ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

লাশ পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে আকুতি জানালেন সেই বৃষ্টি/অভিশ্রুতি’র মা

প্রকাশিত: ১৫:২৮, ৩ মার্চ ২০২৪; আপডেট: ১৫:২৮, ৩ মার্চ ২০২৪

লাশ পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে আকুতি জানালেন সেই বৃষ্টি/অভিশ্রুতি’র মা

নিহত সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুনের মা

বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে নিহত সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুনের মা বিউটি খাতুন প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার মেয়ের মরদেহ দাবি করেছেন। বৃষ্টির মা বিউটি খাতুন বলেন, তার পেটেই জন্ম হয়েছে বৃষ্টির। ঢাকায় গিয়ে সে কেন অভিশ্রুতি শাস্ত্রী হয়েছে সেটা জানেন না তারা। তার কলিজার টুকরার মরদেহটুকু চান তারা। বাড়িতেই তার দাফন কাফন করতে চান।

জানা যায়, কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বনগ্রামে জন্ম বৃষ্টি খাতুনের। খোকসা উপজেলার বনগ্রামের শাবলুর আলম সবুজের ৩ মেয়ের মধ্যে সবার বড় বৃষ্টি ওরফে অভিশ্রুতি। মেজো বোন ঝর্ণা রাজবাড়ি কলেজে পড়েন। আর ছোট বোন বর্ষাকে নিয়ে মা বিউটি খাতুন থাকেন গ্রামের বাড়িতে। ২০১৮ সালে কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচ এস সি পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে ভর্তি হন ঢাকার ইডেন কলেজে। কুষ্টিয়ায় বেড়ে ওঠা বৃষ্টি বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি করতেন সাংবাদিকতা। দেখতেন বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে সেই স্বপ্ন থামিয়ে দিলো বেইলি রোডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড।

এলাকাবাসিরা বলছেন, মারা যাওয়া বৃষ্টি ঢাকায় কিভাবে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী হলেন তাও তাদের অজানা। তবে বৃষ্টি ফেসবুকে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত। কিছু বন্ধু বান্ধবীর কাছেও সে এই নামে পরিচিত। তাই মৃত্যুর পরে সে মুসলিম না কি হিন্দু তা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। ফলে মরদেহ হস্তান্তরে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। নিথর মরদেহটি পড়ে আছে এখনো হাসপাতালের হীম ঘরে।

ঢাকার রমনা কালীমন্দিরের সভাপতি জানান, অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ৮ থেকে ৯ মাস ধরে মন্দিরে যাতায়াত করতেন এবং পূজা করতেন। সে সূত্রেই তার সঙ্গে পরিচয়। অভিশ্রুতি শাস্ত্রী জানিয়েছিলেন, তার মা-বাবা বেনারসে থাকতেন। তারা মারা যাওয়ায় দাদুর হাত ধরে ঘটনাচক্রে তিনি কুষ্টিয়ায় এসেছিলেন ছোটবেলায়। অভিশ্রুতির দাদু মারা গেলে একটি পরিবার তাকে দত্তক নিয়েছিল। তবে এ পরিবার মুসলিম না হিন্দু ছিল, তা তিনি বলেননি। তাই অধিকতর তদন্ত করে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর আসল পরিচয় সামনে আনা জরুরি।

মেঝ বোন ঝর্ণা ও ছোট বোন বর্ষা এ বিষয়ে বলেন, পরিচয় নিয়ে জটিলতা কেনো হবে। কোনো হিন্দু পরিবারের মেয়েকে মুসলিম পরিবারে দত্তক দেওয়া হয় না। এটা নিছক গল্প। বৃষ্টি কেন নিজেকে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী পরিচয় দিত সেটা তারা জানেন না। বৃষ্টির এখানেই জন্ম, এখানেই লেখাপড়া, আমাদের সঙ্গেই বেড়ে ওঠা। এলাকাবাসী সব জানেন।

এদিকে, অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টির গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসাতে চলছে শোকের মাতম। শেষবার এক নজর দেখার অপেক্ষায় পরিবার পরিজন।পরিচয় নিয়ে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে এসব নিয়ে অজানার মধ্যে এলাকাবাসি। তাদের দাবি সব প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত মৃতদেহ পরিবারের কাছে দেওয়া হোক।

এবি 

সম্পর্কিত বিষয়:

×