ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

যশোরে গভীর রাতেও টুং টাং শব্দ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস

প্রকাশিত: ২২:৪৭, ১৩ জুন ২০২৪

যশোরে গভীর রাতেও টুং টাং শব্দ

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে কামারপাড়ায় পিটাপাটি ও ঘষামাজা চলছেই

টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে কামারশালা। কোরবানি ঈদের প্রস্তুতি হিসেবে দা, বঁটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন যশোরের বিভিন্ন উপজেলার কামারশিল্পীরা। চলছে হাঁপর টানা, পুড়ছে কয়লা, জ্বলছে লোহা। ভোর থেকে রাত অবধি তপ্ত ইস্পাত গলিয়ে দা, চাপাতি, বঁটি, ছুরি তৈরির কাজ করে যাচ্ছেন তারা।

ঈদের আগের দিন পর্যন্ত চলবে এ কর্মব্যস্ততা। ঈদকে সামনে রেখে কামারদের ব্যস্ততা বেড়েছে। আশার আলো দেখছেন তারা। নাওয়া-খাওয়া ভুলে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন কামারশিল্পীরা। শোনা যাচ্ছে হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দ। কেউ হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন আগুনরঙা লোহার দ-। কেউ বা হাঁপর টেনে বাতাস দিচ্ছেন। কেউ পোড়া দা ও ছুরিতে দিচ্ছেন শাণ। 
মণিরামপুরের শোলাকুড় গ্রামের কামারশিল্পী বাবু কর্মকার বলেন, ব্যবসায় মন্দা চলছে, কোরবানি ছাড়া বছরের অন্য মাসগুলোতে আমরা কোনোরকম দিন পার করছি। কাজ থাকে না বললেই চলে। বিভিন্ন এনজিও থেকে নেওয়া লোন/ঋণ পরিশোধ করতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। ফলে এ পেশা ছেড়ে অনেকেই অন্য পেশা বেছে নিয়েছে।

মণিরামপুর বাজারের কামারশিল্পী সুকুমার কর্মকার ও স্বপন কুমার বলেন, আমরা অনেক বছর ধরে এ পেশায় জড়িত। কোরবানি ঈদ আসলে কাজের ব্যস্ততা বাড়ে। সারা বছর বেচাকেনা কিছুটা কম থাকে, কোনো মতে দিন কাটে। ঈদের এক সপ্তাহ ভালো বেচাকেনা হয়। কামার শিল্পের পাইকার অমল কর্মকার বলেন, সারা বছরই তারা দা, চাকু, ছুরি, বঁটি বিক্রি করেন।

কিন্তু কোরবানির আগ মুহূর্তে এসব সরঞ্জাম কেনাবেচার ধুম পড়ে। এবারও ভালো বিক্রি হচ্ছে। তবে লোহা ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় কামারদের কাছ থেকে খানিকটা বেশি দামে জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে। যে কারণে বেশি দামে তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে।

ব্যস্ত টাঙ্গাইলের কামাররা
নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল থেকে জানান, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে টুং টাং শব্দে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের কামারশিল্পীরা। চলছে হাঁপর টানা, পুড়ছে কয়লা, জ্বলছে লোহা। হাতুড়ি পিটিয়ে কামার তৈরি করছেন দা, বঁটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম। শহর ও গ্রাম-গঞ্জে সব জায়গায় কামাররা নতুন তৈরির সঙ্গে পুরনো দা-বঁটি, ছুরি ও চাপাতিতে শাণ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

আবার মোটরচালিত মেশিনে শাণ দেওয়ার কাজও চলছে। তাই যেন দম ফেলারও সময় নেই কামারদের। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় তাদের কাজ বেড়েছে। দিনরাত পরিশ্রম করছেন তারা। তাদের এ ব্যস্ততা চলবে ঈদুল আজহার দিন পর্যন্ত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জেলার ১২টি উপজেলা ও ১১টি পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটার সরঞ্জাম। এ চাহিদা পূরণে ব্যস্ততা বেড়েছে উপজেলার বিভিন্ন বাজারের কামারের দোকানগুলোতে। বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

কামার পল্লির কারিগররা জানান, কয়লা ও লোহার দাম অনেক বেশি। তাই তৈরিকৃত সরঞ্জাম বিক্রি বেশি হলেও লাভ কম হয়। আর ক’দিন পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। তাই এ উৎসবকে কেন্দ্র কামারদের ব্যস্ততা বেড়েছে অনেক। কাজের চাপে যেন দম ফেলার সময় নেই তাদের। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছেন কামাররা।

মাগুরায় কামারপল্লি সরগরম 
নিজস্ব সংবাদদাতা, মাগুরা  থেকে জানান, পবিত্র ঈদুল আজহাকে  সামনে রেখে মাগুরার কামারপল্লি কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছে । তাদের দম ফেলার সময় নেই।  সকাল থেকে রাত অবধি চলছে চাপাতি , ছুরি, দা , বঁটি ইত্যাদি তৈরিরও ধার কাটার  কাজ । বিক্রি হচ্ছে ভালো।

ফলে বাড়তি আয়ে কামারদের মুখে হাসি ফুটেছে।  জানা গেছে, জেলার ৪টি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কয়েকশ’ কামার বসবাস করেন। কামারদের সারাবছর কমবেশি কাজ হলেও  কাজ হয় মূলত ঈদুল আজহার সময় কাজ সব থেকে বেশি হয়।

×