ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

চুয়াডাঙ্গায় দুই এমপির আত্মীয় প্রার্থী

নিজস্ব সংবাদদাতা, চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশিত: ২২:৩৫, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় দুই এমপির আত্মীয় প্রার্থী

দলীয় পাঁচজন প্রার্থী হলেও আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিজন কুমার চন্দের নির্বাচনী অফিস

দলীয় সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এমপির নিকটাত্মীয় উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। এদের একজন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের সহোদর দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী মুনছুর বাবু। তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

দলীয় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টুকে পরাজিত হতে হয়েছিল সংসদ সদস্যের ভাইয়ের কাছে। সংসদ সদস্য টগর নিজে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে জয়ী হলেও অন্য নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র। অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী এমপির চাচাত ভাইয়ের ছেলে দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের ভাতিজা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে বৈধ হয়েছে। তিনি ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর নৌকা প্রতীক নিয়ে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সংসদ সদস্যের নির্দেশে চলেন তার ভাই ও আত্মীয়স্বজনরা। ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু। আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের ছোট ভাই আলী মুনছুর বাবু। এমপির ইন্ধনে তিনি উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন।
১ম ধাপে আগামী ৮ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলায়। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দিচ্ছে না। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্দেশনায় বলা হয়, কোনো সংসদ সদস্যের নিকটাত্মীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। কিন্তু দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনে ভিন্ন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের আপন ছোট ভাই আলী মুনছুর বাবু দলীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করে নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

২২ এপ্রিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে তিনি প্রত্যাহার করেননি প্রার্থিতা। অবাক হলেও সত্য, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কয়েকদিন আগে সংসদ সদস্য চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে ঢাকায় অবস্থান নেন। ২২ এপ্রিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ঝামেলা এড়িয়ে নিজেকে নিরাপদ রাখতে সকালে বিমানযোগে সিঙ্গাপুর চলে যান। ২৩ এপ্রিল দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার মোতাত্তয়াক্কিল রহমানের স্বাক্ষরিত আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রচার চালাচ্ছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবু।
দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম। তিনি সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের চাচাত ভাইয়ের ছেলে। দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম বলেন, আমি চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের চাচাত ভাইয়ের ছেলে। তাই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছি।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের আপন ভাতিজা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার বলেন, গতবার উপজেলা নির্বাচনে ভোট করেছিলাম, সেবার এমপি আমার বিপক্ষে ছিল। এবারও আমার বিপক্ষে রয়েছেন। মাঠের পরিস্থিতি ও জনগণের চাপে ভোট করছি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত মৌখিক। গণমাধ্যমে এসেছে। 
সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান আশাদুল হক বিশ্বাস, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার, জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক ও  সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান (গরীব রুহানী মাসুম), সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মামুন-অর-রশীদ আঙ্গুর, মিরাজুল ইসলাম কাবা, শামীম হোসেন ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সাহাজাদী মিলি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুরুন্নাহার কাকলী ও মাসুমা খাতুন।
দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী মুনছুর বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষাবিষায়ক সম্পাদক এসএএম জাকারিয়া আলম ও দামুড়হুদা উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আবু তালেব বিশ্বাস। ভাইস চেয়ারম্যান পদে শফিউল কবির বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাহিদা খাতুন ও তানিয়া খাতুন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সীতাকু-ে এমপির প্রার্থী জেতাতে নানা কৌশল
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফি থেকে জানান, উপজেলা নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জেতাতে চারদিকে নানা কৌশল সাজাচ্ছেন। দলের কেন্দ্র থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের যতই নির্দেশনা দেওয়া হোক না কেন, তারা তা আমলে নিচ্ছেন না। কঠোর আদেশ ও নির্দেশের তোয়াক্কা করছেন না। অথচ উপজেলা নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতেই আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনো সংসদ সদস্য যেন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারেন সেজন্য সমর্থন দেওয়াও নিষেধ করেছে। কিন্তু বাস্তবে ভিন্নচিত্র দেখা যাচ্ছে উপজেলাগুলোতে।
চট্টগ্রামের সীতাকু-ে বর্তমান সংসদ সদস্য এসএম আল মামুনের পছন্দের প্রার্থী রয়েছেন মাঠে। ওপেন সিক্রেট পদ্ধতিতে পুরো সীতাকু-ই জানে আরিফুল আলম রাজু হলেন এমপির প্রার্থী। স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই ধারা রয়েছে সীতাকু-ে। একটি সরব থাকলেও আরেকটি নীরব। তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, ভিন্ন চ্যালেঞ্জে রয়েছেন অপর প্রার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। 
জানা গেছে, এ উপজেলায় বর্তমান সংসদ সদস্য সমর্থন দেন আরিফুল আলম রাজুকে। ফলে অনেকটা অসহায় প্রবীণ মঞ্জু। কারণ বর্তমান সংসদ সদস্য যখন উপজেলা নির্বাচন করেছিলেন তখন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মঞ্জু তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেই জেরে এবার প্রবীণ এ আওয়ামী লীগ নেতাকে টেক্কা দিতে নবীন প্রার্থীকে মাঠে নামান বর্তমান এমপি। এমনকি বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকেও নির্দেশনা দিয়েছেন রাজুর জন্য প্রচারে নামতে। ফলে সীতাকু-ে স্থানীয় এমপির পছন্দের প্রার্থী নিয়ে তৎপর বিভিন্ন ইউনিট।
স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা এবং চেয়ারম্যানদের এ বিষয়ে দেওয়া হয়েছে বিশেষ নির্দেশনা। দলীয় কর্মকা-ের এমন বিষয় চারদিকে চললেও সে বিষয়ে কেউ আপাতত মুখ খুলছেন না। তবে পাড়ার চায়ের দোকান ও হাটবাজারে এ নিয়ে প্রকাশ্য আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

প্রার্থী হতে মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ
স্টাফ রিপোর্টার বরিশাল থেকে জানান, তৃতীয় ধাপের গৌরনদী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে গৌরনদী পৌরসভার একাধারে তিনবারের মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারিছুর রহমান।
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে গত ২৫ এপ্রিল পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বিষয়টি অনেকটা অজানা থাকলেও পদত্যাগপত্র গ্রহণের পর ১ নম্বর প্যানেল মেয়র ও পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান শামীমকে ২৮ এপ্রিল দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার পরপরই বিষয়টি চাউর হয়।

বেলকুচিতে নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর
নিজস্ব সংবাদদাতা বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ থেকে জানান, বেলকুচিতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর ও তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা ও মারপিট করেছে প্রতিপক্ষ মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী হাজি বদিউজ্জামান ফকিরের সমর্থকরা। রবিরার রাত ১০টার দিকে উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের আজগড়া জামতৈল এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। হামলায় আহত কর্মী-সমর্থকদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসন্ন বেলকুচি উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামের এলাকাভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনার জন্য দৌলতপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সেকান্দার মার্কেটে অফিস স্থাপন করা হয়। সেখানে তার সমর্থকরা বসে ভোটের আলোচনা করছিল।

এমন সময়ে প্রতিপক্ষ মোটরসাইকেলের প্রার্থী হাজি বদিউজ্জামান ফকিরের সমর্থকরা স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সেকান্দার আলী, মাসুদ আলী ও আশরাফুল ইসলামের ওপর হামলা এবং মারপিট করে। এ সময় তারা অফিসের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে চলে যায়। পরে হামলায় আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা জন্য পাঠানো হয়। এর কিছুক্ষণ পরই আজগড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন।

এ সময় জাহাঙ্গীরকে বাড়িতে না পেয়ে ছোট বোন রুপসী খাতুনকে মারপিট করে। একই সময় রুপসীর প্রতিবন্ধী স্বামী চা দোকানি রমজান আলীকে বেধড়ক মারপিট করে। এ ঘটনায় এলাকায় নিন্দার ঝড় বইছে। এ বিষয়ে মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী হাজি বদিউজ্জামান ফকির বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করা হচ্ছে। আজগড়া জামতৈল ওই অফিসে আমিরুল ইসলামের সমর্থকরা টাকা ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করে ভাঙচুর করেছে।

এখানে আমার সমর্থকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে নানাভাবে প্রচার চালাচ্ছে। বেলকুচি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, রাতে আজগড়াতে একটি নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আমি জানামাত্র সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাদারীপুরে এমপির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ
নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর থেকে জানান, আগামী ৮ মে সদর উপজেলা নির্বাচন ঘিরে ক্রমেই মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। মাদারীপুর-০২ আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ১৫টি অভিযোগ উত্থাপন করেছেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এমপির চাচাত ভাই পাভেলুর রহমান শফিক খান।

অভিযোগগুলো এরইমধ্যে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত দিয়েও কোনো সুরাহা না পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এই প্রার্থী। সোমবার দুপুরে মাদারীপুর শহরের ডিসি ব্রিজ এলাকার নিজ বাসভবনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমান নির্বাচনের মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী পাভেলুর রহমান শফিক খান অভিযোগ করেন, ‘আসন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে আনারস প্রতীক পেয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন শাজাহান খান এমপির ছেলে, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আসিবুর রহমান খান।

তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী শাজাহান খানের চাচাত ভাইয়ের ছেলে পাভেলুর রহমান শফিক খান। তিনি লড়ছেন মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে। শফিক খানের অভিযোগ, এই নির্বাচন ঘিরে ছেলের পক্ষে কাজ শুরু করেন শাজাহান খান। এরমধ্যে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো, প্রশাসনের ওপর চাপ প্রয়োগ, কালো টাকা ছড়ানোর কারণে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের আইনে স্থানীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনী এলাকায় প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু সেই আইনকেও মানছেন না স্থানীয় সংসদ সদস্য। এমন ১৫টি অভিযোগ তুলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত দিয়েও কোনো সুরাহা পাওয়া যায়নি। 
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি বলেন, ‘আমি মাদারীপুরে থাকলেও আমার ছেলে আসিবুর রহমান আসিব খানের নির্বাচনী কোনো প্রচারে অংশ নিচ্ছি না। আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি মাদারীপুরে নিজ বাসায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের আলোচনা করি, তবে এটা নির্বাচনী কোনো বিষয় না।’

নাটোরে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্র্থীরা
নিজস্ব সংবাদদাতা নাটোর থেকে জানান, আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিতব্য প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে নাটোর সদর ও নলডাঙ্গা উপজেলায় প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই ভোটারদের নিকট ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে সারাদিন ভোটের মাঠে গণসংযোগে প্রার্থীদের দেখা না গেলেও বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাট-বাজার, চায়ের স্টল, পাড়া-মহল্লায় ভোট প্রার্থনা করছেন তারা। চা-স্টল, হাট-বাজারে ভোট নিয়ে নেই কোনো জল্পনা-কল্পনা।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৮ মে সদর, নলডাঙ্গা ও সিংড়া উপজেলায় প্রথম ধাপের উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে গত ২৩ এপ্রিল সিংড়া উপজেলায় দেলোয়ার হোসেন পাশাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। সিংড়া উপজেলায় কেবল ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে প্রধম ধাপের নির্বাচনে নাটোর সদর ও নলডাঙ্গা উপজেলায় ১৪ জন চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেনÑ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান, সাবেক জেলা ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজুল ইসলাম মাসুম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তারুল ইসলাম আলম, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামিল হোসেন মিলন, সাবেক ছাত্রদল নেতা ইশতিয়াক আহমেদ হিরা। এ ছাড়া সদর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেনÑ আব্দুল্লাহ আল সাকিব (বাকি), আফছার আলী প্রামাণিক, আব্দুর রাজ্জাক (ডাবলু),  আমিরুল ইসলাম, শরিফুর রহমান।

এ ছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেন- কামরুন্নাহার কাজল ও শেফালী আক্তার। এ ছাড়া নলডাঙ্গা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নয় প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভাইস ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ১০ জন।  উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, নলডাঙ্গা উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন আব্দুল আলীম, তৌহিদুর রহমান লিটন, আসাদুজ্জামান আসাদ, এসএম ফিরোজ ইঞ্জিনিয়ার আহমদ আলী শাহ, জুয়েল ইমাম, সরদার আফজাল হোসেন, জিল্লুর রহমান, রবিউল ইসলাম।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন, আকতার হোসেন, খালেদ মাহমুদ, রুবেল আহমেদ, রায়হান তানভীর, সেলিম রেজা। অন্যদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেনÑ রিনা পারভীন, মহুয়া পারভিন লিপি, রেনুকা হুজুর, সাবিনা ইয়াসমিন, মাসুদা পারভিন।
 
উল্লাপাড়ায় প্রথম নারী প্রার্থী
নিজস্ব সংবাদদাতা, উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ থেকে জানান, দ্বিতীয় ধাপে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা ও যাচাই-বাছাই পর্ব শেষ হয়েছে। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাচনে এবারই প্রথম নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী দেখছেন উপজেলাবাসী। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত সেলিনা মির্জা মুক্তি।

তার পিতা মুক্তিযুদ্ধকালীন পলাশডাঙ্গা যুবশিবিরের সর্বাধিনায়ক সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মির্জা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ শুরু করেছেন মুক্তি। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দোয়াও চেয়েছেন তিনি। তার বাবার এবং নিজের জনপ্রিয়তায় জনগণের ভোটে বিজয়ের আশা করছেন তিনি।

এ ছাড়াও চেয়ারম্যান পদে দীর্ঘদিন ধরেই মাঠে আছেন নবীনেওয়াজ খান বিনু, হেদায়েত আহমেদ এলান ও আকমল হোসেন। ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন আবু সাইদ স্বপন, এসএম তোফায়েল ইসলাম বকুল ও মনিরুজ্জামান পান্না। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনী মাঠে দেখা যাচ্ছে লাভলী পারভিন, সবিতা প্লাবনী সুইটি ও সুমাইয়া সরকারকে।

সাঘাটা-ফুলছড়িতে চলছে দিন-রাত প্রচার 
নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা থেকে জানান, ফুলছড়ি-সাঘাটা উপজেলা নির্বাচনে ভোটের আমেজে ফিরেছে জনগণ। ইতোমধ্যে উপজেলা পরিষদের প্রার্থীরা ছুটে বেড়াচ্ছেন উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। ভোটারদের কাছে দিচ্ছে উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। দেওয়ালে, গাছে, ইলেক্ট্রিক খুঁটিতে লাগানো পোস্টারে ও সামাজিক মাধ্যমে ছেয়ে গেছে নির্বাচনী হাওয়া।

ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাচন করছেন দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী, ছয় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং পাঁচ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এখন পর্যন্ত বর্তমান চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগ দলীয় অপর একজন প্রার্থী লড়বেন। তবে বিএনপি বা অন্য কোনো দলের প্রার্থীকে এখন পর্যন্ত মাঠে দেখা যায়নি। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেনÑ জিএম সেলিম পারভেজ (ঘোড়া) ও আবু সাঈদ (মোটরসাইকেল) প্রতীক।

বিভিন্ন হাট-বাজারে, সভা-সমাবেশে হাজির হয়ে ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্য্যান পদপ্রার্থী দুইজন। সাঘাটায় উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাড. এসএম সামশীল আরেফিন টিটু নির্বাচিত হওয়ায় এ  উপজেলায় চেয়ারম্যান ব্যতীত সংরক্ষিত মহিলাসহ ১১ প্রতিদ্বন্দ্বী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত  হবে।

সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থী হলেনÑ রওশন আরা বেগম ও সাবেক সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজনীন বেগম এবং সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, মিলন কান্তি সরকার, আব্দুল মজিদ, রোস্তম আলী, শাহ্ মোখলেছুর রহমান, শাহজাহান আলী, উজ্জ্বল হোসেন, মমিতুল হক নয়ন ও আমির হোসেনসহ ১১ প্রার্থী নির্বাচন করবেন।

×