ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

দুই বোন বাঁচিয়ে রেখেছেন যে ভাষা

বিবিসি অবলম্বনে

প্রকাশিত: ০০:০৮, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

দুই বোন বাঁচিয়ে রেখেছেন যে ভাষা

মৌলভীবাজার চা বাগানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী খাড়িয়াদের বাস

মৌলভীবাজার চা বাগানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী খাড়িয়াদের বাস। তাদের মাতৃভাষার নামও খাড়িয়া। চা বাগানে কর্মরত খাড়িয়া জনগোষ্ঠীর প্রাণের ভাষা খাড়িয়া। কিন্তু সময়ের গতিধারায় চা বাগান থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে ভাষাটি। বর্তমানে খাড়িয়া জনগোষ্ঠীর আপন দুই বোন ৮০ বছর বয়সী ভেরোনিকা কেরকেটা ও ৭৫ বছর বয়সী খ্রিস্টিনা কেরকেটা আদি খাড়িয়া ভাষায় কথা বলেন। এই দুজনের মৃত্যু হলে বিলুপ্ত হয়ে যাবে এই ভাষা।

শ্রীমঙ্গলের রাজঘাট চা বাগানের বর্মাছড়ায় ভেরোনিকা কেরকেটা ও খ্রিস্টিনা কেরকেটা দুই বোন খাড়িয়া ভাষায় কথা বলতে পারেন। তাদের পরিবারের সদস্য ও খাড়িয়া সম্প্রদায়ের কোনো মানুষের ভাষাটি সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান নেই। তাদের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে এ দেশের ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যাবে বহু প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী প্রকৃত ভাষা খাড়িয়া। সরেজমিনে শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজঘাট ইউনিয়নের রাজঘাট চা বাগানে ঘুরে খাড়িয়া সম্প্রদায়ের লোকজনের দেখা মিললেও ভেরোনিকা কেরকেটা ও খ্রিস্টিনা কেরকেটা ছাড়া আর কোথাও প্রকৃত খাড়িয়া ভাষায় কথা বলার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি।

অনেক খোঁজ করে বর্মাছড়া ভেরোনিকা কেরকেটার দেখা হলে এ সময় তিনি খাড়িয়া ভাষা ও বাংলায় বলেন, ‘আমাদের মা-বাবা ভারতের রাচি থেকে এখানে আসেন। এখানেই আমাদের জন্ম। ছোটবেলা থেকেই দেখেছি বাবা-মা খাড়িয়া ভাষা বলত। তাদের কাছ থেকে শেখা। বর্তমানে বাগানে অনেক ভাষার মিশ্রণে আমাদের সন্তানরা মাতৃভাষা বলতেও পারে না, এমনকি বোঝেও না।

এই বাগানের মধ্যে আমরা দুই বোন খাড়িয়াতে কথা বলতে পারি। সুখ-দুঃখে আমরা আমাদের দুই বোনের মধ্যেই আমাদের ভাষায় কথা বলি। এতে আমাদের প্রাণ খুলে মনের ভাব প্রকাশ করি। পরিবারের অন্যরাসহ বাগানে কারও সঙ্গে আমরা দুই বোন প্রাণ খুলে মনের মতো করে কথা বলতে পারি না। এটাই আমাদের দুঃখ।-বিবিসি অবলম্বনে

×