে জানান, কেন্দুয়া-মদন পাকা সড়কের কেন্দুয়া পৌর শহরের সাউদপাড়া মোড় থেকে জামতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। এতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। সড়কটির ওই এক কিলোমিটারজুড়ে বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এসব খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে ধীরে ধীরে গর্তগুলো আরও বড় আকার ধারণ করছে এবং গর্তে জমে থাকা ময়লা পানি সাধারণ পথচারীসহ যাত্রী ও যানবাহন চালকদের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শনিবার দুপুরে ওই এক কিলোমিটার সড়ক ঘুরে পথচারী, যাত্রী ও বিভিন্ন যানবাহন চালকের ভোগান্তির চিত্র দেখা গেছে।

জানা গেছে, এ সড়ক দিয়ে স্থানীয় লোকজন ছাড়াও হাওড় এলাকা খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলার শত শত মানুষ ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন এবং হাওড়াঞ্চলের কৃষকদের উৎপাদিত ধান, পাটসহ বিভিন্ন পণ্য দেশের অন্যান্য এলাকায় সরবরাহ করেন। কিন্তু সড়কটির কেন্দুয়া পৌরসভা অংশে এক কিলোমিটারজুড়ে খানাখন্দের কারণে সংশ্লিষ্টদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এ সড়কে নিয়মিত অটোরিক্সা (ইজিবাইক) চালক জিয়াউর রহমান বলেন, রাস্তাটার অবস্থা খুব খারাপ। যাত্রী নিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন। গর্তে পড়ে গাড়ি হেলেদুলে প্রায় সময়ই উল্টে যায়। আমাদের গাড়িরও ক্ষতি হচ্ছে। রাস্তাটা তাড়াতাড়ি মেরামত করা না হলে চলাচল করাই দুরূহ হয়ে যাবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী আল আমিন সরকার বলেন, সড়কটির অবস্থা খুব খারাপ। পুরো উপজেলায় এরকম আরও কয়েকটি সড়ক রয়েছে।

কিন্তু ফান্ড স্বল্পতার কারণে সবগুলো রাস্তার সংস্কার কাজ একসঙ্গে করা সম্ভব নয়। তবে আমরা সংস্কারযোগ্য সড়ক মেরামতের জন্য বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। এরমধ্যে কেন্দুয়া-মদন সড়কটির সংস্কার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খুব তাড়াতাড়ি করা হবে।

টাঙ্গাইলে ব্রিজ যেন মরণফাঁদ
নিজস্ব সংবাদদাতা টাঙ্গাইল থেকে জানান, সদর উপজেলার বাণিজ্যিক এলাকা করটিয়ার ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের লোহার ব্রিজটি কালের পরিক্রমায় মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে গুরত্বপূর্ণ এই ব্রিজটি।
জানা গেছে, বিগত ১৯৫২ সালে তৎকালীন ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের করটিয়ায় সা’দত কলেজের পূর্ব-উত্তরপাশে লৌহজং নদী প্রকাশ সুন্দরী খালের ওপর লোহার ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। স্বাধীনতার ৫২ বছরেও এই ব্রিজটির কোনো ধরনের সংস্কার না করায় বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।

বিশেষ করে সপ্তাহের মঙ্গলবার ও বুধবার এই ব্রিজটির ওপর যানবাহনের প্রচ- চাপ থাকে। হাটে আসা মহাজন ও স্থানীয়দের আশঙ্কা দ্রুত সংস্কার না করলে যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা, ঘটতে পারে প্রাণহানি।
আবেদা খানম গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা আশা আক্তার ও সা’দত কলেজের অনার্সপড়ুয়া শিক্ষার্থী নুরে আলম, জামিলুর রহমান, সুভাষ দত্ত, কবীর হোসেন, ছালেহা আক্তার, নুরজাহান বেগম বলেন, প্রতিদিন এই ব্রিজটির ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। পারাপারকালে ভারী যানবাহন ব্রিজের ওপর উঠলে মনে হয় এই বুঝি ব্রিজটি ভেঙে পড়ল।

তাই স্থানীয় সংসদ সদস্য, টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে জোর দাবি, যত দ্রুত সম্ভব এই মেয়াদ উত্তীর্ণ ব্রিজটি ভেঙে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণ করা হোক। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমেরী খানকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

চাটখিলে সড়কে খানাখন্দ 
নিজস্ব সংবাদদাতা চাটখিল, নোয়াখালী থেকে জানান, চাটখিল-খিলপাড়া মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ বেগ সড়কের বেহাল অবস্থা। ৭ কিমি সড়কের চাটখিল দক্ষিণ বাজার থেকে খিলপাড়া বাজার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ কিমি সড়ক খানাখন্দে ভরা। সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তাটির অনেক স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। রাস্তার দুইপাশের মাটি সরে রাস্তা ভেঙে পড়ছে। যানবাহন চলাচলের উপযোগী না হলেও মানুষজনকে প্রয়োজনের তাগিদে ঝুঁকি ও ভোগান্তির মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হয়।

প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের হাজার-হাজার শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের চলাচল করতে হয়। চলাচলের মাধ্যম হিসেবে সিএনজি, অটো রিক্সা, হোন্ডা দিয়ে চলাচল করতে হয়। ছোট-বড় দুর্ঘটনা সড়কটির নিত্যসঙ্গী। 
সড়ক ও জনপথ নোয়াখালী (সড়ক বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সড়কটি সংস্কারের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানালেও কবে নাগাদ সড়কটির দরপত্র আহ্বান করা হবে কিংবা সংস্কার কাজ প্রক্রিয়াধীনের অগ্রগতি কতটুকু সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত কিছু বলতে পারেননি।
  
নওগাঁয় লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া 
নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, এলজিইডির আওতায় রাণীনগর ও সদর উপজেলার মধ্যে সংযোগকারী একমাত্র গ্রামীণ মেঠোপথে এখনো ইটের কোন ছোঁয়া লাগেনি। শুষ্ক মৌসুমে যাতায়াত করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে ভোগান্তির শেষ থাকে না। দুই উপজেলার দুটি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের প্রতিনিয়তই দুর্ভোগের মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে। এমন জনগুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ মেঠোপথে দ্রুত ইটের ছোঁয়া চান স্থানীয় বাসিন্দারা। জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার বিলবেষ্টিত ইউনিয়ন মিরাট।

এখনো এই ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামীণ রাস্তায় লাগেনি আধুনিকতার ছোঁয়া।  সদর উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন বলেন, যখন যে বরাদ্দ আসে সেই বরাদ্দ দিয়ে আমরা সাধ্যমতো গ্রামীণ রাস্তাগুলোর আধুনিকায়নের কাজ করে আসছি। নামা শিকারপুর গ্রামের এই রাস্তায় ইতোমধ্যেই মাটি কাটা হয়েছে। ইট বিছানো/পাকার জন্য আবেদন দেওয়া হয়েছে। 
অর্থ বরাদ্দ পেলেই  রাস্তাটিকে আধুনিকায়ন করার কার্যক্রম শুরু করা হবে। রাণীনগর উপজেলা প্রকৌশলী ইসমাইল হোসেন বলেন, ইতোমধ্যেই রাস্তার রাণীনগর উপজেলার অংশে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে নতুন করে মাটি কাটা হয়েছে। দ্রুতই সরেজমিনে পরিদর্শন করে রাস্তার আধুনিকায়নের জন্য যাবতীয় কার্যক্রম শুরু করা হবে।

×