এই ঘরের সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকেন আবুল খায়ের ওরফে মুন্সি মেম্বার।
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে মা (৩২) ও মেয়েকে (১২) দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় প্রধান আসামি চরওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের ওরফে মুন্সি মেম্বারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে তাকে জেলা শহর মাইজদী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বার ওই উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চরকাজী মোখলেছ গ্রামের মৃত গোলাপের রহমানের ছেলে। তিনি চরওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি। নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, সুবর্ণচর উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ২টার দিকে চরকাজী মোখলেছ গ্রামের একটি নতুন বাড়িতে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী তিন সন্তানের জননী ও নির্যাতিত শিশু স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। ধর্ষকরা ঘর থেকে সোনার গহনা ও নগদ ১৭ হাজার ২২৫ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, কয়েক মাস আগে হাতিয়া থেকে এসে চরকাজী মোখলেছ গ্রামে নতুন বাড়ি করেন এক দিনমজুর। ওই বাড়িতে স্ত্রী ও তিন সন্তানসহ বসবাস করেন তিনি। মাঝে মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গেলে দুই/তিনদিন পর বাড়ি ফিরে আসতেন ওই দিনমজুর।
দুই দিন আগে কাজের সন্ধানে তিনি বাড়ির বাইরে যান। এসময় বাড়িতে তিন মেয়েকে নিয়ে ছিলেন ওই গৃহবধূ। সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে তিন ব্যক্তি মা ও মেয়েকে ধর্ষণ করে। তাদের হাত-পা ও মুখ বেঁধে রেখে ঘরে থাকা স্বর্ণ ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। গভীর রাতে শিশুদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে পুলিশে খবর দেয়।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থলেই ছিল। সকালে ভুক্তভোগীদের থানায় আনা হয়েছে। তাদের চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের রাতে সুবর্ণচরে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।আলোচিত ওই ঘটনার মামলার রায়ে গতকাল সোমবার ১০ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক। এ মামলার প্রধান আসামি ছিলেন সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বার। আলোচিত মামলার রায়ের ২৪ ঘণ্টা না যেতেই একই উপজেলায় আরেকটি দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেল।
এম হাসান