ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

দুলাভাইয়ের খরচে এমপি হতে মনোনয়ন নিলেন গৃহপরিচারিকা

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩

দুলাভাইয়ের খরচে এমপি হতে মনোনয়ন নিলেন গৃহপরিচারিকা

এমপি প্রার্থী রোকেয়া বেগম।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১ আসনে মুক্তিজোট থেকে প্রার্থী হয়েছেন রোকেয়া বেগম নামের এক গৃহপরিচারিকা। এমনকি মনোনয়ন বাছাইয়ে টিকেও রয়েছেন। তবে রোকেয়ার নির্বাচনের সব খরচ বহন করার আশ্বাস দিয়েছেন তার দুলাভাই।

এদিকে, শনিবার (২ ডিসেম্বর) ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনে মনোনয়ন বাছাইয়ে এমপি প্রার্থী হিসেবে টিকে আছেন রোকেয়া বেগম। তার নির্বাচনের সব খরচ বহন করা দুলাভাই হলেন ময়মনসিংহ-৪ আসনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি থেকে মনোনীত এমপি প্রার্থী হামিদুল ইসলাম।

জানা যায়, হালুয়াঘাট উপজেলার গাজিরভিটা ইউনিয়নের বোয়ালমারা গ্রামের বাসিন্দা রোকেয়া বেগম। তার স্বামী ফারুক দীর্ঘদিন আগে দুই সন্তানসহ রোকেয়াকে ছেড়ে চলে যান। সরকারি খাসজমিতে একটি কুঁড়েঘরে বৃদ্ধ মা আছিয়া খাতুন এবং এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বসবাস রোকেয়ার। আগে হালুয়াঘাট পৌর শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতেন রোকেয়া। তবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে বিভিন্ন চিকিৎসকের বাসাবাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করছেন তিনি।

বোয়ালমারা এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধ আব্দুল মালেক বলেন, ‘রোকেয়ার স্বামী দীর্ঘদিন আগে তাকে রেখে চলে যায়। অভাবের কারণে যেখানে তার সংসার চলে না সেখানে সে কীভাবে এমপি প্রার্থী হয়েছে তা আমার জানা নেই। তাকে কোনোদিন রাজনীতি বা জনসেবা করতেও দেখিনি। তার নিজের কোনো থাকার জায়গা নেই। সরকারি খাসজায়গায় ছনের ঘরে থাকে। তার মনে কীভাবে এমপি হওয়ার খায়েশ জাগলো জানি না।’

রোকেয়ার বৃদ্ধ মা আছিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার মেয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। তার দুলাভাই হামিদুল ইসলাম তাকে এমপি পদে দাঁড় করিয়েছে। তারাই সব খরচ দেবে। আমরা এতো টাকা কোথায় পাবো? আমার মেয়ের কষ্টের টাকায় দুইবেলা খেয়ে বেঁচে আছি।’

এ বিষয়ে গণমুক্তি জোটের মনোনীত প্রার্থী রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আমি আগে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে ইনসাফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করতাম। বর্তমানে এখানে সেখানে কাজ করে সংসার চালাই। গত ২৮ তারিখ আমাকে প্রার্থী হওয়ার জন্য আমার আত্মীয় ময়মনসিংহ সদর আসনের ন্যাশনাল পিপলস পার্টির এমপি প্রার্থী হামিদুল ইসলাম অনুরোধ করেন। আমার সব খরচ তিনিই বহন করবেন। আমি উনাকে বলেছিলাম, আমিতো আওয়ামী লীগের কর্মী। এ ক্ষেত্রে আমার কোনো সমস্যা হবে কি না? তিনি আমকে বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছি, তোমার কোনো সমস্যা নেই। পড়ে আমার সব কাগজপত্র তিনিই রেডি করে আমাকে প্রার্থী হতে সহযোগিতা করেন। আমি নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত থাকবো।’

ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনের ন্যাশনাল পিপলস পার্টি থেকে মনোনীত এমপি প্রার্থী হামিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রোকেয়া বেগম সম্পর্কে আমার শ্যালিকা। আমি তাকে এমপি হওয়ার জন্য বলি। তাছাড়া গণমুক্তি জোট আওয়ামী লীগের শরিক দল হিসেবে রয়েছে। তাদের অবস্থান বেশ শক্তিশালী। তাই আমি আমার শ্যালিকাকে প্রার্থী করেছি। আমিই তার সব খরচ দেবো।’

 

এম হাসান

×