ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

রেমালের আঘাত

সড়কসহ গ্রামীণ রাস্তাঘাট মেরামত শুরু হয়নি

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২২:২৮, ২৪ জুন ২০২৪

সড়কসহ গ্রামীণ রাস্তাঘাট মেরামত শুরু হয়নি

রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ সড়ক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে জেলায় গ্রামীণ সড়কসহ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি)র ৭৭২ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও ৭৭৫ মিটার সেতু ও কালভার্টের সংযোগ সড়ক, ১০টি জলকপট, ১০টি বিদ্যালয়ের অবকাঠামো  ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতের এক মাস পেরিয়ে গেলেও জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ সড়কসহ অবকাঠামো মেরামত শুরু হয়নি। ফলে জনদুর্ভোগে রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। গত ২৬ মে রাতে ঘূর্ণিঝড় রেমাল উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে।

সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের বলইকাঠি গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে যাওয়ার বাঁধের ওপর এলজিইডির ইট বিছানো সড়কও বিলীন হয়ে গেছে। পাউবো মাটি দিয়ে বাঁধ মেরামত করলেও এলজিইডি সড়কের ওপর ইট বিছানোর কাজটি করেনি। এখন বর্ষা মৌসুমে মাটি কাদায় চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। 
একই উপজেলার জৈনকাঠী ইউনিয়নের লোহালিয়া নদীর তীরবর্তী জৈনকাঠী গ্রামের এলজিইডি পাকা সড়কটি কয়েক স্থানে ভেঙে যাওয়ায় এখন যোগাযোগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের গলাচিপা-গজালিয়া সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাবনাবাদ নদীর ¯্রােতে তেঁতুলতলা এলাকার সড়কের একটি অংশ নদীতে ধসে পড়েছে। 
একই উপজেলা সড়কের সঙ্গে চর বিশ^াস ইউনিয়ন পরিষদে যাতায়াতের সড়কটি ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বুড়াগৌড়াঙ্গ নদীর তীরবর্তী হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় রেমালে বেড়িবাঁধের ওপর নির্মিত গ্রামীণ পাকা ও কাঁচা সড়ক কয়েকটি স্থানে ভেঙে গেছে।
এসব এলকার বাসিন্দারা জানান, তাদের  ইউনিয়ন থেকে গলাচিপা উপজেলা শহরে সড়ক পথে যোগাযোগের প্রধান সড়ক এটি। এই সড়ক দিয়ে ভাড়ায় মোটরসাইকেল অথবা ছোট ইজিবাইক ও টমটমে তারা যাতায়াত করে আসছিল। কিন্তু গ্রামীণ এই সড়ক বিধ্বস্ত হওয়ায় তারা দুর্ভোগে পড়েছে। এখন ঝুঁকি নিয়ে তাদের চলাচল করতে হচ্ছে। 

চর বিশ্বাস ইউপির চেয়ারম্যান তোফায়েল হোসেন বাবুল মুন্সী বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে আমার ইউনিয়নে কমপক্ষে ২৫ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক, কয়েকটি সেতু ও সেতুর সংযোগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে স্থানীয় লোকজন যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ সড়ক দ্রুত মেরামত বা সংস্কার করা দরকার।
পটুয়াখালী এলজিইডির সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী জেলায় এলজিইডির মোট সড়ক রয়েছে ১২ হাজার ৩৩৮ দশমিক ৩০ কিলোমিটার। এর মধ্যে পাকা সড়ক ৩ হাজার ১১৪ দশমিক ৪০ কিলোমিটার।

ঘূর্ণিঝড় রেমালে ৪৮৯ দশমিক ১৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক ও ২৮৩ দশমিক ২০ কিলোমিটার কাঁচা সড়কসহ মোট ৭৭২ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও ৭৭৫ মিটার সেতু ও কালভার্টের সংযোগ সড়ক, ১০টি জলকপাট ও ১০টি বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৩৬৫ কোটি ২০ লাখ টাকা নিরূপণ করা হয়েছে।  
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী লতিফ হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালে পটুয়াখালীর গ্রামীণ সড়ক, সেতু ও সেতুর সংযোগ সড়ক, কালভার্ট, স্কুল ভবনের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ ৩৬৫ কোটি ২০ লাখ টাকা নিরূপণ করে প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে পাঠানো  হয়েছে। বরাদ্দ পেলে এসব ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ অবকাঠামো মেরামত বা সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।

×