১২নং গয়ঘর খলিফা কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে
একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে দুইজন শিক্ষক দিয়ে। এর মধ্যে একজন মিটিংয়ে ব্যস্ত অন্যজন ট্রেনিংয়ে। বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক না থাকায় একই সঙ্গে দুই ক্লাসের পাঠদান করছেন দপ্তরি রাসেল মিয়া। শিক্ষার্থীদের কাছে রাসেল মিয়া তাই শিক্ষক হিসেবেই বেশি পরিচিত।
সোমবার (৩ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শরীয়তপুরের সদর উপজেলার শৌলপাড়া ইউনিয়নের ১২নং গয়ঘর খলিফা কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
আরও পড়ুন : বঙ্গোপসাগরে মার্কিন বিমান ঘাঁটি তৈরি নিয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
জানা গেছে, প্রত্যন্ত গ্রামের এই বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক সংকট থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা একশর বেশি। প্রতিদিন এসব শিক্ষার্থীরা স্কুলে এলেও শিক্ষক সংকটে তাদের পাঠদান ব্যহত হয়। গত তিন দিন ধরে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক পলাশ অধিকারী কারিকুলাম ট্রেনিংয়ে ও সোমবার প্রধান শিক্ষক অমল অধিকারী ক্রীড়া সংক্রান্ত একটি মিটিংয়ে যোগ দেওয়ায় শিক্ষক শূন্য হয়ে পড়ে বিদ্যালয়টি। যার ফলে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে একই সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান শুরু করেন বিদ্যালয়টির দপ্তরি রাসেল মিয়া।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাসেল মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, অমল স্যার মিটিংয়ে গেছেন আর পলাশ স্যার ট্রেনিংয়ে থাকায় স্কুলে কোনো শিক্ষক নেই। তাই শিশুদের পাঠদান আমি নিজেই করছি। এছাড়া স্কুলে শিক্ষক সংকট থাকায় আমাকে প্রায়ই পাঠদান করাতে হয়।
শ্রাবন্তি নামে দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানিয়েছে, স্যাররা ট্রেনিংয়ে গেছেন। তাই রাসেল স্যার আমাদের পড়াচ্ছেন। তিনি প্রায়ই আমাদের পড়ান।
বিষয়টি নিয়ে স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমল অধিকারী জানান, ক্রীড়া বিষয়ক একটি মিটিংয়ে আমি ডোমসারে আছি। মিটিংয়ের সভাপতিত্ব করছেন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার শরীফ মো. এমারত। বিদ্যালয়ের অপর শিক্ষক পলাশ ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। স্কুলে আজ কোনো শিক্ষক নেই।
শিক্ষক সংকটের বিষয়ে স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. ইলিয়াস মিয়া দেশের গণমাধ্যমকে বলেন, স্কুলে শিক্ষক সংকট থাকায় আমাদের আবেদনের ভিত্তিতে মামুন নামে একজন শিক্ষককে অতিরিক্ত দায়িত্বে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু উনিও বর্তমানে না থাকায় স্কুলে মাত্র দুইজন শিক্ষক রয়েছেন। একটি স্কুল মাত্র দুইজন শিক্ষক দ্বারা পরিচালনা সম্ভব নয়। আমরা বারবার শিক্ষা অফিসে আবেদন করার পরেও আমাদের শিক্ষক দেওয়া হয়নি। তারা জানিয়েছে নতুন নিয়োগের পরে শিক্ষক দেওয়া হবে। তবে আজকের বিষয়টি আমার জানা নেই।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ট্রেনিং ও মিটিং থাকার কারণে বর্তমানে শিক্ষক সংকট চলছে। তবে একটি বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক না রেখে কেন সব শিক্ষককে ট্রেনিং ও মিটিংয়ে নেওয়া হলো বিষয়টি আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখব। দপ্তরি দিয়ে ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।
এবি