দখল-দূষণে ভরাট হওয়া গুরুদাসপুরের মির্জামামুদ খাল পুনর্খনন করা হয়
দখল-দূষণে ভরাট হওয়া গুরুদাসপুরের মির্জামামুদ খাল পুনর্খনন করার ফলে এলাকাবাসীর জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের সর্বত্র অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন করায় সারা বছরই জলাবদ্ধতায় থাকেন এলাকাবাসী। এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে তাঁদের দাবির প্রেক্ষিতে খালটি পুনর্খননের উদ্যোগ নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী।
জানা গেছে, পার্শ্ববতী বড়াইগ্রাম উপজেলার জোয়ার ইউনিয়নের কাছুটিয়া গ্রাম থেকে তৎকালীন প্রমত্তা বড়ালের শাখা খাল মির্জামামুদের উৎপত্তি। সেখান থেকেই গুরুদাসপুর উপজেলার কান্দাইল, বৃ-চাপিলা, ধানুড়া, পুরুলিয়া, তুলাধোনা, পুটিখাঁ, চন্দ্রপুর, চকআদালত খাঁ, গোপীনাথপুর, বৃকাশো হয়ে চাকলের বিল দিয়ে সোনাবাজু গ্রামের তুলসীগঙ্গা নদীতে মিশেছে মির্জামামুদ খাল।
নদী ও পরিবেশ কর্মী সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ জানান, আশির দশকে পদ্মার উৎসমুখ রাজশাহীর চারঘাটে নদীকে সঙ্কুুচিত করে অপরিকল্পিতভাবে স্লুইসগেট নির্মাণের ফলে প্রমত্তা বড়ালের সঙ্গে সঙ্গে মির্জামামুদ খালেরও মৃত্যু হয়। দখল-দূষণে বিলুপ্ত হয়ে যায় মির্জামামুদ খালটি। পঞ্চাশ বছর পর হলেও খালটি পুনর্খনন করায় জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি স্থায়ীভাবে পানি পাবেন খালপাড়ের মানুষ।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) গুরুদাসপুরের সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের গত ৪ ফেব্রুয়ারি পাবনা-নাটোর-সিরাজগঞ্জ জেলার ভূ-উপরিস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মির্জামামুদ খাল উদ্ধার করে পুনর্খনন কাজ শুরু হয়।
১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ খালের ধানুড়া বাজার মিল্কি ব্রিজ হতে কৈডিমা উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার খাল পুনর্খনন করা হয়েছে। এতে আশপাশের ২৫০ হেক্টর জমির সেচ সুবিধা পাবে কৃষকরা। জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাবে ৬৩০ হেক্টর কৃষিজমি। এতে সরাসরি উপকৃত হবেন ১৫ হাজার কৃষক।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জানান, এলাকার নদী, খাল-বিল উদ্ধার এবং খননের মাধ্যমে মৎস্য ও কৃষি বিপ্লব ঘটাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মির্জামামুদ খাল পুনর্খনন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় পর্যায়ক্রমে পুরো খালটিই পুনর্খনন করা হবে।