ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

কৃষিতে বিঘ্ন

প্রকাশিত: ০১:১৬, ২১ জুন ২০২৪

কৃষিতে বিঘ্ন

সারাদেশের মতো কুড়িগ্রামেও এবার বয়ে গেছে দাবদাহ

সারাদেশের মতো কুড়িগ্রামেও এবার বয়ে গেছে দাবদাহ। এতে এ অঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। গড়ে এ অঞ্চলে ৩৭ ডিগ্রি থেকে ৩৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা ওঠা-নামা করেছিল। এবারের গরম অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। সম্প্রতি দেশের তাপমাত্রার স্কেল ছড়িয়েছে সৌদি আরবকেও। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকার কারণে মানুষ বেশি ঘামছিল। এই সময়ে পশ্চিমা লঘুচাপ কম হওয়ায় বৃষ্টিপাতও কম হয়েছে। কালবৈশাখী ও বৃষ্টিপাত না থাকায় এবার গরমের তীব্রতা বেশি কুড়িগ্রামসহ সারাদেশে।

আবহাওয়া বিশেষঞ্জরা বলছেন, পশ্চিমা ঝঞ্ঝার কারণে যে ঝড় ভূমধ্যসাগর থেকে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের ওপর দিয়ে এসে বঙ্গোপসার থেকে আসা জলীয় বাষ্পের সঙ্গে মিশে বজ্র ঝড় সৃষ্টি করে। সেটি পুঞ্জীভূত না হয়ে অন্যদিকে চলে গেছে। এ কারণে এবার সারাদেশে বৃষ্টি কম হয়েছে। পড়েছে প্রচুর গরম।
কুড়িগ্রাম হচ্ছে কৃষিপ্রধান অঞ্চল। প্রচ- দাপদাহের সময়ে ধান ও ভুট্টার কাটা-মাড়াই চলছিল। এ সময়ে শ্রমজীবী মানুষরা পড়েছিল চরম বিপাকে। তারা ধান কাটা-মাড়াইয়ের সময় দীর্ঘক্ষণ জমিতে থাকতে পারেননি। অনেক শ্রমজীবী মানুষ জমিতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। এ ছাড়া অধিক গরমের কারণে ধানের খেতে হিটশক হয়েছিল।

আবহওয়াবিদরা বলেছেন, তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি বেশি হলে এবং সেই সময় বৃষ্টি না হলে ধান খেতে হিটশকের আশঙ্কা দেখা দেয়। কুড়িগ্রাম অঞ্চলে অনেক ধানখেতে হিটশক হয়েছিল। যার ফলে এবার ধানের ফলন ভালো হলেও প্রচুর চিটা হয়েছে। বেলগাছা ইউনিয়নের কৃষক সৈয়দ আলী, রাজেন রায় জানান, তাদের ধানের ফলন ভালো হলেও ধানে প্রচুর চিটা হয়েছে। এতে চাহিদা অনুযায়ী ঘরে ধান তুলতে পারেননি। আবাদের খরচ বেশি হওয়ায় এবার ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে তাদের। ভিতরবন্ধ ইনিয়নের মাঠেরপার গ্রামের কৃষক আবদুল মালেক, মেসের আলী জানান, প্রচ- দাবদাহের মধ্যে তারা ধানের আবাদ করেছিলেন। ওই সময় বৃষ্টি না হওয়ায় পর্যাপ্ত পানি দিতে হয়েছিল জমিতে। এতে খরচ অনেক বেশি পড়েছিল। 
অন্যদিকে, প্রচ- গরমের কারণে জেলার মুরগি খামারিরা চরম বিপাকে পড়েছিলেন। জেলায় হাজার হাজার মুরগির বাচ্চা গরমে মারা গিয়েছিল। যার প্রভাব ইতোমধ্যে বাজারে পড়তে শুরু করেছে। প্রতিটি মুরগি অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির খাদ্য ব্যবসায়ী  মো. রোস্তম আলী জানান, গরমের কারণে অনেক ছোট খামারি নিঃস্ব হয়ে গেছেন। এখন তারা বেঁচে থাকার জন্য অন্য পেশা খুঁজছেন।
গরমের দিনগুলোতে কুড়িগ্রামের ২শ’ ৫০ শয্যা হাসপাতালে হিটস্ট্রোকসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন অনেক মানুষ। বিশেষ করে ডায়রিয়ায় প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন এ সময়। কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. শাহিনুর রহমান জানান, তাপপ্রবাহের দিনগুলোতে হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৪শ’ থেকে ৫শ’ মানুষ গরমে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিতে আসতেন। আমরা হাসপাতালের ডাক্তার-নার্স তাদের সাধ্য অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, গত এক দশকে তিনি গরমের কারণে এত মানুষ অসুস্থ হতে পারে, তা কল্পনাও করতে পারেননি। এ সময় বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছিলেন সাধারণ মানুষকে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা আবদুল্লা আল মামুন জানান, কুড়িগ্রাম একটি কৃষিপ্রধান অঞ্চল। জলবায়ুর ব্যাপক প্রভাব পড়ে এ অঞ্চলের কৃষির ওপর। এবারের তাপপ্রবাহের কারণে অনেক ধানখেতে হিটশক হয়েছিল। বিশেষ করে যে ধানখেত দেরিতে লাগানো হয়েছিল, সেই খেতগুলোর ক্ষতি হয়েছে বেশি। এ সব খেতের ধান চিটা হয়েছিল। তবে ওই সময় কৃষকের জমিতে তিনÑচার ঘণ্টা পানি দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কারণ ধানগাছগুলো উচ্চ তাপমাত্রা থেকে বাঁচার জন্য কুলিং সিস্টেম তৈরি করে। মাঠে পানি থাকলে সেটা ব্যবহার করে উদ্ভিদটি নিজের তাপমাত্রা তিন-চার ডিগ্রি কমিয়ে রাখার চেষ্টা করে। 
রাজু মোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম

ঘরে বাইরে অস্বস্তি

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষ। বলা যায়, জনজীবন বিপর্যস্ত। গরমে অল্পতেই মানুষের শরীর থেকে প্রচ- ঘাম ঝরছে। একেবারে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। কর্মের তাগিদে বাইরে বের হলেও কাজ শেষে দ্রুত ঘরে চলে যাচ্ছেন। প্রচ- গরমে মানুষ কর্মক্ষমতা হারাচ্ছেন। অনেকেই নিদিষ্ট সময় পর্যন্ত কাজ করতে পারছেন না। একটু সুযোগ পেলেই গাছতলায় কিংবা ছায়ায় বসে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন। এদিকে প্রচ- গরমে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া দিনমুজুররা।

গরমে অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হয়। বেড়ে যায় তাপমাত্রা। এ পরিস্থিতিতে হিটস্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা থাকে, বিশেষ করে যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ, যাদের হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের। এ ছাড়া ঊষ্ণ আবহাওয়ার কারণে সর্দিজ্বর এবং ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হয় মানুষ।
গরমে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে শিশু, বেশি বয়স্ক ব্যক্তি এবং দরিদ্র তথা অপুষ্ট জনগোষ্ঠীর। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই তীব্র গরমে শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট সবচেয়ে বেশি। তারা রোদে পুড়ে, ঘাম ঝরিয়ে শ্রমের বিনিময়ে যে টাকা রোজগার করেন, তা দিয়েই তাদের পরিবার-পরিজনের জীবিকানির্বাহ করতে হয়। আর এ সময় তাদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই নিজেদের বিষয়ে সতর্ক থাকার পাশাপাশি প্রত্যেক সামর্থ্যবানের উচিতÑ এই তীব্র গরমে শ্রমজীবী মানুষকে সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখা, তাদের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেওয়া।
সারাদেশের মতো সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় তীব্র দাবদাহ বিরাজ করছে। এতে মানুষের জীবনযাপনও অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। এ গরমে গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছে খামারি ও কৃষক। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে খামারি ও প্রান্তিক কৃষক গরু মোটাতাজা করেছেন। প্রচ- গরম ও দাবদাহে এসব গরু অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠছে। খামারিরা গরুর স্ট্রোকের শঙ্কা করছেন। তীব্র গরমে বিদ্যুতের লোডশোডিং মানুষকে আরও ভোগান্তিতে ফেলেছে। গরমে বিভিন্ন স্থানে হিটস্ট্রোকে মানুষের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে উল্লাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আগের তুলনায় জনবহুল স্থানগুলোতে মানুষের সংখ্যা কম। মানুষ প্রয়োজন ছাড়া তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না। বের হলেও কাজ শেষে দ্রুত ছায়া কিংবা ঠান্ডা স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। পথচারীরা ছাতা, পানির বোতল নিয়ে চলাচল করছেন। মানুষ অল্পতেই অতিরিক্ত ঘামছেন। এতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিচ্ছে। পথচারীরা ক্লান্তি দূর করতে রাস্তার পাশে শরবত কিংবা আখের রসের দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছে।

গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পিপাসা নিবারণের জন্য ঠান্ডা পানীয় পান করে হৃদয় জুড়াচ্ছে। উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের পাটধারী গ্রামের রবিউল ইসলাম নামে এক যুবক বলেন, কিছুদিন যাবৎ গরমের প্রকোপ এতটাই বেড়েছে যে, মানুষ বাইরে টিকতেই পারছে না। একটু হাঁটাচলা কিংবা সামান্য কাজ করেই হাঁপিয়ে উঠছে মানুষ। তীব্র রোদ আর গরমে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে। রোদের প্রকোপ এত বেশি যে, ছাতা নিয়েও চলাফেরা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। গরমে টিকতে না পেরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে শরবত পান করে তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করছি।
কৃষক ইয়াসিন আলী বলেন, এ বছর এতটা গরম পড়েছে মনে হচ্ছে, আমার বয়সে এত গরম কখনো অনুভব করিনি। এমন গরমে বাইরে বের হওয়াই কঠিন। গরমে আমাদের মতো দিনমুজুররা বেশি সমস্যায় পড়েছি। বেশি সময় কাজ করা যায় না। গরমে বেশি ঘামলে আবার ঠান্ডা জ্বর হয়। এমন অবস্থায় আমরা না পারছি ঠিকমতো কাজ করতে, আবার না পারছি ঘরে থাকতে। এর মধ্যে বিদ্যুতের লোডশোডিং মানুষকে আরও ভোগান্তিতে ফেলেছে। দিন-রাতের অধিকাংশ সময়ই বিদ্যুৎ থাকছে না। গরম এবং লোডশোডিংয়ে মানুষ ঘরে-বাইরে অস্বস্তিতে আছে।
লিখন আহমেদ, উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ

দীর্ঘদিনের টানা তাপপ্রবাহে কলাপাড়ায় পায়রা বন্দরসহ উপকূলীয় এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মানুষ নিতান্ত দায় ঠেকা ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। কৃষকরা পারছেন না ঠিকমতো কৃষিকাজ করতে। এমনকি দিনের কাজের সিডিউল পর্যন্ত পরিবর্তন করতে হচ্ছে। আবার কখনো কখনো ভয়াবহ, অসহনীয় তাপপ্রবাহের কারণে মাঠের কাজকর্ম বন্ধ রাখতে হচ্ছে। দীর্ঘদিনের টানা দাবদাহে কুয়াকাটায় পর্যটন নির্ভর ব্যবসাবাণিজ্যে ধস নেমেছে।

পর্যটকের যেন আকাল পড়েছে। তাপমাত্রা ৩৭-৩৮ ডিগ্রির নিচে থাকছে না। আবার ৩০-৩২ ডিগ্রির নিচেও থাকছে না সর্বনি¤œ তাপমাত্রা। অধিকাংশ কৃষকসহ শ্রমজীবী মানুষ বলেছেন তাদের কাছে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এমন ভয়াবহ দাবদাহ পরিলক্ষিত হয়নি। এভাবে দীর্ঘদিন টানা তাপপ্রবাহ আগে কখনো অনুভব হয়নি।
নীলগঞ্জের কুমিরমারা গ্রামের সবজি চাষি জাকির গাজী জানালেন, দীর্ঘ টানা অস্বাভাবিক গরমের কারণে মাঠে কাজ করতে পারছেন না। সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত কাজ করার পরে আর খেতে-খামারে থাকা যায় না। বাড়িতে চলে আসতে হয় কাজ বন্ধ করে। আবার বিকেল ৪টার পরে দু/এক ঘণ্টা কাজ করতে হয়। কৃষিকাজে এ কারণে আগানো যাচ্ছে না বলে জানান এই চাষি। তিনি এও জানালেন, তীব্র দাবদাহে সবজির গাছ বেড়ে উঠছে না। কুকড়ে যাচ্ছে। নেতিয়ে পড়ছে। কৃষি উৎপাদনে এক ধরনের বিপর্যয়ের শঙ্কা মনে করছেন তিনি।
নির্মাণ শ্রমিক (মিস্ত্রি) ফোরকান মিয়া জানান, অসহ্য গরমে বেলা ১১টার পরে আর কাজ করতে পারেন না। তিনি জানান, বহু সময় রাজযোগালে পাওয়া যায় না। কাজে আগানো যায় না। কখনো কখনো বাধ্য হয়ে সন্ধ্যার পরেও কাজ করতে হয়। আয়-রোজগারও কমে গেছে। এক ধরনের ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে জানালেন এই রাজমিস্ত্রী। প্রচ- গরমের কারণে এখানকার পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় পর্যটকের আনাগোনা আশঙ্কাজনকহারে কমে গেছে। হোটেল-মোটেল মালিকরা জানান, গড়ে ৩০ শতাংশ কক্ষ বুক্ড হয় না। ব্যবসা-বাণিজ্যে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে এসেছে বলেও দাবি হোটেল মালিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফের।

কুয়াকাটার বাণিজ্যিক ফটোগ্রাফার মো. সরোয়ার জানান, ১৪ বছরের এই পেশায় এমন দশা আগে কখনো হয়নি। তার ভাষায়, ‘করোনার কালেও এমন অবস্থা হয় নায়। আয়-বাণিজ্য নাই। ভয়াবহ অবস্থা। দিনে একটা ছবিও তুলতে পারি নাই। দুপুরের খাবারের পয়সাও জোটে না।’ বুধবার দুপুর কথা হয় এই বাণিজ্যিক ফটোগ্রাফারের সঙ্গে। জানালেন, প্রচ- ভ্যাপসা গরম পড়ছে মাসাধিককাল ধরে।

অন্তত দেড়শ’ ক্যামেরাম্যানের জীবন-জীবীকা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। ফি বছর কোরবানির আগে পর্যটকের ভিড় থাকে। আর এ বছর শূন্য হয়ে গেছে বলে জানালেন খাবার হোটেল কর্মচারী রাব্বি। এমনকি পশুপাখি পর্যন্ত থাকতে পারছে না তাদের আবাসস্থলে। কুয়াকাটা সৈকতে কুকুরকে প্রচ- গরম থেকে স্বস্তি পেতে সাগরের পানিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। কলাপাড়া শহরের দোকানি সুভাষ পাল জানান, প্রচ- গরমে জামা-কাপড় শরীরে রাখা যায় না। ফ্যানের বাতাসও গরম লাগে। এরমধ্যে আবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটে তার আলাদা ক্ষোভ রয়েছে। জানালেন, এত গরম আগে কখনো পড়েনি।

তাপপ্রবাহের কারণে শুধু জীবনযাত্রা কিংবা কর্মক্ষেত্রে বিরূপপ্রভাব পড়ছে না, মানুষ পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন রোগে বেশি বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. জেএইচ খান লেলিন জানান, প্রচ- দাবদাহে কলাপাড়ায় ডায়রিয়া, টাইফয়েডসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। এ ছাড়া অতিরিক্ত গরমে ঘেমে শরীর থেকে লবণ বের হয়ে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সবাইকে সতর্কভাবে চলাচল করার পরামর্শ এই চিকিৎসকের। তিনি বলেন, প্রয়োজনে ছাতা সঙ্গে নিয়ে বের হতে হবে। প্রচুর বিশুদ্ধ পানি পান করা এবং ঠান্ডা পরিবেশে থাকতে হবে।
মেজবাহউদ্দিন মাননু, কলাপাড়া

×