মহাসড়ক অবরোধ।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড়, মাদানীনগর ও নিমাইকাশারীসহ আশপাশের এলাকায় নিয়মিত গ্যাস সরবরাহের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে নাসিক ৩নং ওয়ার্ডের অসহায় বাসিন্দারা।
শনিবার সকাল ১০টায় মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকার চট্টগ্রামমুখী লেন অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা প্রায় ১ ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে তারা গ্যাসের দাবিতে ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন পালন করেন।
এতে মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দুরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসসহ অসংখ্য যানবাহন আটকে পড়েলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে যাত্রীরা চরম ভোগান্তি পড়তে বাধ্য হন। খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষোভরতদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জের পূর্ব সানারপাড়, মনু মিয়া মার্কেট, বক্সনগর, নিমাইকাশারী, মাদানীনগর, মুক্তিনগর, রসুলবাগ ও নয়াআটিসহ আশপাশের এলাকায় গত তিন বছর ধরে নিয়মিত গ্যাস পাচ্ছেন না। এতে গৃহিনীরা গ্যাসের অভাবে রান্নাবান্না করতে পারছেন না। স্থানীয় তিতাস গ্যাস অফিসে অভিযোগ জানিয়েও কোন সুফল পাচ্ছে না স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে শনিবার সকালে তিন নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ভূক্তভোগীরা বাসিন্দারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় এসে চট্টগ্রামমুখী লেনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এ সময় তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন। একই সময় তারা ব্যানার নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে সানারপাড় এলাকার সৈয়দ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘ তিন বছর ধরে গ্যাস পাচ্ছি না। ঠিকমত রান্নাবান্না করতে পারি না। রাত তিনটায় গ্যাস আছে। আবার রাত চারটায় গ্যাস চলে যায়। তিতাস গ্যাস অফিসের বিভিন্ন দপ্তরে বহু অভিযোগ করেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। আমরা সরকারের কাছে আবেদন করছি আমাদের এলাকায় যেন দ্রুত নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ চালু করা হয়।
মাদানীনগর এলাকার গৃহিণী শাহনাজ পারভীন বলেন, অন্যান্য ওয়ার্ড এলাকায় গ্যাস থাকলেও আমাদের ওয়ার্ডে এলাকায় দিনে-রাতে গ্যাস থাকে না। গভীর রাতে গ্যাস আসলেও এক-দুইঘন্টার মধ্যে আবারও চলে যায়। তিতাস কর্মকর্তাদের জানানোর পর তারা শুধু আশার বাণী শুনিয়ে যাচ্ছেন। কোন কাজ হচ্ছে না। আমরা এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই। সানারপাড় এলাকার বাসিন্দা এমদাদ হোসেন বলেন, আমাদের এলাকায় নিয়মিত গ্যাস থাকে না। ঠিকমতো রান্না চলে না। বিকল্পভাবে আমাদের পরিবারের সদস্যরা মাটির চুলো রান্নাবান্না করতে বাধ্য হচ্ছেন। তারপরও আমরা নিয়মিত গ্যাসের বিল পরিশোধ করে যাচ্ছি। আমরা এ সীমাহীন দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে আজ মহাসড়কে নামতে বাধ্য হয়েছি।
এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার শিমরাইল ক্যাম্পের ইনচার্জ টিআই একেএম শরফুদ্দীন বলেন, গ্যাস সরবরাহের দাবিতে এলাকাবাসী মহাসড়কে ১৫-২০ মিনিট অবস্থান করেছিল। আমরা তাদেকে বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি। পরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এলাকাবাসী ৫-৭ মিনিট মহাসড়কে অবস্থান করেছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিয়েছি।
তিতাস গ্যাসের নারায়ণগঞ্জ জোনের উপ-মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশীদকে একধিকবার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি এ প্রতিবেদকের ফোন রিসিভ করেননি।
তবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গ্যাস এখন আমাদের জাতীয় সমস্যা। তিন বছর ধরে গ্যাস নেই এটা যদি বলে থাকেন তাহলে বিষয়টি সঠিক নয়। আমাদের গ্যাসের ক্রাইসিস তাই রাতে দিনে মিলিয়ে গ্যাস আসে যায়। সারা বাংলাদেশে এখন গ্যাসের সমস্যা রয়েছে।
এসআর
