ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ
স্বামীর ওপর অভিমান ও হাসপাতালের খরচ মেটাতে ৭ দিনের এক নবজাতককে বিক্রি করা ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয়দের দেয়া তথ্যমতে জানা গেছে, গর্ভবতী থাকা অবস্থায় স্বামীর সঙ্গে মনমালিন্য হয় কোকিলা খাতুনের। এরপর চলে যান মায়ের বাড়িতে। কোকিলা খাতুনের মা ঝিনাইদহ শহরে ভিক্ষা করেন। এরমধ্যে কোকিলা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে কালীগঞ্জ শহরের ডক্টরস ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। গত ২৮ নভেম্বর ফুটফুটে শিশু সন্তানের জন্ম হয়।
দত্তক দেয় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের হেলাই গ্রামের সোহাগ হোসেনের কাছে। সন্তানকে ফেরত পেতে বৃহস্পতিবার সকালে থানায় এসে অভিযোগ করেন কোকিলা খাতুনের স্বামী আকাশ হোসেন। এরপর পুলিশ গিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলার হেলাই গ্রাম থেকে নবজাতককে উদ্ধার করে। বিকেলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান কালীগঞ্জ থানার ওসি আবু আজিফ।
উদ্ধার হওয়া নবজাতকের মা কোকিলা খাতুন বলেন, অভাবের তাড়নায় ও খোঁজখবর না রাখায় স্বামীর ওপর অভিমান করে ৭ দিন বয়সী শিশু ছেলেকে বিক্রি করে দিয়েছিলাম। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে সে আমার কোনো খোঁজ খবর নেয় না। ক্লিনিকের সব খরচ মেটাতে এছাড়া আমার আর কিছুই করার ছিল না।
শিশুটিকে দত্তক নেওয়া সোহাগ আলী বলেন, ‘আমি নিঃসন্তান। শিশুটিকে লালন-পালনের জন্য তার মায়ের কাছ থেকে কিনে নেই। শিশুর মা ও নানি আনোয়ারা খাতুনসহ এলাকার স্থানীয় কয়েকজন উপস্থিতিতে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে শিশুটির ক্লিনিকের খরচ ও তার মাকে নগদ ৩০ হাজার সর্বমোট ৫৫ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছিলাম। পরে পুলিশের নির্দেশেই শিশুটিকে তার মাসহ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেই।’
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু আজিফ জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি অভিযোগ করেন আকাশ হোসেন। গত ২৮ নভেম্বর তার স্ত্রী সিজারের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। আকাশ হোসেনকে না জানিয়ে তার স্ত্রী ও শাশুড়ি সন্তানকে দত্তক দেয়। পরে তার স্ত্রী কোকিলা খাতুন ভুল বুঝতে পারে এবং স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করে সন্তানকে উদ্ধার করে আনতে বলে। সিজারের খরচ ও নগদ ৩০ হাজার টাকায় নবজাতককে বিক্রি করেন ওই মা।
এবি