ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

ঈদে বিনোদনপ্রেমী মানুষের ঢল

নিজস্ব সংবাদদাতা, ধুনট, বগুড়া

প্রকাশিত: ২২:৪০, ২০ জুন ২০২৪

ঈদে বিনোদনপ্রেমী মানুষের ঢল

ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর তীরে ঈদ বিনোদনপ্রেমীদের একাংশ

ঈদের ছুটি আনন্দময় করতে মানুষ নানা আয়োজনে নিজেদের মাতিয়ে রাখেন। কেউ যায় সমুদ্র  সৈকতে, কেউ পার্কে, কেউ যায় স্বজনদের বাড়িতে, কেউবা আড্ডায় মেতে থাকেন। দূরে বেড়াতে যাওয়ার যাদের সময় বা সামর্থ্য নেই তাদের কাছে জনপ্রিয় বগুড়ার ধুনট উপজেলার যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও স্পার। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও যমুনা নদীর তীরে ঈদের ছুটিতে থাকা প্রকৃতিপ্রেমীদের মিলনমেলা বসেছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, ঈদের দিন দুপুরের পর থেকে প্রতিদিনই পরিবার-পরিজন নিয়ে বাঁধে ভিড় জমিয়েছে লোকজন।

বিকেলে হাজারো নারী-পুরুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। বাঁধে বসে কেউ গল্প করে, কেউ বাঁধে ঘোরাঘুরি করে আর কেউবা নদীতে নৌকা ভ্রমণ করে। ছবি তোলা তো আছেই। শুধু স্থানীয় লোকজনই নয় অন্যান্য এলাকা থেকেও এসেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সব বয়সী নারী-পুরুষ আর শিশুদের আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠে বাঁধ এলাকা। পরিবার-পরিজন নিয়ে শুধু হাঁটাহাঁটি নয়, অনেকেই মাদুর নিয়ে এসেছেন সঙ্গে করে। পাড়ে বিছিয়ে একসঙ্গে বসে গল্পে মশগুল হয়েছে দলে দলে। কেউ কেউ তীর থেকে একটু দূরে বসেছেন। অনেকেই খাবার নিয়ে এসেছেন সঙ্গে করে। 
শুধু স্থানীয়রা নন, রাজধানী ঢাকা কিংবা অন্য কোনো জেলায় কর্মরতরাও বাড়িতে ঈদ করতে এসে বিকেলটা কাটাতে এখানে এসেছেন। ঈদের দিন থেকে যেন যমুনার তীরে অঘোষিত মেলা বসেছে। লোকজনের আগমনকে কেন্দ্র করে সেখানে বেলুন, খেলনা দোকানসহ চটপটি, ফুসকা, ঝালমুড়ি, আচার, শীতল পানীয় ও শরবতের দোকান বসেছে। যমুনা দর্শন আর যমুনা পাড়ে বসে বিকেলে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে কিছু খাওয়া-দাওয়া ঈদে নতুন আনন্দ বয়ে আনে।
যমুনার তীরে বেড়াতে আসা বিনোদনপ্রেমীরা জানান, ঈদে যমুনা পাড়ে বেড়াতে আসা যেন অন্যরকম আনন্দ। আর বাঁধে আড্ডা তাদের খুব প্রিয়। নৌকায় যমুনা নদীতে ঘোরা আর নদীর ওপার  বৈশাখীচর, বোহাইলচর, আওলাকান্দিচর ঘুরে বেড়িয়েছি। চরের মধ্যে ঘোরাঘুরি যেন অন্য রকম আনন্দ। তাই ঈদে বাড়ি এলেই ছুটে আসি যমুনার তীরে। খোলামেলা জায়গা খুব সুন্দর।
বানিয়াজান স্পারে চানাচুর-বাদামের পসরা সাজিয়েছেন হেলাল নামে এক তরুণ। তিনি বলেন, অনেকেই দূর থেকে আসে। তারা এখানে এসে কিছু খেতে চায়। আমি বাদাম ও চানাচুরের দোকান নিয়ে এসেছি। সঙ্গে বরফ দিয়ে মিনারেল ওয়াটার ঠন্ডা করে বেচি। বছরের এই দিন অনেক বিক্রি হয়। প্রতিবছরই এখানে লোকজনের সংখ্যা বাড়ছে। চটপটি, ফুসকার দোকানদার রকিবুল বলেন, ঈদ ্এলেই বানিয়াজান স্পারে দোকান করি। ঈদের দিনসহ তিন-চার দিন প্রচুর বিক্রি হয়। বেলুন বিক্রেতা রিফাত বলেন, ঈদে যমুনার তীরে মেলার মতোই আয়োজন হয়। শিশুরা মা-বাবার সঙ্গে আসে। তারা বেলুন কেনে। মেলার চেয়েও বেশি বিক্রি করি।

কেরানীগঞ্জের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড় 
সংবাদদাতা, কোরানীগঞ্জ ঢাকা থেকে জানান, কেরানীগঞ্জে ঈদকে কেন্দ্র করে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েছে বিভিন্ন পার্ক, বিনোদনকেন্দ্রগুলো। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সব মানুষের ঢল নেমেছে কেরানীগঞ্জের পার্ক, ক্যাফে ও বিনোদনকেন্দ্রে ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঈদ উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি বেড়ানোর পাশাপাশি কেরানীগঞ্জে ঈদ উদযাপনের আরেকটি অন্যতম উৎস বিনোদনকেন্দ্রেগুলো। সারা বছর নানা ব্যস্ততায় যারা ঘোরার সময় পান না। ঈদের ছুটিতে তারা পরিবার নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিনোদন কেন্দ্রেগুলোতে। কেরানীগঞ্জের বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রামেরকান্দা ক্যাফে পল্লি, আহমেদ সাগর ক্যাফে, ক্যাফে চারুলতা, পদ্মপুকুর ক্যাফে, ক্যাফে-১০, শরীফ ফুড কোড, আনোয়ার ম্যাজিক আইস ল্যান্ড, শ্যামল বাংলা রিসোর্ট, বেলনা ইকো পার্ক, গ্রিন ভিউ ক্যাফেসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে যাচ্ছে দর্শনার্থীরা।
রামেরকান্দা ক্যাফে পল্লিতে ঘুরতে আসা মন্টু বলেন, ঈদের ছুটিতে কর্মময় জীবনের ব্যস্ততা ছেড়ে পরিবারের সঙ্গে আনন্দ উপভোগ করতে এসেছি। ঈদের প্রথম দিন ও দ্বিতীয় দিন আত্মীয় বাড়ি দাওয়াত ছিল, তৃতীয় দিন ঘোরাঘুরি করে পরিবারের সঙ্গে কাটাচ্ছি।
শরিফ ফুডে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা মারুফ বলেন, প্রাইভেট একটি কোম্পানিতে চাকরি করি। ঈদের ছুটিতে সবাইকে নিয়ে ঘুরতে এসেছি। খুব ভালো লাগছে । এখন কেরানীগঞ্জে অনেক পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র হওয়াতে আমাদের এখন ঢাকা যেতে হয় না। এমনিতেই বাচ্চাদের নিয়ে বের হওয়ার সময় পাই না। ঈদের ছুটিতে সবাইকে নিয়ে একটু সময় করে ঘুরতে বের হয়েছি। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন আর রশিদ বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে কেরানীগঞ্জের প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রে আমাদের পুলিশ রয়েছে। তা ছাড়া সাদা পোশাকে আমাদের পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। আমরা ঈদে দর্শনার্থীদের সর্বাত্মক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি।

মাগুরার বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে মানুষের ঢল
নিজস্ব সংবাদদাতা, মাগুরা  থেকে জানান,   ঈদুল আজহা উপলক্ষে  বিনোদন পিপাসুরা আনন্দ উপভোগ করতে মাগুরার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভিড়  করছে।  মহম্মদপুরে মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত শেখ হাসিনা ব্রিজে বিপুল মানুষের ভিড় জমে। মাগুরা শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত নবগঙ্গা নদীর ওপর শেখ কামাল ব্রিজ  ও  শেখ রাসেল শিশুপার্ক নির্মাণের ফলে জেলা সদরের হাজারো মানুষ বিনোদনের স্বাদ পেড়েছে।  পারনান্দুয়ালী,  শেখ কামাল সেতু  এলাকায় হয়ে উঠছে বিনোদনের অন্যতম ক্ষেত্র। অন্যদিকে পারনান্দুয়ালী গ্রামে শেখ রাসেল পৌর শিশু পার্ক জেলাবাসীকে  বিনোদনের স্বাদ দিয়েছে। এ ছাড়া নোমানী ময়দানে বিনোদন পিপাসুদের ভিড় জমেছে । এখানে অনেক রাইড স্থাপন করা হয়েছে।

×