ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

বাড়তি দামে বেজার ক্রেতা

এবার রাজশাহী অঞ্চলে আমের দাম বেশি, কৃষক খুশি

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী

প্রকাশিত: ২১:২৯, ২৬ জুন ২০২৪

এবার রাজশাহী অঞ্চলে আমের দাম বেশি, কৃষক খুশি

রাজশাহী অঞ্চলে এবার আমের বাজারে দাম বেড়েছে গত বছরের দ্বিগুণ

রাজশাহী অঞ্চলে এবার আমের বাজারে দাম বেড়েছে গত বছরের দ্বিগুণ। জাত আম হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালি, ফজলিসহ কোনো জাতের আমই মিলছে না প্রতি কেজি ১২০ টাকার নিচে। ভালো মানের হলে খুচরায় গুনতে হচ্ছে আরও বেশি।
এবার আম প্যাকেজিং ও উড়োজাহাজ ভাড়াও বাড়তি। দেশে চড়া দামের কারণে মুনাফা কমেছে রপ্তানিকারকদের। দাম দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা খুশি হলেও বেজার ক্রেতারা। এ বছর আমের দাম বাড়ার বিষয়টি উঠে এসেছে সরকারি কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যেও। 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর জুনে রাজশাহীর মোকামে পাইকারিতে প্রতি কেজি হিমসাগর আমের দাম ছিল ৪১ টাকা। এ বছর তা ৭৯ টাকা ৩২ পয়সা। প্রতি কেজি ল্যাংড়ার দাম ৩৯ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা ৮৬ পয়সা এবং গত বছরের ৪৩ টাকা কেজির আম্রপালি এবার পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৭২ টাকা ৫৮ পয়সায়।
রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের মোকাম বানেশ্বর হাটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার দাম গত বছরের দ্বিগুণ। বিশেষ করে ঈদের পরে মোকামে লাফিয়ে বাড়ছে আমের দাম। যেখানে ভরা মৌসুমে আমের দাম কমার কথা ছিল, সেখানে ঈদের আগে-পরে মোকামে আমের দাম বেড়েছে মণে প্রায় এক হাজার টাকা।
পাইকারি ব্যবসায়ীর পাশাপাশি আম উৎপাদনকারী, ক্রেতা ও গবেষকরা বলছেন, প্রধানত এবার আমের উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেশি। দীর্ঘ শীতের কারণে আমের মুকুল আসতে দেরি হয়েছে। এরপর এপ্রিলে শুরু হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। এতে মুকুল-আমের গুটি ঝরে যায় বিভিন্ন এলাকায়। শেষে এবার শিলাবৃষ্টি ও ঝড় না হওয়ায় যতটুকু আম ছিল, তা আছে। সব মিলিয়ে আমের ফলন গত মৌসুমের চেয়ে অনেক কম।

রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, গত বছরের চেয়ে এ বছর ফলন ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কম হয়েছে। তবে বাগান মালিকরা বলছেন, ফলন কমেছে এক-তৃতীয়াংশের বেশি। এ ছাড়া দেরিতে মুকুল আসা, অনাবৃষ্টির কারণে উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে। রাজশাহীর আম রপ্তানিকারক ও চাষিরা বলছেন  ‘তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে সেচ দিতে বিঘাপ্রতি খরচ গতবারের চেয়ে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা বেশি লেগেছে। সারের দামসহ অন্য কৃষি উপকরণের দামও বেড়েছে।

এ ছাড়া সার্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে কম দামে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। কম উৎপাদন ও বেশি খরচের কারণে আমের দাম বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা  বলছেন, প্রতি বছর উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও এবার আমের উৎপাদন কমেছে। এ কারণে দাম বেড়েছে। গত কয়েক বছর উৎপাদন বাড়ায় আম রপ্তানিতে ভালো করছে বাংলাদেশ। এ বছরও আম রপ্তানি শুরু হয়েছে ঈদের আগে থেকেই। এবার রাজশাহী থেকে ইংল্যান্ড, জার্মানি, ইতালি ও ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে গোপালভোগ, হিমসাগর, আম্রপালি, ফজলি, সুরমা ফজলি, বারি-৪ জাতের আম যাচ্ছে।

গত বছর বিশ্বের ৩৮টি দেশে ৩ হাজার ৯২ টন আম রপ্তানি করা হয়েছিল। এবার দেশে আমের বেশি দামের কারণে রপ্তানিতেও সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় রপ্তানিকারকরা। তথ্য বলছে, গত বছর এ সময় যেভাবে আমের রপ্তানি হতো, এবার এখন পর্যন্ত তেমন হচ্ছে না।

×