নাব্য সংকটে মাঝ নদীতে ডুবো চরে আটকে আছে ফেরি
পদ্মা-যমুনা নদীর পানি কমে যাওয়ায় রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জ জেলার পাটুরিয়া নৌরুটে নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। এতে অসংখ্য ডুবোচর দেখা দেয়। নাব্য সংকট ও অসংখ্য ডুবোচর থাকার কারণে লঞ্চ ও ফেরিগুলো নদী পার হতে দ্বিগুণ সময় ব্যয় হচ্ছে। এতে এই নৌরুট ব্যবহারকারী যাত্রী ও যানবাহন চালকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাটে সরেজমিন গিয়ে ঘাট সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুষ্ক মৌসুমে প্রতিবছর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ ও ফেরি চললাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য ড্রেজিং করা হয়। এবারও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এই নৌরুটে ড্রেজিং শুরু হয়েছে।
তবে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করার কারণে এই নৌরুটে অসংখ্য ডুবোচর ও নাব্য সংকট দেখা দেয়। এতে লঞ্চ ও ফেরিগুলো দ্বিগুণ সময় বেশি ব্যয় করে চলাচল করতে হয়। দৌলতদিয়া ৫নং ফেরি ঘাট এলাকার মো. আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি বলেন, এক মাসের বেশি সময় ধরে বিআইডব্লিউটিএ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ড্রেজিং শুরু করেছে। কিন্তু এখনো এই নৌরুটের নাব্য সংকট এবং অসংখ্য ডুবোচর রয়েছে। তিনি বলেন, পরিকল্পিত ড্রেজিং করা হলে এই নৌরুটে চলাচলকারী যাত্রী ও যানবাহন চালকদের দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।
এসময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ফেরি মাস্টার বলেন, বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং বিভাগ ড্রেজিং করছে। এ ব্যাপারে আমাদের কোনো মতামত নেই। তবে পরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করলে আমাদের এত এলাকা ঘুরে নদী পারাপার হতে হতো না। তিনি বলেন, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করার কারণে এই নৌরুটে এখনো অসংখ্য ডুবোচর ও নাব্য সংকট রয়েছে। এই নৌরুট নিয়মিত ব্যবহারকারী আব্দুল রাজ্জাক নামের এক ব্যক্তি বলেন, পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ার পূর্বে এই ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। কিন্ত এখন কৃত্রিম সমস্যা তৈরি করে যাত্রী ও যানবাহন চালকদের দুর্ভোগ দেওয়া হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই প্রত্যাশা নয়। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুনজর দেওয়া প্রয়োজন।
শাহীন খান নামের এক ব্যক্তি বলেন, গত এক মাসের অধিক সময় এই নৌরুটে ড্রেজিং চলমান রয়েছে। এখন পর্যন্ত নাব্য সংকট ও অসংখ্য ডুবোচর রয়েছে।
তিনি বলেন, ড্রেজিং করার সময় দেখা যায়, নদীর বালু নদীতে ফেলানো হচ্ছে। যে কারণে ড্রেজিং করার জায়গা আবারও ভরে যাচ্ছে। এরা ড্রেজিং করার ব্যাপারে কোনো নিয়মনীতি মেনে চলে না। এ সময় দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে অসংখ্য ডুবোচর রয়েছে। যে কারণে লঞ্চ ও ফেরিগুলো চলাচল করতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি লাগে। বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বলেন, সাংবাদিকদের কাছে আমাদের বক্তব্য নেওয়া নিশেষ। সুতরাং এ ব্যাপারে আমরা কোনো বক্তব্য দিতে পারব না।